অবশেষে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়ায় ঠাঁই পেয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত
ইসলাম প্রচারক ডা. জাকির নায়েক। দেশটিতে স্থায়ীভাবে বাস করার অনুমতি
পেয়েছেন তিনি। তাকে সাদরে বরণ করে নিয়েছেন মালয়েশিয়ার শীর্ষ সরকারি
কর্মকর্তারা।
গত মাসে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ার পুত্রা মসজিদ থেকে
জাকির নায়েক একজন দেহরক্ষীকে সাথে নিয়ে জনসম্মুখে বেরিয়ে এসেছিলেন।
সেদেশে এভাবে তার প্রকাশ্যে আসা বিরল ঘটনা। ওই সময় তার চারপাশে মানুষ
ভিড় জমায় এবং সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ওই মসজিদে মালয়েশিয়ার
প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রায়ই নামাজ পড়েন।
পিস টিভি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জাকির নায়েক তার বক্তব্য ও মতামত প্রচার
করতেন। বিশেষ করে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক তার বক্তব্যগুলো ছিল অত্যন্ত
যুক্তিপূর্ণ। তার বক্তৃতায় মুগ্ধ হয়ে সারা বিশ্বের প্রচুর অমুসলিম ব্যক্তি
ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু গত বছর ঢাকায় হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা
চালিয়ে ২২ জনকে হত্যাকারী সন্ত্রাসীরা জাকির নায়েকের বক্তব্যে অণুপ্রাণীত ও
তার অনুসারী- গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পিস টিভি চ্যানেল বন্ধ
করে দেয় বাংলাদেশ। অবশ্য ওই হামলার দায় স্বীকার করে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
সিঙ্গাপুরের রাজারত্মম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাডিজের বিশ্লেষক
রাশাদ আলী বলেছেন, মালয়েশিয়া সরকার জাকির নায়েকের থাকার ব্যবস্থা করেছে,
কারণ ‘যৌক্তিকতার সাথেই মালয়দের মধ্যে জনপ্রিয় চরিত্র হয়ে আছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ অবস্থায় সরকার যদি তাকে দেশ থেকে বের করে দেয়, তাহলে
তা জনগণের দৃষ্টিতে ধর্মীয় বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’
মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আহমদ জাহিদ মঙ্গলবার তাদের পার্লামেন্টকে
জানান, পাঁচ বছর আগেই মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে জাকির নায়েককে। এ
সময়ের মধ্যে তিনি দেশের আইন বা শৃঙ্খলা ভাঙেননি। এ ছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে
তার সম্পর্কে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নিয়ে মালয়েশিয়াকে কিছু জানানো
হয়নি। ফলে তাকে আটক বা গ্রেফতারের কোনো কারণ নেই।
অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার বিরোধী দল ইসলামিক পার্টিও জাকির নায়েককে সমর্থন
করে বিবৃতি দিয়েছে এবং কোনো বিদেশি সরকারের হাতে তাকে তুলে না দেয়ার আহ্বান
জানিয়েছে।