তিন রাক‘আত বিতর আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তির সমাধাণ !

তিন রাক‘আত বিতর আদায়ের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তির সমাধাণ !
মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আযাদ

হাদীসের আলোকে তিন রাকআত বিতর আদায়ের তিনটি পদ্ধতি বিদ্যমান:
(১) দু রাকআতের শেষে বসে ‘আত-তাহিয়্যাতু’ পাঠ করে উঠে দাঁড়িয়ে তৃতীয় রাকআত আদায় করা । (আব্দুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ ৩/২৫-২৭; ইবনু আবী শাইবা, আল-মুসান্নাফ ২/২৯৩-২৯৬)
(২) দু রাকআত শেষে আত-তাহিয়্যাতু, দরুদ ও দুআ পাঠ করে সালাম ফেরানোর পরে নতুন তাকবীরে তাহরীমা-সহ পৃথক এক রাকআত আদায় করা (ইবনে আবী শাইবা, ইর: ২/১৫০) ইবনে উমারও এইভাবে বিত্‌র পড়তেন। (বুখারী) এবং

(৩) দু রাকআত শেষে না বসে তৃতীয় রাকআতে উঠে দাঁড়ানো এবং তিন রাকআত একত্রে শেষ করা। (হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৩০৪, বায়হাকী ৩/২৮, ৩/৩১)
প্রথম পদ্ধতিটিই হানাফী মাযহাব সমর্থিত এবং আমাদের দেশে অধিক প্রচলিত। কোনো কোনো আলিম এ পদ্ধতিতে বিতর পালনে নিরুৎসাহিত করে বলেন এতে মাগরিবের মত বিতর পড়া হয় যা হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। তাঁদের এ ধারণাটি সঠিক নয়।
নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষণীয়:
(১) “মাগরিবের মত বিতর না পড়ার” হাদীসগুলোতে পদ্ধতিগত পার্থক্যের কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয় নি; বরং রাকআতের পার্থক্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সুস্পষ্টত বলা হয়েছে সালাতুল বিতর “মাগরিবের মত তিন রাকআত” না পড়ে “পাঁচ” বা “সাত” রাকআত পড়। অর্থাৎ তিন রাকআত পড়লেই তা মাগরিবের মত হয়ে গেল; যে পদ্ধতিতেই তা পড়া হোক না কেন।
(২) রাসূলুলাহ সাঃ তিন রাকআত বিতর পালন করেছেন বলে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। অধিকাংশ হাদীস থেকে বাহ্যত বুঝা যায় যে, তিনি ১ম পদ্ধতিতেই তিন রাকআত বিতর আদায় করেছেন।
(৩) অনেক সাহাবী-তাবিয়ী “মাগরিবের মত”, অর্থাৎ প্রথম পদ্ধতিতে ৩ রাকআত বিতর আদায় করতেন বলে প্রমাণিত। আব্দুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ ৩/২৫-২৭; ইবনু আবী শাইবা, আল-মুসান্নাফ ২/২৯৩-২৯৬
মুমিনগণের উচিত পদ্ধতি বিষয়ক বিতর্কে লিপ্ত না হওয়া। উপরের তিনটি পদ্ধতির যে পদ্ধতিটি আপনার নিকট অধিক গ্রহণযোগ্য সে পদ্ধতিতে বিতর আদায় করুন এবং হাদীসে প্রমাণিত অন্যান্য পদ্ধতিকে সম্মান করুন। আপনার আদায় করা পদ্ধতির বিপরীতে অন্য কেউ হাদীসে প্রমাণিত অন্যান্য পদ্ধতিতে বিতর আদায় করলে তাকে বাধা দিবেন না৤
[গবেষণা ও প্রচারেঃ] বাংলাদেশ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ও বাংলাদেশ ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার
যোগাযোগঃ ০১৭৪২৩৪৪১০৭