কুরআন ও হাদীসের মানদণ্ডে থার্টিফাস্ট নাইট !

 কুরআন ও হাদীসের মানদণ্ডে থার্টিফাস্ট নাইট !
মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আজাদ
ভূমিকা: সারাবিশ্বে চলছে এখন সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। বছরের নানা দিন নানান দিবসের ছলনায় যুবক-যুবতীদের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয় এর মাধ্যমে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের সবচেয়ে বড় শিকার বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সমাজ। থার্টিফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন’স ডে, এপ্রিল ফুল ইত্যাদি বিভিন্ন নামে বছরজুড়ে যে উত্সব পালন করা হয় তার প্রধান টার্গেট মুসলিম সমাজের যুবক-যুবতীরা। এসব উত্সবের মধ্যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা, নগ্নতা ও ধোঁকাবাজিসহ সচ্চরিত্র নষ্ট করার সব আয়োজন থাকে ব্যাপকভাবে।
এসব অপসংস্কৃতি মূলত ভোগবাদী পশ্চিমা দেশ থেকে আমদানি করা। থার্টিফার্স্ট নাইট বা ইংরেজি নববর্ষ বরণ উৎব এখন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আড়ম্বরতার সঙ্গে উদযাপিত হয়। প্রথমে পশ্চিমা বিশ্বে চালু হলেও মুক্ত আকাশ সংস্কৃতি ও গ্লোবাইলাইজেশনের জোয়ারে বিশ্বের আনাচে-কানাচে, অলিতে-গলিতে এটি ব্যাপৃত হয়েছে। বাংলাদেশেও বিগত ১০-১৫ বছর যাবত ইংরেজি বর্ষবরণ খুব জোরেশোরে উদযাপিত হচ্ছে এবং এটি দিন দিন ডালপালা ছড়িয়ে মহীরুহে পরিণত হচ্ছে।
প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বরের রাতটিকে বিশ্বের অনেক দেশে থার্টিফাস্ট রাত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। ইদানীং আমাদের দেশেও এই রাতটি উক্ত নামে আখ্যায়িত হচ্ছে। যদিও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন রেওয়াজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও আগে থেকে চলে আসছে। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে বর্ষবরণের সাথে সাথে যোগ হয়েছে এই নূতন কথাটি “থার্টি ফাস্ট নাইট” যা হয়তো আরও ১০-১৫ বছর আগে মানুষ শুনে নাই।
প্রিয় পাঠক, আজ আপনাদের সামনে আলোচনা করতে চাই এই থার্টি ফাস্ট নাইট নিয়ে। নিঃসন্দেহে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ এটি মুসলমানদের কোন বিষয় নয় বরং এটি সর্ব প্রথম অমুসলিমরাই আবিষ্কার করেছে। তাই আসুন দেখি তারা কিভাবে এই রাতটি উপভোগ করে?
একেক দেশে একেক সংস্কৃতির মাধ্যমে র্বষবরণ অনুষ্ঠিত হয়। একজন অন্য জনের গায়ে পানি ছিটিয়ে থাইল্যান্ডরে উৎসব, আঙুর খেয়ে স্পেনের উৎসব, নবর্বষরে শুরুতে ঘুমালে চোখের ভ্রু সাদা হয়ে যায় সে কারণে শুরুর সময়টাতে না ঘুমিয়ে কোরিয়ানদের উৎসব, রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে বারোটি ঘণ্টা বাজানোর মাধ্যমে মেক্সিকোর উৎসব, ভোর হওয়ার সাথে শিক্ষকদের নিকট দীর্ঘায়ু কামনা করে ভিয়েতনামের উৎসব, পরিবারের সব সদস্যদের একত্রে রাতরে আহার করার মাধ্যমে আর্জেন্টিনা উৎসব, সাদা পোশাক পরিধান করে ব্রাজিল বাসীর উৎসব পালিত হয়। (এই অংশটি নেট থেকে সংগৃহীত) এই আবিষ্কারকদের উৎসব পালনের পদ্ধতি যেখানে কিছু কুসংস্কার এবং কিছু শালীন কর্ম কাণ্ড রয়েছে।
থার্টি ফাস্ট নাইট পালনের ইতিহাস:
ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী, খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজার সর্বপ্রথম ইংরেজী নববর্ষ উৎসবের প্রচলন করে। পহেলা জানুয়ারী পাকাপোক্তভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রবর্তনের পর। ধীরে ধীরে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার (খ্রিষ্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক, দুশ্চরিত্র, (যার বিবাহ বহির্ভূত একটি সন্তান ছিল) পোপ গ্রেগরীর নামানুসারে যে ক্যালেন্ডার) অনুযায়ী নববর্ষ পালন করা হচ্ছে। ইরানে নওরোজ বা নববর্ষ শুরু হয় পুরনো বছরের শেষ বুধবার এবং উৎসব চলতে থাকে নতুন বছরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত। সাধারণভাবে প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জমশীদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এই নওরোজের প্রবর্তন করেছিল। মেসোপটেমিয়ায় আকিতু বা নববর্ষ শুরু হতো নতুন চাঁদের সঙ্গে। ব্যাবিলনিয়ায় নববর্ষ শুরু হতো মহাবিষুবের দিনে ২০ মার্চ। অ্যাসিরিয়ায় শুরু হতো জলবিষুবের দিনে ২১ সেপ্টেম্বর। মিসর, ফিনিসিয়া ও পারসিকদের নতুন বছর শুরু হতো ২১ সেপ্টেম্বর। গ্রীকদের নববর্ষ শুরু হতো খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত ২১ ডিসেম্বর। রোমান প্রজাতন্ত্রের পঞ্জিকা অনুযায়ী নববর্ষ শুরু হতো ১ মার্চ এবং খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৩ এর পরে ১ জানুয়ারীতে। মধ্যযুগে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে নববর্ষ শুরু হতো ২৫ মার্চ। পহেলা জানুয়ারী পাকাপোক্তভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর। ধীরে ধীরে ইউরোপসহ সারা বিশ্বে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইংরেজী নববর্ষ পালন করা হচ্ছে। (এই অংশটি নেট থেকে সংগৃহীত) 
বছরের বিদায় বেলায় একজন মুমিনের অনুভূতি:
বর্তমানে থার্টি ফাস্ট নাইট বা বর্ষবরণ বরণ নামে যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হৈ-হুল্লোড় এবং নগ্নতার প্রদর্শন চলে, তা কি একজন নিন্মস্তরের মুমিনের জন্যও শোভা পায়? বরং বছরের সূচনালগ্নে যখন একজন মুমিন উপস্থিত হয়, তখন তার অনুভূতি এই ধরণের হওয়া দরকার, যে অতীতের দিনগুলো আমার শেষ হয়ে গেল, তা তো আমার জীবনেরই একটি মূল্যবান অংশ। একটি বছর শেষ হওয়ার সরল অর্থ, আমার জীবনের দালান থেকে ৩৬৫ দিনের ৩৬৫ টি পাথর যেন খসে পড়ল। আমার জীবন সংকীর্ণ হয়ে এলো। এতো আনন্দের নয়, চিন্তার ব্যাপার। এখন আনন্দ-উল্লাসের সময় নয়, বরং সময় হল, হিসাব-নিকাশের সময়। কাজেই একটি বছরের উপসংহারে দাঁড়িয়ে মুমিনের মানসপটে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, একটি বছরকে তো আমি শেষ করেছি, কিন্তু যে মহান উদ্দেশ্যে (তাঁর ইবাদত-বন্দেগীর জন্য) মহান আল্লাহ আমাকে এই বসুন্ধরায় পাঠালেন, সে পথে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি? সে পথে আমার প্রাপ্তি কতটুকু? ইসলামী জাহানের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর রা. (মৃ-২৩ হি.) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে তাঁর খুতবায় এক ঐতিহাসিক উক্তি উপস্থাপন করেছিলেন, যা ইমাম তিরমিযী রহ. (২০৯-২৭৯ হি.) স্বীয় গ্রন্থ তিরমিযী শরীফ এবং ইমাম ইবনে আবী শায়বা রহ. (মৃ.-২৩৫ হি.) স্বীয় গ্রন্থ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বায় উল্লেখ করেন। হযরত ওমর রা. বলেছিলেন, হিসাব চাওয়ার পূর্বে নিজের হিসাব করে নাও, তোমার কাজ পরিমাপ করার পূর্বে নিজেই নিজের কাজের পরিমাপ করে নাও। জামে’ তিরমিযী ৪/৬৩৮
সুরা হাশরে আল্লাহ তা’আলা বলেন- তোমরা তাদের মতো হয়োনা, যারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে, তাই আল্লাহও তাদের আত্মভোলা করে দিয়েছেন।
তিরমিযীর বর্ণিত হাদীসে এসেছে-সেই (প্রকৃত) বুদ্ধিমান, যে নিজেই নিজের হিসাব গ্রহণ করে এবং পরকালের জন্য কাজ করে। সুরা মু’মিনূনে আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুগত বান্দাদের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, যারা তাঁদের প্রতিপালকের ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকে….তারাই ভাল কাজে প্রতিযোগিতা করে এবং তাতে বিজয়ী হয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এরাতের ভয়াবহতা:
আমারা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। আমাদের দেশে এই রাত পালন হচ্ছে, নাচ, গান, বেহায়াপনা এবং চরম অশ্লীলতার লেটেস্ট রূপ ডিজে পার্টির মাধ্যমে। বাংলাদেশের মত একটি বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রে এ রাতে জায়গায় জায়গায়, বিভিন্ন স্পটে উচ্ছৃংখল যুবক-যুবতীদের বেহায়াপনায় বাঁধা সৃষ্টি করতে পুলিশ-র‌্যাব নিযুক্ত করতে হয়। পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় সব অভিজাত হোটেল যথা, ওয়েস্টিন, রুপসী বাংলা, প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও, আগ্রাবাদে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য টিকেট বিক্রি করা হয়। টিকেকের মূল্য ত্রিশ হাজারের উর্ধ্বে। এই দেশে অনেক নামধারী মুসলমান আছেন, যারা একটি রাতকে উদযাপনের জন্য হাজার-হাজার ব্যয় করে হোটেল শেরাটনে রাত কাটাবেন, মদপান করে নাচ-গান করবেন, অন্যায় ও পাপ কাজে লিপ্ত হবেন। মহৎ(?) কাজ, নতুন দিন ও নতুন বর্ষকে স্বাগতম জানাবেন। হায়রে আফসোস!
নববর্ষের ফুর্তির নামে পশুদেরও হার মানানো নির্লজ্জতায় ডুবে যায় সমাজ। কথায় আছে, লজ্জা উঠে গেলে কোন কিছু করতেই বাঁধ ও বাধা থাকে না। অর্থনৈকি চরম দুরাবস্থা ও দারিদ্রের কশাঘাতে আহত সাধারণ জনগনকে যারা রক্ষা করার মুখরোচক শ্লোগান তুলে থাকেন, সেসব একশ্রেণীর ভদ্রতার মুখোশধারী রাজনীতিক, সুশীল ও পদস্থ কর্মকর্তা এবং গরীবের রক্তচোষা বণিকেরা মেতে উঠেন থার্টি ফার্স্ট নাইটের নোংরামী এবং অপচয়ের উম্মাদনায়।
নারীর অধিকার আদায়ে ইসলামের একহাত নেওয়া নারীবাদি সুশীলরাও এদিন উপলক্ষে পণ্য হিসেবে বিক্রিত নারী ভোগে মেতে উঠবে। পিছিয়ে থাকবেন না, নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী ইসলামকে গৃহবন্দী করা রাজনীতিকরাও। বাংলা সংস্কৃতির ঠিকাদারেরাই কাল পশ্চিমা এই সংস্কৃতি নিয়ে মেয়েলি ভাবালুতায় ডুযে যাবেন। আর মিডিয়া? তার বহুলাংশ তো আজ নরপিচাশ ও অসভ্যদেরই আয়নায় পরিণত হয়েছে। সেসব মিডিয়াই তো এসবের মূল পৃষ্ঠপোষকের ভূমিকায়। তথাকথিত এসব সুশীলরাই অন্য কোন দিন হয়তো টিভির পর্দা ফাটাবেন ইভটিজিং রোধের বক্তব্যে। হায় জাতি! হায় জাতির বিবেক!
আল্লাহর দীন যেখানে গৃহবন্দি; ইসলাম যে সমাজের অতি সাধারণ ও গুরুত্বহীন বিষয়, সেখানে এসব কোন ব্যপারই না। কারো চোখেই লাজ বা লজ্জা নেই, সবাই স্বাভাবিক। আজ থেকে বহুদিন আগে এই থার্টিফাস্ট নাইটেই গভীর রাতে উম্মাদনা করতে বের হয়ে আসা “বাঁধন” এর শাড়ি ও সংসারের বাঁধন দুই-ই খুলেছিল তথাকথিত মুক্তমনা ও তাদের শিষ্যরা। এজন্য উক্ত কালচারের বিরোদ্ধে কথা তোলেনি কেউ। অথচ ইসলামের নামে বিপথগামী কেউ মন্দ কিছু করলেই তাদের মুখে উঠে ইসলাম নিয়ন্ত্রণের কথা।
কয়েক বছর আগে থার্টি ফার্স্ট নাইটে তথাকথিত সুশীল, মুক্তমনাদের জন্য আমদানী হয়েছিল ২০০০ নর্তকী। তখনকার গণমাধ্যমগুলোয় ফলাও করে সেসব সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। যখন রাজধানীতে থার্টি ফার্স্ট নাইটের উম্মামদায় নেমে পড়েন কিছু লোক, ঠিক তখনই কনকনে শীতে একটুখানি উষ্ণতার পরশ পাওয়ার মতো কাপড়ের অভাবে প্রতি বছরই মৃত্যুমুখে পতিত হন বহু অভাবী লোক। বছর দুয়েক আগে একজন ইসলাম বিদ্বেষী লেখক তার বহুল আলোচিত প্রথম আলোর লেখায় যুবকদেরকে যুবতীদের ভালবাসা ও সান্নিধ্য পাওয়ার চেষ্টা করার নসীহত করেছেন। ধর্মান্ধতা ছেড়ে প্রেমে ভাবালুতা করার নির্দেশ করেছেন। গরীব ও হতদরিদ্র লোকেরা শীতবস্ত্রের অভাবে কম্পমান হলেও তারা অনেক ফুরফুরে। তাদের এক্সট্রা উষ্ণতার জন্য প্রতি শীতেই থাকে থার্টি ফাস্ট নাইটের গরম আয়োজন। জাতিকে নসীহতকারী প্রগতিশীলরা এতে লাখ টাকার টিকেট কিনে নাইট ক্লাবে গিয়ে নাচেন, সূরা টানেন।
কয়েক বছর আগের দৈনিক মানবজমিন বলছে, থার্টি ফার্স্ট নাইট মাতাতে আসছে ভারত, মালয়েশীয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন ও কেনিয়ার ডিজেরা। রেডিসন, রিজেন্সি ও লেকশোর-এ পারফর্ম করবেন তারা। তাদের নাচ ও গানের সঙ্গে থাকছে এদেশীয় আইটেম গার্ল ও ডিজেদের মোহনীয় হাতছানি। থাকছে ফ্যাশন শো, আইটেম ড্যান্স ও লাইভ মিউজিক কনসার্ট। রাজধানীর ডিজে স্কুল গ্যারেজ ও আইস সূত্র জানিয়েছে, এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে দুই সহস্রাধিক ডিজে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নাচের ঢেউ তুলবেন। পার্শ্ববর্তী ভারতসহ আফ্রিকা ও ইউরোপের অনেক দেশের ডিজে ও ড্যান্সারদের নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। এছাড়া এদেশীয় ডিজেরা ইতিমধ্যেই পারসোনাল ও করপোরেট প্রোগ্রামে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
এই যদি হয় কয়েক বছর আগের পরিস্থিতি। তবে এখনকার অবস্থা কতোটা ভয়াবহ, তা সহজেই অনুমেয়! আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে তিনি যেন আমাদের রক্ষা করেন এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে একটি সুন্দর পরিবেশে বসবাসের তাউফীক দান করেন। আমীন।
প্রিয় পাঠক, দুঃখ জনক হলেও বাস্তব সত্য হল এই যে, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মর্ডানিজমের নামে তরুণ-তরুণীরা এ রাতে ‘মার্ডার’ হচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

“দুই শ্রেণীর জাহান্নামী রয়েছে, যাদের আমি এখনও দেখি নি। এমন সম্প্রদায়, যাদের হাতে গরু পরিচালনা করার লাঠি থাকবে। তা দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। আর নগ্ন পোশাক পরিধানকারী নারী, যারা পুরুষদেরকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করে এবং নিজেরাও পুরুষের দিকে আকৃষ্ট হয়। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধ বিশিষ্ট উটের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। অথচ উহার সুগন্ধি এত এত দূর থেকে পাওয়া যায়’।” (মুসলিম, মিশকাত ৩৫২৪)

কুরআন ও হাদীসের মানদণ্ডে থার্টিফাস্ট নাইট:
প্রথমত: আমরা মুসলমান হিসেবে আমাদের জীবনের সবকিছুই হতে হবে ইসলামের আলোকে। অথচ এই ইসলাম তার নিজস্ব বর্ষ বরণ অর্থাৎ আরবী বর্ষ বরণের কথাও তার কোন অনুসারীকে বলে নাই।
দ্বিতীয়ত: রাত এবং দিন, আল্লাহ্‌র সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত, তাই তাঁর সৃষ্টিকে তাঁর বিধান মোতাবেক ব্যবহার এবং ভোগ ও উপভোগ করাই সমিচিন। তাই আসুন আমার দেখি রাত সম্পর্কে আল্লাহ্ কী বলেছেন? সূরা নাবার ১০-১১ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’লা এরশাদ করেছেন:
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ لِبَاسًا * وَجَعَلْنَا النَّهَارَ مَعَاشًا”،
“রাতকে করেছি আবরণ আর দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।”
সূরা ইউনুসের -৬৭ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’লা এরশাদ করেছেন:
“وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمْ اللَّيْلَ لِتَسْكُنُوا فِيهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا”
“তিনি তোমাদের জন্য তৈরি করেছেন রাত যাতে করে তোমরা তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পার, আর দিন দিয়েছেন দর্শন করার জন্য।”
সূরা কাসাসের ৭৩ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’লা এরশাদ করেছেন:
وَمِنْ رَحْمَتِهِ جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ لِتَسْكُنُوا فِيهِ وَلِتَبْتَغُوا مِنْ فَضْلِهِ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
“তিনিই স্বীয় রহমতে তোমাদের জন্য রাতও দিন করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ ও তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।”
সূরা মুযযাম্মিলের ১-৩ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ তা’লা এরশাদ করেছেন:
يَا أَيُّهَا الْمُزَّمِّلُ. قُمِ اللَّيْلَ إِلَّا قَلِيلًا. نِصْفَهُ أَوِ انقُصْ مِنْهُ قَلِيلًا. أَوْ زِدْ عَلَيْهِ
“হে বস্ত্রাবৃত, রাত্রিতে দণ্ডয়মান হন কিছু অংশ বাদ দিয়ে, অর্ধরাত্রি অথবা তদপেক্ষা কিছু কম অথবা তদপেক্ষা বেশী।”
তাহলে এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে রাতের মূল কাজ হল মানুষ আরাম করবে এবং রাতের কিছু অংশ আল্লাহর ইবাদতে অতিবাহিত করবে।
হাদীসে রাত সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে:
(ينزل ربنا تبارك وتعالى إلى السماء الدنيا كل ليلة حين يبقى ثلث الليل الآخر فيقول: من يدعوني فأستجيب له، من يسألني فأعطيه، من يستغفرني فأغفر له، حتى ينفجر الفجر)
“রাতের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে দয়াময় রব পৃথিবীর নিকটবর্তী আকাশে নেমে আসেন এবং বলতে থাকেন কে আমার নিকট কোন দোয়া করবে আমি তার দোয়া কবুল করব, কে আমার নিকট কিছু চাইবে আমি তাকে তা দিব, কে আমার নিকট ক্ষমা চাইবে আমি তাকে ক্ষমা করব, এভাবে ফজর হওয়া পর্যন্ত তা চলতে থাকে।” বুখারী হাদীস নং ১১৪৫ মুসলিম হাদীস নং-৭৫৮
প্রিয় পাঠক মহান আল্লাহ্‌ যখন মানব মণ্ডলীকে এইভাবে আহ্বান করতে থাকে তখন কেউ কি করে অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনায় মগ্ন থাকতে পারে?!
থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে মরহুম ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য: আমাদের ছেলে-মেয়েরা, মুসলমানের ছেলে-মেয়েরা থার্টি ফাস্ট নাইট, জিড়ো আওয়ারে নাচ, গান, ঢোল ইত্যাদি দিয়ে শুরু করবে। কেন করবে? কারন জিড়ো আওয়ার আনন্দ দিয়ে শুরু করলে সারা বছর আনন্দে যাবে। এটা কি বিজ্ঞান সমর্থন করে? কোন যুক্তি, সাহিত্য এটা সমর্থন করে? বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ, বাংলাদেশের মানুষ যুগযুগ ধরে এটা লালন করছে? এটা ইউরোপ, আমেরিকার রোমান প্যাকানিজম থেকে আমরা আনদামী করেছি। যে প্যাকানিজম উঠে গেছে, প্রকৃতি পুজা উঠে গেছে, আমরা এটাকে আনদামী করেছি।
কেউ বলে? ঠিক আছে বছরটা ভাল কাজ দিয়েই শুরু করা যাক। পহেলা বৈশাখে, থার্টি ফাস্ট নাইটে জিড়ো আওয়ারে ঢাকা ভার্সিটির ছেলে-মেয়েরা, রাজশাহী ভার্সিটির, প্রাইবেট বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা যারা পেপসির চেয়ে, বিয়ার এবং হুস্কি খাওয়া বেশি পছন্দ কর তোমরা এক বোতল, হুস্কির টাকা সেভ কর, ঐ বস্তির গরিব মানুষের কাছে গিয়ে, যেখানে হাঁজার হাজার শিশু শীতে কাপছে, কোন শীতের কাপড় নেই। তাদেরকে অন্তত্য একটা শীতের কাপড় দিয়ে তোমার নতুন বছর শুরু কর। এ কথা কি কেউ বলছে? না, কেউ বলছে না। কারন এটা নাকি মৌলবাদীর কথা। মানবতাকে সাহায্য করা, গড়িবদের সাহায্য এটা নাকি মৌলবাদীদের কথা ঠিক তো?
এরকম কথা বললে আমাদের যুবকরা নষ্ট হয়ে যাবে ঠিক না? না নষ্ট হবে না। তাহলে কেন বলছিনা? কারন এই দিবসগুলোকে কিছু লোকের বানিজ্যিক সাম্রাজ্যবাদীদের বানিজ্যিক সুবিধা রক্ষার্থে, বানিজ্য প্রসারের জন্য। দুটি স্বার্থ রক্ষার জন্য... একটি হল তাদের কেনা, বেচা বাড়ুক। আর একটা হল আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন পশুতে পরিণত। খাওয়া দাওয়া ছাড়া যেন কোন নৈতিক চিন্তা তাদের না থাকে।
ইসলামে উৎসবের রূপরেখাঃ  
আমরা অনেকে উপলব্ধি না করলেও, উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান- ধারনার ছোঁয়া। উদাহরণস্বরূপ ইহুদীদের নববর্ষ ‘রোশ হাশানাহ’ ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত ইহুদীদের ধর্মীয় পবিত্র দিন ‘সাবাত’ হিসেবে পালিত হয়। এমনিভাবে প্রায় সকল জাতির উতসব-উপলক্ষের মাঝেই ধর্মীয় চিন্তা-ধারা খুঁজে পাওয়া যাবে। আর এজন্যই ইসলামে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উৎসবকে নির্ধারণ করেছেন, ফলে অন্যদের উৎসব মুসলিমদের সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ (খুশী) রয়েছে, আর এটা (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) আমাদের ঈদ। বুখারী ও মুসলিম
মুসলিম ও অমুসলিমদের উৎসবের পার্থক্যঃ 
ইসলামের এই যে উৎসব, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এগুলো থেকে মুসলিম ও অমুসলিমদের উৎসবের মূলনীতিগত একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য স্পষ্ট হয়। বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য করা উচিত। অমুসলিম, কাফির কিংবা মুশরিকদের উৎসবের দিনগুলো হচ্ছে তাদের জন্য উচ্ছৃংখল আচরণের দিন। এদিনে তারা সকল নৈতিকতার সকল বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, আর এই কর্মকান্ডের অবধারিত রূপ হচ্ছে মদ্যপান ও ব্যভিচার। এমনকি খৃষ্টান সম্প্রদায়ের বহুলোক তাদের (মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত) বড়দিনেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে মদ্যপ হয়ে উঠে এবং পশ্চিমা বিশ্বে এই রাত্রিতে বেশ কিছু লোক নিহত হয় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ী চালানোর কারণে। অপরদিকে মুসলিমদের উৎসব হচ্ছে ইবাদতের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। এই বিষয়টি বুঝতে হলে ইসলামের সার্বিকতাকে বুঝতে হবে। ইসলাম কেবল কিছু আচার-অনুষ্ঠানের সমষ্টি নয়, বরং তা মানুষের গোটা জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী বিন্যস্ত ও সজ্জিত করতে উদ্যোগী হয়। তাই একজন মুসলিমের জন্য জীবনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইবাদত, যেমনটি কুরআনে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেছেনঃ
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
‘আমি জ্বীন ও মানুষকে আমার ইবাদত করা ছাড়া অন্য কোন কারনে সৃষ্টি করিনি’। সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত-৫৬
অর্থাৎ আমি তাদেরকে অন্য কারো দাসত্বের জন্য নয় আমার নিজের দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছি ৷ তারা আমার দাসত্ব করবে এ জন্য যে, আমি তাদের স্রষ্টা ৷ যখন অন্য কেউ তাদের সৃষ্টি করেনি তখন তার দাসত্ব করার কি অধিকার এদের আছে? তাছাড়া তাদের জন্য এটা কি করে বৈধ হতে পারে যে, এদের স্রষ্টা আমি অথচ এরা দাসত্ব করবে অন্যদের!
সে জন্য মুসলিম জীবনের আনন্দ-উৎসব আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও অশ্লীলতায় নিহিত নয়, বরং তা নিহিত হচ্ছে আল্লাহর দেয়া আদেশ পালন করতে পারার মাঝে। কেননা মুসলিমদের ভোগবিলাসের স্থান ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী নয়, বরং চিরস্থায়ী জান্নাত। তাই মুসলিম জীবনের প্রতিটি কাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে থাকবে তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের ঈমান, আখিরাতের প্রতি তাদের অবিচল বিশ্বাস, আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালবাসা।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ পালন করা নিঃসন্দেহে হারাম। মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ ‘যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের অনুস্মরণ করবে, সে সেই জাতির অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে। সুনানে আবু দাউদ
মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন,

‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্যই আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি’। সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াতঃ ৪৮
তাই, একজন মুসলিম খৃস্টান পাদ্রী পোপ গ্রেগরিয়ান- এর নামানুসারে যে ক্যালেন্ডার, সেই ক্যালেন্ডারের পরবর্তী চলন ইংরেজি ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে পালন করলে তার ঈমান কখনও থাকতে পারে না।
আমাদের করণীয়ঃ
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ইংরেজি নববর্ষ বা ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ সংক্রান্ত যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ এতে নিম্নলিখিত শ্রেণীর ইসলাম বিরোধী বিষয় রয়েছে।
এক. শিরকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদি, চিন্তাধারা ও সংগীত।
দুই. নগ্নতা, অশ্লীলতা, ব্যভিচারপূর্ণ অনুষ্ঠান।
তিন. গান ও বাদ্যপূর্ণ অনুষ্ঠান।
চার. সময় অপচয়কারী অনর্থক বাজে কথা ও কাজ।
এ অবস্থায় প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেকে ব্যক্তিগত ভাবে এগুলো থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা এবং মুসলিম সমাজ থেকে এই সকল প্রথা উচ্ছেদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো নিজ নিজ সাধ্য ও অবস্থান অনুযায়ী। এ প্রসঙ্গে আমাদের করণীয় সম্পর্কে কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।
এক. এ বিষয়ে দেশের শাসকগোষ্ঠীর দায়িত্ব হবে আইন প্রয়োগের দ্বারা নববর্ষের যাবতীয় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
দুই. যেসব ব্যক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কিছুটা ক্ষমতার অধিকারী, তাদের কর্তব্য হবে অধীনস্থদেরকে এ কাজ থেকে বিরত রাখা।
তিন. মসজিদের ইমাম, আলেম, দাঈগণ এ বিষয়ে জনগণকে ও মুসল্লীদেরকে সচেতন করবেন ও বিরত থাকার উপদেশ দেবেন।
চার. পরিবারের প্রধান এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন যে তার পুত্র, কন্যা, স্ত্রী কিংবা অধীনস্থ অন্য কেউ যেন নববর্ষের কোন অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়।
পাঁচ. এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকে তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী, সহকর্মী ও পরিবারের মানুষকে উপদেশ দেবেন এবং ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ বা নববর্ষ পালনের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবেন। কারণ আল্লাহ বলেন,
وَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ
১৩১) সেই আগুন থেকে দূরে থাকো, যা কাফেরদের জন্য তৈরী করা হয়েছে 
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
১৩২) এবং আল্লাহ ও রসূলের হুকুম মেনে নাও, আশা করা যায় তোমাদের ওপর রহম করা হবে৷
وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ
১৩৩) “আর তোমরা তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও, যার পরিধি আসমান ও যমীনব্যাপী, যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য।”  সূরা আলে-ইমরান, আয়াত: ১৩১-১৩৩
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর আনুগত্যের ও ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক দান করুন এবং কল্যাণ ও শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর, তাঁর পরিবার ও সাহাবীগণের ওপর।