দ্বীনি দাওয়াতের কাজ করতে হবে চরম ধৈর্য্যরে সাথে
قد نعلم انه ليحزنك الذى يقولون فانهم لا يكذبونك ولكن الظالمين بايات الله يجحدون- ولقد كذبت رسل من قبلك فصبروا على ما كذبوا واوذوا حتى اتهم نصرنا ولامبدل لكلمت الله ولقد جائك من نبائ المرسلين -
সরল অনুবাদঃ
ইরশাদ হচ্ছে- হে মুহাম্মদ! আমি অবশ্যি জানি, এরা যেসব কথাবার্তা বলছে, তা তোমাকে বড়ই কষ্ট দিচ্ছে কিন্তু এরা তোমাকে মিথ্যা বলছে না বরং এ জালেমরা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আয়াতকেই অস্বীকার করছে। তোমাদের পুর্বেও অনেক রসুলকে মিথ্যা বলা হয়েছে কিন্তু তাদের ওপর যে মিথ্যা আরোপ করা হয়েছে এবং যে কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাতে তাঁরা সবর করেছে । শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে গেছে। আল্লাহর কথাগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারোর নেই এবং আগের রসুলদের সাথে যা কিছু ঘটে গেছে তার খবর তো তোমার কাছে পৌছে গেছে । (সুরা আনয়াম আয়াত নং ৩৩-৩৪)
পরিচিতি ও নামকরণঃ
সুরা আনয়াম পবিত্র কোরআনুল কারীমের ৬ষ্ঠ সুরা। এই সুরার ১৬ ও ১৭ রুকুতে কোন কোন গৃহপালিত পশু হারাম এবং কোনটি হালাল হওয়া সম্পর্কিত আরববাসীদের অন্ধ কাল্পনিক ও কুসংস্কারমুলক ধারনা বিশ্বাসকে খন্ডন করা হয়েছে। কিন্তু সুরাটির নামকরণ কোন শিরোনাম হিসেবে না করে অন্যান্য সুরার মত প্রতিকী বা চিহ্ণ হিসেবে ১৬তম রুকুর ১৩৬ নম্বর আয়াতে الانعام (গৃহপালিত পশু) শব্দটিকেই সুরাটির নামকরণ হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। আর এটা করা হয়েছে ওহীর নির্দেশেই। রাসুলুল্লাহ সঃ এর নিজস্ব কোন চিন্তা থেকে এ নামকরণ করেননি
নাযিলের সময়কাল ঃ
সুরাটি মক্কী সুরা এ ব্যাপারে সকলেই সম্মতি প্রকাশ করেছেন। হযরত ইবনে আব্বাসের (রা) বর্ননা মতে এ সম্পুর্ন সুরাটি একই সাথে মক্কায় নাযিল হয়েছিল। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবালের চাচাত বোন হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ বলেন, রাসুল সঃ উটনীর উপর সওয়ার থাকা অবস্থায় এ সুরাটি নাযিল হয়। তখন আমি তাঁর উটের লাগাম ধরে ছিলাম। ওহীর বোঝার ভারে উটের অবস্থা এত শোসনীয় পর্যায়ে পৌঁছে ছিল, যেন মনে হচ্ছিল এই বুঝি এক্ষুনি তার মেরুদন্ডের হাড়গোড় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। হাদীসে একথাও সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে, যে রাতে এ সুরাটি নাযিল হয় সে রাতেই নবী করীম সঃ এটিকে লিপিবদ্ধ করিয়েছিলেন।
কোন কোন তাফসীরকারক একে মক্কী জীবনের শেষ দিকের সুরা বলেছেন। সুরাটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করলে পরিস্কারভাবে মনে হয় যে, এ সুরাটি সম্ভবত মক্কী যুগের শেষের দিকে নাযিল হয়ে থাকবে। হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদের রেওয়াতটিও একথার সত্যতা প্রমান করে। কেননা , তিনি ছিলেন আনসার গোত্রের মহিলা। হিজরতের পরে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম কবুল করার পুর্বে তিনি নিছক ভক্তি-শ্রদ্ধার কারণেই যদি নবী কারীম সাঃ এর নিকট মক্কায় হাজির হয়ে থাকেন,তবে অবশ্যই মক্কী জীবনের শেষ বৎসরেই সম্ভব হয়ে থাকবে। কেননা, এর আগে ইয়াসরেববাসীদের সাথে হুজুর সাঃ এর সম্পর্ক খুব গভীর ও নিকটতম ছিলনা যার ফলে সেখানকার একজন মহিলা নবী করীম সাঃ এর খেদমতে হাজির হয়ে যেতে পারে। সুরাটি উল্লিখিত বিষয় ও বক্তব্যের উপর ভিত্তি করেই এসব ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে। ( আল্লাহ পাকই ভাল জানেন)
সুরাটি নাযিল হওয়ার উপলক্ষ বা অবতরণের কারণ ঃ
সুরাটি নাযিল হওয়ার সময়কাল নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর আমরা অতি সহজেই এর নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপটের দিকে দৃষ্টি ফিরাতে পারি। বিশ্বনবী ইসলামের দাওয়াত ও প্রচারের কাজ করতে করতে ১২ টি বছর অতিবাহিত করেছেন। কুরাইশদের প্রতিবন্ধকতা,জুলুম ও নির্যাত চরমে পৌছে গিয়েছিল। কাফেররা পুর্ণশক্তিতে ইসলামের বিরোধীতা করছিল। যেই ইসলাম কবুল করে রাসুলের (সাঃ) দলে যোগদান করতো তার উপরই চরম বিপদ-আপদ, জুলুম-নির্যাতনের স্টীম রোলার চলতো। এমনকি ইসলাম কবুলকারীদরে একটি অংশ তাদের নির্যাতন, অত্যাচার, নিপীড়নে অতিষ্ট হয়ে দেশ ত্যাগ করে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে বাধ্য হয়েছিল। নবী করীম সাঃ এর সাহায্য-সহযোগীতা করার জন্য আবু তালিব বা প্রিয়তম হযরত খাদীজা (রাঃ) কেউই বেঁচে ছিলেন না। ফলে সব রকমের বৈষয়িক সাহায্য, আশ্রয় প্র্রশ্রয় থেকে বঞ্চিত হয়ে তিনি কঠোর প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ইসলাম প্রচার ও রিসালাতের মহান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। তাঁর ইসলাম প্রচারের প্রভাবে মক্কায় ও আশপাশের গোত্রীয় উপজাতিগুলোর মধ্য থেকে বহু সংখ্যক লোক পরপর ইসলাম গ্রহণ করে যাচ্ছিল। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সমগ্র জাতি ইসলামের অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যানের জন্যই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হয়েছিল। কোন লোক যদি ইসলামের জন্য সামান্য আগ্রহ ও উৎসাহ প্রকাশ করতো তাকেই ঠাট্টা-বিদ্রুপ, তিরস্কার, দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বয়কট, সম্পর্কচ্ছেদ, অমানবিক নিপীড়ন প্রভৃতি আঘাতে জর্জরিত ও পর্যদুস্ত করে ছাড়তো। এমনি এক অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে কেবলমাত্র ইয়াসরিবের আওস ও খাযরাজ গোত্রের প্রভাবশালী লোকেরা ‘বায়আতে আকাবার’ মাধ্যমে ইসলাম কবুল করে হালকা আশার আলো দেখিয়েছিল এবং কোন প্রকার অভ্যন্তরিন বাঁধা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন না হয়েই ইসলামের প্রসার লাভ করতে শুরু করেছিল। মদিনায় ইসলামের এই সামান্য প্রচার ও প্রসার ভবিষ্যতে যে বিপুল সম্ভাবনা নিহিত ছিলো তা কোন স্থলবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ দেখতে পেত না। বাহ্যিক দৃষ্টিতে মনে হতো, ইসলাম একটি দুর্বল আন্দোলন। এর পেছনে কোন বৈষয়িক ও বস্তুগত শক্তি নেই। এর আহবায়কের পিছনে ছিল তার পরিবার ও বংশের দুর্বল এবং ক্ষীণ সাহায্য-সমর্থন মাত্র। আর যারা ইসলাম কবুল করেছেন তারা তদানিন্তন সমাজের মুষ্টিমেয় অসহায় ও বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্ন ব্যাক্তি। বাপ দাদার প্রথা ও আদর্শকে পরিত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করার কারণে তাদের কে সমাজ থেকে দুরে ঠেলে দেয়া হয়েছে। যেমন কোন গাছের মরা পাতা মাটির উপর ঝরে পড়ে ঠিক তাদের কেও ঝরা পাতার মত সমাজ থেকে বিচ্যুত করে দেয়া হয়েছে। মক্কায় মুসলমানদের উপর যখন এমন অমানবিক চরম নির্যাতন চলছিল ঠিক এমতাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’য়ালা এ সুরাটি নাযিল করেন।
মুল কথা বা আলোচ্য বিষয়ঃ
সমগ্র সুরাটি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, এ সুরাটিও অন্যান্য মক্কী সুরার মতই। এ সুরাটি অন্তরে ঈমানের উদ্দিপনা সৃষ্টি করতে চায়। শিরকের কলুষতা, শিরক মিশ্রিত জাহিলী আকিদা-বিশ্বাসের মুলে কুঠারাঘাত করে তাওহীদি বিশ্বাসের মুলরূপ তুলে ধরেছে এ সুরাটি। বিশেষ করে আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস ও দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ী জীবনের মোহ ত্যাগ,ইসলামী সমাজের কাঠামো,ঘৃনিত আরবদের ভ্রান্ত আকিদা কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর দাওয়াতের বিরুদ্ধে উন্থাপিত প্রশ্নের দাতভাঙা জবাব দেয়া হয়েছে আলোচ্য এ সুরাটিতে। তবে এখানে সুদীর্ঘ আান্দোলন-সংগ্রাম,কঠোর প্রচেষ্টা ও একান্ত সাধনা সত্ত্বেও দ্বীনি দাওয়াতী কাজ তথা আন্দোলন ফলপ্রসু না হবার কারণে নবী সাঃ ও সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে যে অস্থিরতা ও হতাশাজনক অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছিল, সে জন্য তাদের কে সান্ত্বনা প্রদান করে দৃঢ়সংকল্প, অনড় মনোবল,সাহস-হিম্মত ও অনমনীয় মনোবল সৃষ্টি না করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। ইসলাম অস্বিকারকারী ও বিরোধী পক্ষকে তাদের গাফিলতি,উপেক্ষা,অজ্ঞতা,উদাসীনতার কারণে আত্মহত্যামুলক নীতিঅবলম্বন না করার জন্য তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছে। তাদের কে সুন্দর ভাষায় ভয় দেখানো,সাবধান করা এবং সতর্ক করা হয়েছে। তবে এখানে প্রতিটি বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে একই জায়গায় পুর্ণাঙ্গরুপে আলোচনা করার রীতি মানা হয়নি। বরং আলোচনা চলেছে নদীর স্রোতের মত মুক্ত অবাধ বেগে আর মাঝে মাঝে এ বিষয়গুলো বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভেসে উঠেছে নতুন নতুন ভঙ্গিতে।
আলোচ্য আয়াতের মুল বক্তব্যঃ
দ্বীনি আন্দোলন তথা ইসলামের দাওয়াতী কাজে বিরোধীদের ঠাট্টা-বিদ্রুপ, অসৌজন্যমুলক আচরণ,বিমুখতা,উপেক্ষা আর উদাসিনতার কারণে মনে কষ্ট না পাওয়া। কেননা তারা যা করছে সেটা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সাথেই করছে। জালিমরা তো আসলে কোন ‘দায়ী ইলাল্লাহ’ কে কষ্ট দেয় না, মিথ্যা বলে না। তাদের মিথ্যা বলাটা মুলত আল্লাহর আয়াতকেই মিথ্যা বলা। এছাড়া দাওয়াতী কাজে তাড়াতাড়ি প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে ধৈর্য হারা না হওয়া। ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। পুর্বেকার অনেক রসুল কে মিথ্যা বলা হয়েছে, কষ্ট দেয়া হয়েছে, তাতে তাঁরা ধৈর্য ধারণ করেছে।
বিশ্লেষণঃ
প্রিয় পাঠক! এতক্ষণ দারসুল কোরআনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রাথমিক ধারণা দেয়ার পর এখন আলোচ্য আয়াতদ্বয়ের সংক্ষিপ্ত ব্যাখা পেশ করছিঃ
قد نعلم انه ليحزنك الذى يقولون فانهم لا يكذبونك ولكن الظالمين بايات الله يجحدون –
হে মুহাম্মদ ! আমি অবশ্যি জানি, এরা যেসব কথাবার্তা বলছে, তা তোমাকে বড়ই কষ্ট দিচ্ছে, কিন্তু এরা তোমাকে মিথ্যা বলছে না; বরং এ জালেমরা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর আয়াতকেই অস্বীকার করছে।
বিশ্বনন্দিত নেতা, বিশ্বনবী নবী মুহাম্মদ সাঃ তাঁর জাতির কাছে যতদিন আল্লাহর আয়াত শুনাতে শুরু করেননি, তাওহীদের দাওয়াত দেননি ততদিন মক্কার লোকেরা তাঁকে ‘আল-আমীন’ ও সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করতো। এমনকি তাঁর সততা ও বিশ্বস্ততার ওপর তারা পুর্ণ আস্থাবান ছিলো। যখন তিনি তাদের সামনে আল্লাহর পয়গাম পেশ করতে শুরু করলেন তখন থেকেই তারা তাঁকে অস্বীকার ও অমান্য করতে লাগলো। বিভিন্ন কটুকথা দিয়ে হুজুরের মনোকষ্ট দিতে শুরু করলো। ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হুজুর কে কেউ মিথ্যাবাদী বলার দুঃসাহস দেখায়নি। কট্টর বিরোধীরাও তাঁর বিরুদ্ধে কখনো কোন প্রকার দুনিয়াবী ব্যাপারে তিনি মিথ্যা বলেছেন এমন দোষারোপ করেনি। শুধু মাত্র নবুওয়াতের দায়িত্ব পালন করতে একআল্লাহর সার্বভোমত্বের কথা প্রচার করার অপরাধে নবীজিকে মিথ্যাচারে অভিযুক্ত করেছে। এমন কি বড় শত্র“ যে ছিল আবু জেহেল সেও নবী সঃ এর ব্যাপারে সত্যায়ন করেছে। যা হযরত আলীর (রাঃ)-এর বর্ণনা মতে আরো পরিষ্কার হয়ে যায়। একবার আবু জেহেল নিজেই বিশ্বনবী (সাঃ) – এর প্রসংঙ্গে বলে “ আমরা আপনাকে মিথ্যাবাদী মনে করি না, কিন্তু আপনি যে দাওয়াত পেশ করছেন সেটাই মিথ্যা বলছি”। এটা শুধু আবু জেহেলই নয়; সকল কাফেরদের মনোভাব ছিল এমন। এসব কারণে আল্লাহর নবী যখন মনে খুব কষ্ট পেতে লাগলেন এবং মন ভাঙ্গা হয়ে পড়লেন তখন আল্লাহ পাক তাঁর নবীকে এই বলে শান্তনা দিলেন যে, يكذبونك ولكن الظالمين بايات الله يجحدون – لا (কাফেররা প্রকৃতপক্ষে আপনাকে মিথ্যা প্রতিপ্রতিপন্ন করছে না বরং তারা আল্লাহর আয়াতসমুহের প্রতি মিথ্যারোপ করছে) অর্থ্যাৎ আল্লাহ তাঁর নবী (সাঃ) কে সম্বোধন করে বলছেন, নবীজি! আপনাকে কেউ মিথ্যাবাদী বলছেনা বা অস্বীকার করছে না; বরং মিথ্যাপ্রতিপন্ন করছে আমার আয়াতকে বা আমার নিদর্শনাবলীকে, অমান্য ও অস্বীকার করছে আমাকে। এ আয়াত থেকে আরো স্পষ্ট হয়ে গেছে, যে মক্কার কাফির মুশরিকদের মধ্যে এমন কোন লোক ছিলনা যে, রাসুলে পাক সাঃ কে মিথ্যাবাদী বলার দুঃসাহস রাখে। দুনিয়ার ব্যাপারে বিশ্বনবী কোন মিথ্যা বলতে পারেন এমন অভিযোগও করতে পারেনি। তবে বিরোধীতা করার কারণ হলো, তিনি নবী হয়েছেন এটাই। নবী মেনে নেয়া বা তাঁর নেতৃত্ব মেনে নেয়ায় ছিল কাফিরদের কষ্টের কারণ। এ ব্যাপারে নবীজির (সাঃ) প্রাণের শত্র“ বা সবচেয়ে বড় দুশমন আবু জেহেলের মনোভাব সংক্রান্ত আরো একটি ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। বদর যুদ্ধের সময় কাফির সর্দার আখনাস ইবনে শারীক ও আবু জেহেলের মধ্যে একান্তে সাক্ষাত হলে আখানাস ইবনে শারীক আবু জেহেল কে জিজ্ঞেস করলো,“ হে আবুল হেকাম এখানে আমি ও তুমি ছাড়া আর কেউ নেই,আমাদের কথাবার্তা কেউ শুনবে না, মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ সম্পর্কে তোমার ধারণা কি ? তুমি সত্যিকরে বলো তো, মুহাম্মদ কে তুমি সত্যবাদী মনে করো,না মিথ্যাবাদী ? আবু জেহেল জবাব দিলো“আল্লাহর কসম,মুহাম্মদ একজন সত্যবাদী। সারাজীবনে কখনো মিথ্যা বলেনি। কিন্তু ব্যাপার হলো এই যে, কুরাইশ গোত্রের সামান্য একটা শাখা মাত্র ‘বনী কুসাই’ এরা সব গৌরব ও মর্যাদার অধিকারী হবে, আর কুরাইশ বংশের অন্যান্য শাখার লোকেরা মাহরুম হবে – এটা আমরা কিভাবে সহ্য করতে পারি। পতাকা রয়েছে বনী কুসাই-এর হাতে। হারাম শরীফে হাজীদের পানি পান করানোর গৌরবজনক কাজটিও তারাই যদি করে। কাবা ঘরের পাহারাদারী,রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব ও চাবী তাদেরই অধিকারে। আবার নবুওয়াত ও যদি কুসাই বংশের লোকের হাতে ছেড়ে দেই, তাহলে কুরাইশ বংশের অন্যান্য লোকের ইজ্জত থাকবে ?
উল্লেখ্য, আরবে আবু জেহেল আবুল হেকাম(পন্ডিতের বাপ) নামে খ্যাত ছিলো। ইসলামের যুগে কুফরী এবং দ্বীনের অজ্ঞতার কারণে বা আদর্শিক জ্ঞান না থাকার কারণে তাকে ‘আবু জেহেল’ মুর্খের বাপ উপাধি দেয়া হয়।
কাফিরদের উপরোক্ত মনোভাব আর তাদের ভুমিকার কারণে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর প্রিয় নবীকে (সাঃ) এই বলে শান্তনা দিচ্ছেন যে, তারা তোমার নয় বরং আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে আর আমি যখন এসব সহ্য করে নিচ্ছি এবং তাদের কে ঢিল দিয়ে চলছি তখন তুমি কেন অস্থিত হয়ে পড়েছো। অতএব তুমি চিন্তিত হয়ো না খামাকা মনে কষ্টও নিয়োনা। সহনশীলতা ও ধৈর্য্যরে সাথে সবকিছু বরদাশত করো।
প্রিয় পাঠক! নবী (সাঃ) থেকে শুরু করে এপর্যন্ত যারাই দ্বীনি দাওয়াতের কাজ করেছে, আল্লাহর দ্বীন কে জমীনে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে তখনই তাদের নির্যাতন করা হয়েছে, বাধা দেয়া হয়েছে, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে, মানসিক, দৈহিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করা হয়েছে। আয়াতের আলোকে একথা প্রতিয়মান হয়েছে যে, খোদদ্রোহী শক্তি বা প্রকৃত পক্ষে কাফির মুশরিকরা এক কথায় তাগুত শক্তি যারাই ‘দায়ী ইলাল্লাহ’ বা আল্লাহর দিকে আহবানকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা মুলত এ অবস্থান নিয়েছে আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধে,আল্লাহর বাণীর বিরুদ্ধে। তাদের দুনিয়াবী স্বার্থ সংরক্ষনের পক্ষে। এতে আহবানকারীর কোন ক্ষতিই তারা করতে পারেনা। আল্লাহর দিকে আহবানকারীদের মন ভেঙ্গে যাওয়ার ও কোন কারণ নেই। ক্রমশ দ্বীনের দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। মহান রাব্বুল আলামীন নবী (সাঃ) কে দাওয়াতে দ্বীনের কাজে আরো আগ্রহ ও উৎসাহ দানের জন্য পুর্ববতী নবীদের উপর জুলুম নির্যাতনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা শুধু নবীজিই নয়, তাঁর উম্মাত যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করবে তাদের জন্যও খোরাক হবে। পুর্ববর্তী নবী-রাসুলগণ বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত ধৈর্য ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তদানিন্তন সময়ের জাতির অসন্তষ্টি, বিরোধীতা, বাধা-বিপত্তি ও নানা রকমের নীপিড়ন, জালা-যন্ত্রনার মোকাবেলা করেছেন। কিন্তু কখনও অধৈর্য হয়ে এমনটি বলাতো দুরে থাক চিন্তাও পর্যন্ত করেননি যে, এসব বিরোধতীকারীরা অনতিবিলম্বে ঈমান আনুক আর নয়তো আল্লাহর গজবে ধংস হয়ে যাক, এক্ষুনি আল্লাহর এদের উপর আযাব নাযিল করুক। অতএর এ থেকে পরিস্কার হয়ে গেছে, ধৈর্য ধারণ করলে বিজয় আসবে আর বিরোধীতাকারীরা অচিরেই ধংস হয়ে যাবে। আল্লাহ তা’য়ালা সুরা আহকাফের ৩৫ নং আয়াতে বলেন,“ হে মুহাম্মদ! দৃঢ়চেতা রসুলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। এদের কে যে বিষয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে সেটা যেদিন এরা দেখবে সেদিন এদের মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষনের বেশি অবস্থান করেনি। অবাধ্য লোকেরা ছাড়া আর কে ধংস হবে?” আল্লাহর নবীকে দ্বীনি দাওয়াতী কাজে উৎসাহ দিতে আল্লাহ তা’য়ালা পুর্ববর্তী নবীদের কথা এভাবে বর্ণনা করছেন। যেমন আমরা আলোচ্য দারসুল কোরআনের পরবর্তী আয়াতে দেখতে পাই।
বিশ্বনন্দিত নেতা, বিশ্বনবী নবী মুহাম্মদ সাঃ তাঁর জাতির কাছে যতদিন আল্লাহর আয়াত শুনাতে শুরু করেননি, তাওহীদের দাওয়াত দেননি ততদিন মক্কার লোকেরা তাঁকে ‘আল-আমীন’ ও সত্যবাদী বলে বিশ্বাস করতো। এমনকি তাঁর সততা ও বিশ্বস্ততার ওপর তারা পুর্ণ আস্থাবান ছিলো। যখন তিনি তাদের সামনে আল্লাহর পয়গাম পেশ করতে শুরু করলেন তখন থেকেই তারা তাঁকে অস্বীকার ও অমান্য করতে লাগলো। বিভিন্ন কটুকথা দিয়ে হুজুরের মনোকষ্ট দিতে শুরু করলো। ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হুজুর কে কেউ মিথ্যাবাদী বলার দুঃসাহস দেখায়নি। কট্টর বিরোধীরাও তাঁর বিরুদ্ধে কখনো কোন প্রকার দুনিয়াবী ব্যাপারে তিনি মিথ্যা বলেছেন এমন দোষারোপ করেনি। শুধু মাত্র নবুওয়াতের দায়িত্ব পালন করতে একআল্লাহর সার্বভোমত্বের কথা প্রচার করার অপরাধে নবীজিকে মিথ্যাচারে অভিযুক্ত করেছে। এমন কি বড় শত্র“ যে ছিল আবু জেহেল সেও নবী সঃ এর ব্যাপারে সত্যায়ন করেছে। যা হযরত আলীর (রাঃ)-এর বর্ণনা মতে আরো পরিষ্কার হয়ে যায়। একবার আবু জেহেল নিজেই বিশ্বনবী (সাঃ) – এর প্রসংঙ্গে বলে “ আমরা আপনাকে মিথ্যাবাদী মনে করি না, কিন্তু আপনি যে দাওয়াত পেশ করছেন সেটাই মিথ্যা বলছি”। এটা শুধু আবু জেহেলই নয়; সকল কাফেরদের মনোভাব ছিল এমন। এসব কারণে আল্লাহর নবী যখন মনে খুব কষ্ট পেতে লাগলেন এবং মন ভাঙ্গা হয়ে পড়লেন তখন আল্লাহ পাক তাঁর নবীকে এই বলে শান্তনা দিলেন যে, يكذبونك ولكن الظالمين بايات الله يجحدون – لا (কাফেররা প্রকৃতপক্ষে আপনাকে মিথ্যা প্রতিপ্রতিপন্ন করছে না বরং তারা আল্লাহর আয়াতসমুহের প্রতি মিথ্যারোপ করছে) অর্থ্যাৎ আল্লাহ তাঁর নবী (সাঃ) কে সম্বোধন করে বলছেন, নবীজি! আপনাকে কেউ মিথ্যাবাদী বলছেনা বা অস্বীকার করছে না; বরং মিথ্যাপ্রতিপন্ন করছে আমার আয়াতকে বা আমার নিদর্শনাবলীকে, অমান্য ও অস্বীকার করছে আমাকে। এ আয়াত থেকে আরো স্পষ্ট হয়ে গেছে, যে মক্কার কাফির মুশরিকদের মধ্যে এমন কোন লোক ছিলনা যে, রাসুলে পাক সাঃ কে মিথ্যাবাদী বলার দুঃসাহস রাখে। দুনিয়ার ব্যাপারে বিশ্বনবী কোন মিথ্যা বলতে পারেন এমন অভিযোগও করতে পারেনি। তবে বিরোধীতা করার কারণ হলো, তিনি নবী হয়েছেন এটাই। নবী মেনে নেয়া বা তাঁর নেতৃত্ব মেনে নেয়ায় ছিল কাফিরদের কষ্টের কারণ। এ ব্যাপারে নবীজির (সাঃ) প্রাণের শত্র“ বা সবচেয়ে বড় দুশমন আবু জেহেলের মনোভাব সংক্রান্ত আরো একটি ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। বদর যুদ্ধের সময় কাফির সর্দার আখনাস ইবনে শারীক ও আবু জেহেলের মধ্যে একান্তে সাক্ষাত হলে আখানাস ইবনে শারীক আবু জেহেল কে জিজ্ঞেস করলো,“ হে আবুল হেকাম এখানে আমি ও তুমি ছাড়া আর কেউ নেই,আমাদের কথাবার্তা কেউ শুনবে না, মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ সম্পর্কে তোমার ধারণা কি ? তুমি সত্যিকরে বলো তো, মুহাম্মদ কে তুমি সত্যবাদী মনে করো,না মিথ্যাবাদী ? আবু জেহেল জবাব দিলো“আল্লাহর কসম,মুহাম্মদ একজন সত্যবাদী। সারাজীবনে কখনো মিথ্যা বলেনি। কিন্তু ব্যাপার হলো এই যে, কুরাইশ গোত্রের সামান্য একটা শাখা মাত্র ‘বনী কুসাই’ এরা সব গৌরব ও মর্যাদার অধিকারী হবে, আর কুরাইশ বংশের অন্যান্য শাখার লোকেরা মাহরুম হবে – এটা আমরা কিভাবে সহ্য করতে পারি। পতাকা রয়েছে বনী কুসাই-এর হাতে। হারাম শরীফে হাজীদের পানি পান করানোর গৌরবজনক কাজটিও তারাই যদি করে। কাবা ঘরের পাহারাদারী,রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব ও চাবী তাদেরই অধিকারে। আবার নবুওয়াত ও যদি কুসাই বংশের লোকের হাতে ছেড়ে দেই, তাহলে কুরাইশ বংশের অন্যান্য লোকের ইজ্জত থাকবে ?
উল্লেখ্য, আরবে আবু জেহেল আবুল হেকাম(পন্ডিতের বাপ) নামে খ্যাত ছিলো। ইসলামের যুগে কুফরী এবং দ্বীনের অজ্ঞতার কারণে বা আদর্শিক জ্ঞান না থাকার কারণে তাকে ‘আবু জেহেল’ মুর্খের বাপ উপাধি দেয়া হয়।
কাফিরদের উপরোক্ত মনোভাব আর তাদের ভুমিকার কারণে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর প্রিয় নবীকে (সাঃ) এই বলে শান্তনা দিচ্ছেন যে, তারা তোমার নয় বরং আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে আর আমি যখন এসব সহ্য করে নিচ্ছি এবং তাদের কে ঢিল দিয়ে চলছি তখন তুমি কেন অস্থিত হয়ে পড়েছো। অতএব তুমি চিন্তিত হয়ো না খামাকা মনে কষ্টও নিয়োনা। সহনশীলতা ও ধৈর্য্যরে সাথে সবকিছু বরদাশত করো।
প্রিয় পাঠক! নবী (সাঃ) থেকে শুরু করে এপর্যন্ত যারাই দ্বীনি দাওয়াতের কাজ করেছে, আল্লাহর দ্বীন কে জমীনে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে তখনই তাদের নির্যাতন করা হয়েছে, বাধা দেয়া হয়েছে, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে, মানসিক, দৈহিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করা হয়েছে। আয়াতের আলোকে একথা প্রতিয়মান হয়েছে যে, খোদদ্রোহী শক্তি বা প্রকৃত পক্ষে কাফির মুশরিকরা এক কথায় তাগুত শক্তি যারাই ‘দায়ী ইলাল্লাহ’ বা আল্লাহর দিকে আহবানকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা মুলত এ অবস্থান নিয়েছে আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধে,আল্লাহর বাণীর বিরুদ্ধে। তাদের দুনিয়াবী স্বার্থ সংরক্ষনের পক্ষে। এতে আহবানকারীর কোন ক্ষতিই তারা করতে পারেনা। আল্লাহর দিকে আহবানকারীদের মন ভেঙ্গে যাওয়ার ও কোন কারণ নেই। ক্রমশ দ্বীনের দাওয়াতী কাজ চালিয়ে যেতে হবে। মহান রাব্বুল আলামীন নবী (সাঃ) কে দাওয়াতে দ্বীনের কাজে আরো আগ্রহ ও উৎসাহ দানের জন্য পুর্ববতী নবীদের উপর জুলুম নির্যাতনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। এর দ্বারা শুধু নবীজিই নয়, তাঁর উম্মাত যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করবে তাদের জন্যও খোরাক হবে। পুর্ববর্তী নবী-রাসুলগণ বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত ধৈর্য ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তদানিন্তন সময়ের জাতির অসন্তষ্টি, বিরোধীতা, বাধা-বিপত্তি ও নানা রকমের নীপিড়ন, জালা-যন্ত্রনার মোকাবেলা করেছেন। কিন্তু কখনও অধৈর্য হয়ে এমনটি বলাতো দুরে থাক চিন্তাও পর্যন্ত করেননি যে, এসব বিরোধতীকারীরা অনতিবিলম্বে ঈমান আনুক আর নয়তো আল্লাহর গজবে ধংস হয়ে যাক, এক্ষুনি আল্লাহর এদের উপর আযাব নাযিল করুক। অতএর এ থেকে পরিস্কার হয়ে গেছে, ধৈর্য ধারণ করলে বিজয় আসবে আর বিরোধীতাকারীরা অচিরেই ধংস হয়ে যাবে। আল্লাহ তা’য়ালা সুরা আহকাফের ৩৫ নং আয়াতে বলেন,“ হে মুহাম্মদ! দৃঢ়চেতা রসুলদের মত ধৈর্য ধারণ করো এবং তাদের ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না। এদের কে যে বিষয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে সেটা যেদিন এরা দেখবে সেদিন এদের মনে হবে যেন পৃথিবীতে অল্প কিছুক্ষনের বেশি অবস্থান করেনি। অবাধ্য লোকেরা ছাড়া আর কে ধংস হবে?” আল্লাহর নবীকে দ্বীনি দাওয়াতী কাজে উৎসাহ দিতে আল্লাহ তা’য়ালা পুর্ববর্তী নবীদের কথা এভাবে বর্ণনা করছেন। যেমন আমরা আলোচ্য দারসুল কোরআনের পরবর্তী আয়াতে দেখতে পাই।
ولقد كذبت رسل من قبلك فصبروا على ما كذبوا واوذوا حتى اتهم نصرنا ولامبدل لكلمت الله ولقد جائك من نبائ المرسلين -
আল্লাহ বলেন, “তোমার পুর্বেও অনেক নবী রাসুলকে মিথ্যাবাদী বলা হয়েছে। কিন্তু তাদের উপর যে মিথ্যারোপ করা হয়েছে এবং তাঁদের উপর জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে,তাতে তাঁরা ধৈর্য্য ধারণ করেছে এবং বরদাস্ত করে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে গেছে। আল্লাহর বাণী পরিবর্তন করার ক্ষমতা কারোর নেই। এবং আগের রসুলদের কিছু কাহিনী বা তাঁদের সাথে যা কিছু ঘটে গেছে তার খবর তো তোমার কাছে পৌঁছে গেছে”।
এ আয়াত দ্বারা পরিস্কার হয়ে গেছে, দ্বীনের দাওয়াতী কাজের ‘দায়ী’ এবং আল্লাহর জমীনে দ্বীন কায়েমের আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী ও এর বিরোধীদের মধ্যে পারস্পারিক দ্বন্দ-সংঘাত এটা চিরাচরিত নিয়ম। অর্থ্যাৎ দ্বীন কায়েমের আন্দোলনের কর্মী ও দ্বীনের বিরোধীদের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ চলমান প্রক্রিয়া। হক ও বাতিল এবং সত্য ও মিথ্যার সংঘাত আল্লাহর পক্ষ থেকে চালুকৃত নিয়ম-বিধান যা বদলের ক্ষমতা কারো নেই। আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবীদার ও সত্যপন্থীদের যাচাই বাচাই-এর স্থায়ী মানদন্ড। নবী আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাম এবং তাদের অনুসারীদের কে দীর্ঘমেয়াদী পরীক্ষার আগুনে ঝালাই হতে হয়েছে। তাদের কে দিতে হয়েছে চরম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয়। আল্লাহর দিকে আহবানকারী ও
এ আয়াত দ্বারা পরিস্কার হয়ে গেছে, দ্বীনের দাওয়াতী কাজের ‘দায়ী’ এবং আল্লাহর জমীনে দ্বীন কায়েমের আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী ও এর বিরোধীদের মধ্যে পারস্পারিক দ্বন্দ-সংঘাত এটা চিরাচরিত নিয়ম। অর্থ্যাৎ দ্বীন কায়েমের আন্দোলনের কর্মী ও দ্বীনের বিরোধীদের মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ চলমান প্রক্রিয়া। হক ও বাতিল এবং সত্য ও মিথ্যার সংঘাত আল্লাহর পক্ষ থেকে চালুকৃত নিয়ম-বিধান যা বদলের ক্ষমতা কারো নেই। আল্লাহর প্রতি ঈমানের দাবীদার ও সত্যপন্থীদের যাচাই বাচাই-এর স্থায়ী মানদন্ড। নবী আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাম এবং তাদের অনুসারীদের কে দীর্ঘমেয়াদী পরীক্ষার আগুনে ঝালাই হতে হয়েছে। তাদের কে দিতে হয়েছে চরম ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয়। আল্লাহর দিকে আহবানকারী ও
দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের ধৈর্য,সহিষ্ণুতা,সততা,সত্যবাদীতা,ত্যাগ,তিতিক্ষা,আত্মোৎসর্গিতা,ঈমানী দৃঢ়তা,পরিপক্কতা এবং
আল্লাহর প্রতি পরিপূর্নভাবে নির্ভরশীলতার পরীক্ষা দিতে হবে। তাদেরকে বিপদ,মুসিবত,সমস্যা ও সংকটের সুকঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে। তাদের মধ্যে এমন গুনাবলী সৃষ্টি করতে হবে, যা কেবল মাত্র ঐ কঠিন সংকুল গিরিবর্তে লালিত হতে পারে। পরীক্ষিত মজবুত ঈমান,নির্ভেজাল নৈতিকতা,আল্লাহর প্রতি অগাধ-আস্থা ও সচ্চরিত্রের অস্ত্র ব্যাবহার করে জাহিলিয়াতের উপর বিজয় লাভ করতে হবে। যখনই তাঁরা এসব কিছুর প্রমান দেখাতে পারবে তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে বিজয়ের জন্য বাকী সাহয্যটুকু যথা সময়ে তাদের কে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসবে। মহান আল্লাহর চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের আগে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভের জন্য হাজার চেষ্টা করেও তা আনা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
পুর্বেকার নবী রসুলদের আনীত দ্বীনকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের কে মানসিক,দৈহিক ও আর্থিকভাবে কষ্ট-যন্ত্রনা দেয়া হয়েছে। তবুও তারা এ সব আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা মনে করে ধৈর্য ধারণ করার নীতি অবলম্বন করেছেন। যে কারণে আল্লাহ তাদের কে সাহায্য ও বিজয় দান করেছেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা কোরআনুল কারীমের সুরা বাকারার ২১৪ নম্বর আয়াতে বলেন,“তোমরা কি মনে করেছো যে, তোমরা অতি সহজেই জান্নাতে চলে যাবে ? অথচ তোমাদের আগে যারা ঈমান এনেছিল তাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ নেমে এসেছিল তোমাদের উপর এখনও সেসব বিপদ – মুসিবত আসেনি। তাদের উপর তো এসেছিলো বহু বিপদ-আপদ,দুঃখ-কষ্ট। তাদের কে অত্যাচার-নির্যাতনে তারা এমন ভাবে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল যে, শেষ পর্যন্ত তৎকালীন রাসুল এবং তাঁর সঙ্গী-সাথীরা আর্ত চিৎকার করে বলে উঠেছিল, কখন আল্লাহর সাহয্য আসবে ? তখন তাদের কে শান্তনা দিয়ে বলা হয়েছিল যে, অবশ্যি আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে।
যারা দ্বীনি দাওয়াতী কাজ করে বিরুদ্ধবাদীরা তাদের কোন প্রকার অনিষ্ট করতে পারে না। কেননা অনিষ্টতা থেকে আল্লাহ তা’য়ালাই রক্ষা করেন। যেমন মহান রাব্বুল আলামীন কোরআনের সুরা মায়েদার ৬৭ নংআয়াতে বলেন, হে রাসুল ! তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার কাছে যা কিছু নাযিল করা হয়েছে তা মানুষের নিকট পৌছে দাও। যদি তুমি এ কাজ করতে ত্র“টি করো তাহলে তোমার উপর অর্পিত রেসালাতের দায়িত্ব পালনের হক আদায় হবে না। (আর এ কাজ করতে গিয়ে বিরুদ্ধে বাদীদের পক্ষ থেকে যদি কোন প্রকার অনিষ্টতা করার চেষ্টা করে তাহলে জেনে রাখ) মানুষের অনিষ্টকারিতা থেকে তোমাকে আল্লাহ রক্ষা করবেন। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ কখনও কাফিরদের কে (তোমার মোকাবেলায়)সফলতার পথ দেখাবে না। যারা এ সত্যের দাওয়াত কে মিথ্যা বলছে তাদের পরিনাম কি হয় তা চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। কবে বিরুদ্ধেবাদীর পরিণাম দেখা যাবে তা ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। একজন আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কাজ হলো শুধু মানুষকে আহবান করা আর আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াতী কাজ পরিপুর্ণভাবে করে যাওয়া। দ্বীনি দাওয়াতের এ কাজ পুর্ণ একাগ্রতার সাথে করতে হবে আর ফায়সালা করবেন মহান আল্লাহ তা’য়ালা। বিরুদ্ধবাদীরা বা জালিমরা সবসময় এমনই কল্পনা করে যে, যদি কোন বিপর্যয় ও ধংসের বিষয় থেকে থাকে তাহলে সাথে সাথে আসে না কেন। তাদের ব্যার্থ চ্যালেঞ্জমুলক বক্তব্য ব্যার্থ ছাড়া আর কিছুই না। আল্লাহ তা’য়ালা নবীজি কে সম্বোধন করে কোরআনের সুরা রা’দ এর ৪০ নং আয়াতে বলেছেন “হে নবী ! আমি এদের কে যে অশুভ (বিপর্যয় ও ধংসের) পরিণামের ভয় দেখাচ্ছি তা কিছু আপনার জীবিতাবস্থায় আপনাকে দেখিয়ে দিই অথবা বিপর্যয় আসার পুর্বেই আপনাকে উঠিয়ে নিই- আপনার কাজ শুধু মাত্র আল্লাহর পয়গাম পৌছৈ দেয়া আর হিসাব নেয়ার দায়িত্ব আমার”। এসব বর্ণনার পরেও যদি কেউ মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বিরোধীতার ধারা অব্যাহত রাখে তাহলে আল্লাহর পথে আহবানকারীর কাজ হলো ধর্যের সাথে দ্বীনি দাওয়াতী কাজ করা। আল্লাহর পয়গাম পৌছে দেয়ার তথা দ্বীন কায়েমের আন্দোলন সংগ্রাম ধৈর্যের সাথে চালিয়ে যেতে হবে। আর এমনটিই আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহ বলেন,“ হে মুহাম্মদ ! দাওয়াত পাবার পরও যদি এরা মূখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আপনার কোন কোন সমস্যা নেই,। আপনার দায়িত্ব হলো পরিস্কার ভাবে সত্যের পয়গাম পৌছিয়ে দেয়া”(সুরা নাহল-৮২)।
আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াতী কাজ করতে গিয়ে, দ্বীন কায়েমের আন্দোলন করতে গিয়ে নিজেদের আবেগ অনুভুতি ও কামনা-বাসনাকে সংযত রাখতে হবে। তাড়াহুড়া করা যাবেনা, কারণ তাড়াহুড়া করে কোন ফল পাওয়া যায়না। ভীত-আতংকিত হয়ে, লোভ লালসায় পড়ে অসংগত উদ্দিপনা দেখিয়ে ইসলামের কোন উপকার হবে না। বরং দ্বীনি দাওয়তী কাজ করতে হবে স্থির মস্তিস্কে এবং ভারসাম্যপুর্ণ ও যথার্থ পরিমিত বিচক্ষণতা সহকারে। বিপদ-আপদে ও সংকট-সমস্যার সম্মুখিন হলেও কোন প্রকার পা টলে যাবেন। কোন ‘দায়ী’ ইলাল্লাহ উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে রাগ ও ক্ষোভের তরঙ্গে গা ভাসিয়ে দিয়ে কোন প্রকার অর্থহীন কাজ করবে না। আন্দোলন-সংগ্রামে অবস্থা সম্পুর্ন বিপরীত দিকে মোড় নিলেও মানসিক অস্থিরতায় চেতনা শক্তি বিক্ষিপ্ত ও বিশৃঙ্খল যেন না হয়, সে ব্যাপারে নেতৃবৃন্দকে অবশ্য খেয়াল রাখতে হবে। অপরিপক্ক ব্যাবস্থাপনা আপাতদৃষ্টিতে কার্যকর হতে দেখে দাওয়াতী দ্বীনের কাজের দায়িত্ব যাদের উপর অর্পিত তাদের সংকল্প যেন তাড়াহুড়ার শিকার না হয়। বিশেষ করে মনে রাখতে হবে,বৈষয়িক স্বার্থ,লোভ ও ইন্দ্রিয় সুখভোগের প্ররোচনা যদি লোভাতুর করে তোলে তাহলে নফস যেন দুর্বল হয়ে স্বতঃস্ফুর্তভাবে সেদিকে এগিয়ে না যায়। আর এসব সম্ভব একটি মাত্র উপায়ে তা হলো ধৈর্য। আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, “এসবের উপর যারা ধৈর্য ধারণ করবে তারাই একমাত্র আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থন পেয়ে ধন্য হবে। কারণ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালা থাকেন”। এমন ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়ে এবং আল্লাহর দ্বীন আল্লাহর জমিনে প্রতিষ্ঠার কাজ করতে যেয়ে মনভেঙ্গে দুঃখ না পাবার জন্য আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কোরানুল কারীমের সুরা নহলের ১২৭ নং আয়াতে বলেন, “হে মুহাম্মদ ! ধৈর্য্য ধারণ করো,আর তোমার এ ধৈর্য্য আল্লাহর সুযোগ দানে ফলমাত্র,এদের কার্যকলাপে দুঃখ করবেন না এবং এদের চক্রান্তের কারণে মনক্ষুন্ন হবেন না।” আল্লাহ তায়ালা একইভাবে ধৈর্য্যধারণে তাগিদ দিয়ে সুরা হুদের ১১৫ নং আয়াতে বলেন, “ধৈর্য্য ধারণ করো কারণ আল্লাহ তা’য়ালা সৎকর্মকারীদের কর্মফল কখনো নষ্ট করেন না।” বিরুদ্ধবাদীদের পক্ষ থেকে জুলুম নিপিড়নেই নয় এমনকি নিজেদের কোন কর্মের ভুলবুঝাবুঝির কারণেও যেন ধৈর্যহারা হয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে বিশ্বজাহানের মালিক মহান রাব্বুল আলামীন সুরা আনফালের ৪৬ নং আয়াতে বলেন, “আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করো এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ করো না, তাহলে তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা দেখা দেবে এবং তোমাদের প্রতিপত্তির দিন শেষ হয়ে যাবে। ধৈর্য্য ধারণ করো অবশ্য আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন”। আয়াত থেকে এ কথা প্রমানিত হয়েছে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াতী কাজে এবং আল্লাহ ও নবীর (সাঃ) এর আনুগত্যের ব্যাপারে অপরের তো দুরের কথা নিজেদের মধ্যেও যেন ভুলবুঝাবঝি করে বিবাদ না করে। চরম ধৈর্যের সাথে সব কিছু মেনে নিয়ে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াতে দ্বীনের কাজ করতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন আমীন !
শিক্ষাঃ
১) দ্বীনি দাওয়াতী কাজে বিরুদ্ববাদীদের পক্ষ থেকে জুলুম-নিপিড়ন ও দ্বীন কবুল করতে তাদের অস্বীকারের কারণে মনোকষ্ট না নেয়া।
২) বিরুদ্ধবাদীরা নবীকে অস্বীকার করে না; বরং তিনি যে বাণী বা হেদায়েত নিয়ে এসেছেন তা অস্বীকার করে।
৩) দ্বীন প্রতিষ্টার কাজ করতে যেয়ে অতীতের নবী রসুল এবং তাদের সঙ্গী-সাথীদেরকে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের দাওয়াত কে মানতে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা এসব অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে উপেক্ষা করেছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য পেয়েছেন।
৪) দৈহিক,আর্থিক,মানসিক ক্ষতি এবং জুলুম-নির্যাতনের কারণে ভেঙ্গে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া যাবেনা।
৫) আল্লাহর দ্বীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য ধৈর্যের সাথে আন্দোলন- সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
৬) আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে পরীক্ষা অপরিহার্য, পরীক্ষা আসলে ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রত্যাশা করা।
শিক্ষাঃ
১) দ্বীনি দাওয়াতী কাজে বিরুদ্ববাদীদের পক্ষ থেকে জুলুম-নিপিড়ন ও দ্বীন কবুল করতে তাদের অস্বীকারের কারণে মনোকষ্ট না নেয়া।
২) বিরুদ্ধবাদীরা নবীকে অস্বীকার করে না; বরং তিনি যে বাণী বা হেদায়েত নিয়ে এসেছেন তা অস্বীকার করে।
৩) দ্বীন প্রতিষ্টার কাজ করতে যেয়ে অতীতের নবী রসুল এবং তাদের সঙ্গী-সাথীদেরকে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের দাওয়াত কে মানতে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা এসব অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে উপেক্ষা করেছেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য পেয়েছেন।
৪) দৈহিক,আর্থিক,মানসিক ক্ষতি এবং জুলুম-নির্যাতনের কারণে ভেঙ্গে পড়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া যাবেনা।
৫) আল্লাহর দ্বীন প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য ধৈর্যের সাথে আন্দোলন- সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
৬) আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে পরীক্ষা অপরিহার্য, পরীক্ষা আসলে ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করা এবং আল্লাহর সাহায্য প্রত্যাশা করা।
মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমিন