ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে ৬টি মারাত্মক ভুল ধারণা ও সেগুলোর জবাব
অনুবাদ: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
১মঃ মুসলিমরা জঙ্গী, সন্ত্রাসী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, সাম্প্রদায়িক!
উত্তর:
অমুসলিমদের নিকট ইসলাম সম্পর্কে এটি হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক ভুল ধারণা। এটি
বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচারের ফলাফল। কোন অস্ত্রধারী
যখন ইহুদীবাদের নামে মসজিদে আক্রমণ চালায়, যখন কোন খৃষ্টান ক্যাথলিক
অস্ত্রধারী গ্রুপ আয়ারল্যান্ডের শহরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়, যখন খৃষ্টান
ধর্মের আর্থডিক্স সম্প্রদায়ের সার্বীয় হিংস্র মিলেশিয়েরা বসনিয় নিরপরাধ
মুসলিম নাগরিকদের উপর বর্বর হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট-তরাজ এবং ধ্বংসযজ্ঞ
চালায় তখন এসকল জঘন্য কার্যক্রমকে তো সে ধর্মের প্রতিটি অনুসারীদের
বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয় না বা সে ধর্মকেও দায়ী করা হয় না? অথচ অত্যন্ত
দুঃখ জনক হলেও সত্য যে বর্তমানে পৃথিবীর কোথায় হিংসাত্মক কোন ঘটনা ঘটলে
সাথে সাথে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী
ইত্যাদি বলে প্রচার মাধ্যমগুলো দোষারোপ করতে শুরু করে।
বর্তমানে যেসব রাষ্ট্রকে ইসলামী রাষ্ট্র বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে সেগুলো হয়ত কোন কোনটি ইসলামী ভিত্তির উপর আদৌ প্রতিষ্ঠিত নয়। বরং সে সকল দেশের একনায়ক রাষ্ট্রশক্তি এবং রাজনৈতিক নেতারা ইসলামকে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছে। সুতরাং একজন নীতিমান মানুষের উচিৎ হবে, ইসলামের মূল উৎস থেকে ইসলামকে বিশ্লেষণ করা। তাকে পার্থক্য করতে হবে, ইসলাম সম্পর্কে বর্তমানে মিডিয়াতে কি বলা হচ্ছে আর কুরআন ও হাদীসে ইসলামের মূল শিক্ষা কী দেয়া হয়েছে?
ইসলাম মানে আল্লাহর আনুগত্যের কাছে
আত্মসর্ম্পণ করা। শব্দগত বিশ্লেষণ করলে মূলত ইসলাম মানে শন্তি। একজন মানুষ
নিজের জীবনে ইসলামকে বাস্তবায়ন করলে আত্মিকভাবে খুঁজে পায় পরম শান্তি ও
অনাবিল তৃপ্তি। ইসলাম সর্বদা শান্তির পক্ষে; সন্ত্রাসের বিপক্ষে।
বর্তমানে পাশ্চাত্য সমাজে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মের প্রভাব নেই বললেই চলে। যার কারণে তারা ইসলামকে তাদের ধর্মের মতই একটি প্রত্যাখ্যাত বা বিতাড়িত ধর্ম মনে করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। এতে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি সমস্যার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা এবং সর্বোত্তম সমাধান।
ইসলামে মানুষের আত্মরক্ষা করার বৈধতা রয়েছে। রয়েছে দ্বীন রক্ষা করার বৈধতা। ইসলামে রয়েছে বিনা অপরাধে যে সকল মানুষ নিজের ঘর-বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছে সে সকল দুর্বল মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহবান। ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে সুস্পষ্ট যুদ্ধ নীতি। যেখানে বলা হয়েছে, যুদ্ধাবস্থায় সাধারণ মানুষকে হত্যা করা যাবে না। এমনকি তাদেরকে নুন্যতম কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্ষেত-খামার, গাছ, ফসলাদী, পশু-পাখি ইত্যাদি ধ্বংস করা যাবেনা।
মোটকথা, নিরপরাধ মানুষকে কোন অবস্থায় হত্যা করতে ইসলাম অনুমতি দেয়নি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আর তোমরা আল্লাহর পথে ঐ সমস্ত লোকদের সাথে যুদ্ধ কর যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসে। এবং সীমালঙ্ঘন কর না। আল্লাহ তো সীমালংঘন কারীদেরকে ভালবাসেন না।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৯০)
ইসলামে যুদ্ধ হল সর্বশেষ পদক্ষেপ। এবং তা ইসলামী শরীয়ত প্রদত্ত এক অলঙ্ঘনীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
জিহাদ শব্দের অর্থ হল, সাধনা করা বা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা করা। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জিহাদের দুটি অর্থ রয়েছে। একটি হল, আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে লড়াই করা । অপরটি হল, মানুষের রিপু, কু প্রবৃত্তি, স্বার্থপরতা, হিংসা, অহংবোধ, নিচুটা ইত্যাদি অন্তরের গোপন শত্রুদের সাথে নিরন্তর সংঘাত।
২য়ঃ ইসলাম নারীদের প্রতি অত্যাচার করে!বর্তমানে পাশ্চাত্য সমাজে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মের প্রভাব নেই বললেই চলে। যার কারণে তারা ইসলামকে তাদের ধর্মের মতই একটি প্রত্যাখ্যাত বা বিতাড়িত ধর্ম মনে করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। এতে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি সমস্যার জন্য রয়েছে পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা এবং সর্বোত্তম সমাধান।
ইসলামে মানুষের আত্মরক্ষা করার বৈধতা রয়েছে। রয়েছে দ্বীন রক্ষা করার বৈধতা। ইসলামে রয়েছে বিনা অপরাধে যে সকল মানুষ নিজের ঘর-বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছে সে সকল দুর্বল মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহবান। ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে সুস্পষ্ট যুদ্ধ নীতি। যেখানে বলা হয়েছে, যুদ্ধাবস্থায় সাধারণ মানুষকে হত্যা করা যাবে না। এমনকি তাদেরকে নুন্যতম কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্ষেত-খামার, গাছ, ফসলাদী, পশু-পাখি ইত্যাদি ধ্বংস করা যাবেনা।
মোটকথা, নিরপরাধ মানুষকে কোন অবস্থায় হত্যা করতে ইসলাম অনুমতি দেয়নি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আর তোমরা আল্লাহর পথে ঐ সমস্ত লোকদের সাথে যুদ্ধ কর যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসে। এবং সীমালঙ্ঘন কর না। আল্লাহ তো সীমালংঘন কারীদেরকে ভালবাসেন না।” (সূরা বাক্বারাঃ ১৯০)
ইসলামে যুদ্ধ হল সর্বশেষ পদক্ষেপ। এবং তা ইসলামী শরীয়ত প্রদত্ত এক অলঙ্ঘনীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
জিহাদ শব্দের অর্থ হল, সাধনা করা বা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা করা। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জিহাদের দুটি অর্থ রয়েছে। একটি হল, আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে লড়াই করা । অপরটি হল, মানুষের রিপু, কু প্রবৃত্তি, স্বার্থপরতা, হিংসা, অহংবোধ, নিচুটা ইত্যাদি অন্তরের গোপন শত্রুদের সাথে নিরন্তর সংঘাত।
উত্তর: ‘ইসলাম
নারীদের প্রতি অত্যাচার করে’ ইসলামের প্রতি এ জাতীয় অপবাদ সম্পূর্ণ
ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। বরং ইসলাম এসেছে নারীদেরকে অত্যাচারের শিকল থেকে
মুক্ত করার জন্য । ইসলাম এসেছে নারীর মর্যাদা এবং সম্ভ্রমকে রক্ষা করার
জন্য।
পর্দা করার নাম অত্যাচার নয়। বরং পর্দা হচ্ছে নারীর মর্যাদা এবং সম্ভ্রম রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
পর্দা করার নাম অত্যাচার নয়। বরং পর্দা হচ্ছে নারীর মর্যাদা এবং সম্ভ্রম রক্ষার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
নারী ও পুরুষের প্রকৃতি এবং স্বভাবকে ইসলাম
অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। নারী ও পুরুষের স্বভাব ও প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি
রেখে প্রত্যেককে প্রদান করা হয়েছে আলাদা আলাদা দায়িত্ব। সন্তান গর্ভে ধারণ,
প্রসব, দুগ্ধদান, প্রতিপালন ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করতে হয় নারীকে।
প্রতিমাসে নির্দিষ্ট দিনে ঋতুস্রাব, রক্তস্রাব ইত্যাদি শুধু মহিলাদের হয়।
পক্ষান্তরে পুরুষ এসব থেকে মুক্ত। ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে নারী ও পুরুষের
কর্ম ক্ষেত্র এবং দায়িত্ব আলাদা করা হয়েছে। সুতরাং নারী বাড়িতে থেকে বাড়ির
যাবতীয় দায়িত্ব পালন, সন্তান প্রতিপালন ইত্যাদি করার নাম মহিলাদেরকে
‘জেলখানায় বন্দি’ রাখা নয়। বরং এটা তার স্বভাবের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এক বিশাল
দায়িত্ব। তাছাড়া পুরুষ থেকে পৃথক শুধু নারী অঙ্গনে নারীরা কাজ করবে, অর্থ
উপার্জন করবে তাতে ইসলাম বাঁধা প্রদান করেনি।
ইসলাম নারী-পুরুষের অধিকারকে সমানভাবে
সংরক্ষণ করেছে। যা কুরআন ও হাদীসে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। ইসলাম বলেছে, একজন
নারী চাই বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক তার রয়েছে ব্যক্তিগত অধিকার। সে তার
নিজস্ব সম্পদকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে। তার রয়েছে ব্যক্তিগত
মতামত, ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রকাশের অধিকার।
একজন মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিবাহের আগে অবশ্যই তার অনুমতি নিতে হবে। তার অনুমতি ব্যতিরেকে বিবাহ বৈধ হবে না। তবে অপ্রাপ্ত অবস্থায় মেয়ের অভিভাবক মেয়ের বিয়ে দিলে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর বিয়ে রাখা না রাখা তার ইচ্ছাধীন। ইচ্ছে করলে সে বিয়ে অটুট রাখতে পারে ইচ্ছে করলে তা ভঙ্গ ও করতে পারে।
একজন মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে বিবাহের আগে অবশ্যই তার অনুমতি নিতে হবে। তার অনুমতি ব্যতিরেকে বিবাহ বৈধ হবে না। তবে অপ্রাপ্ত অবস্থায় মেয়ের অভিভাবক মেয়ের বিয়ে দিলে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর বিয়ে রাখা না রাখা তার ইচ্ছাধীন। ইচ্ছে করলে সে বিয়ে অটুট রাখতে পারে ইচ্ছে করলে তা ভঙ্গ ও করতে পারে।
বিবাহের পর মিলমিশ না হলে স্বামীর সাথে
ঘর-সংসার করার বা না করাও তার ইচ্ছাধীন। সে ইচ্ছা করলে ‘খোলা তালাক’ নিয়ে
বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে।
বিবাহের সময় স্বামীর পক্ষ থেকে সে ‘মোহর’ পাওয়ার হকদার। এ মোহর সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে সর্বোত্তম আচরণ করার জন্য স্বামীকে নির্দেশ প্রদান করেছে ইসলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।” তিনি আরও বলেছেন, “তোমরা স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ কর।”
মা হিসেবে ইসলাম নারীর যে মর্যাদা দিয়েছে তা নজির বিহীন। ইসলাম বলেছে, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল,
বিবাহের সময় স্বামীর পক্ষ থেকে সে ‘মোহর’ পাওয়ার হকদার। এ মোহর সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে সর্বোত্তম আচরণ করার জন্য স্বামীকে নির্দেশ প্রদান করেছে ইসলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সেই উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।” তিনি আরও বলেছেন, “তোমরা স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ কর।”
মা হিসেবে ইসলাম নারীর যে মর্যাদা দিয়েছে তা নজির বিহীন। ইসলাম বলেছে, “মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল,
আমার সদাচরণ পাওয়ার সবচেয়ে বেশী হকদারকে?
তিনি বললেন: “তোমার মা।”
প্রশ্ন করা হল: তার পর কে?
তিনি বললেন: “তোমার মা।”
আবার প্রশ্ন করা হল: তারপর কে?
তিনি বললেন, “তোমার মা। এরপর তোমার পিতা।”
পিতার তুলনায় এখানে মাকে তিনগুণ অধিকার দেয়া হয়েছে।
ইসলামে উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে যে নীতিমালা প্রদান করেছে তা অত্যন্ত ন্যায় ও যুক্তি সংগত।
যে বিষয়টি নিয়ে তথাকথিত নারীবাদীরা বুঝে-না বুঝে চেঁচামেচি করছে তা হল, ইসলাম বলেছে, ‘উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে পুরুষ নারীর দ্বিগুণ সম্পদের অধিকারী হবে।’
দেখা যাক ইসলাম কি এ আইনের মাধ্যমে সত্যি কি নারীদের প্রতি অত্যাচার করেছে? দেখা যাবে, না, বরং এটি একটি অত্যন্ত যুক্তিসংগত আইন। তা কয়েকটি কারণে। যেমন,
ইসলামে উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে যে নীতিমালা প্রদান করেছে তা অত্যন্ত ন্যায় ও যুক্তি সংগত।
যে বিষয়টি নিয়ে তথাকথিত নারীবাদীরা বুঝে-না বুঝে চেঁচামেচি করছে তা হল, ইসলাম বলেছে, ‘উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে পুরুষ নারীর দ্বিগুণ সম্পদের অধিকারী হবে।’
দেখা যাক ইসলাম কি এ আইনের মাধ্যমে সত্যি কি নারীদের প্রতি অত্যাচার করেছে? দেখা যাবে, না, বরং এটি একটি অত্যন্ত যুক্তিসংগত আইন। তা কয়েকটি কারণে। যেমন,
- ১) ইসলামী আইনে মেয়ে একদিকে পিতা মৃত্যু বরণ করার পর ছেলের তুলনায় অর্ধেক সম্পদের অধিকারী হবে ।
- ২) অন্যদিকে স্বামী মৃত্যু বরণ করলে স্ত্রী তার পরিত্যক্ত সম্পদের অধিকারী হবে। (সন্তান থাকলে ৮ ভাগের ১ ভাগ আর সন্তান না থাকলে ৪ ভাগের ১ ভাগ)।
- ৩) বিয়ের ক্ষেত্রে স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে মোহরানা দেয়া অপরিহার্য করেছে ইসলাম। এ মোহরানা তার অধিকার।
- ৪) স্ত্রীর ভরণ-পোষণ সহ পরিবারের যাবতীয় খরচ পুরুষের জন্য আবশ্যক। মহিলাকে কোন খরচ দিতে বাধ্য করা হয় নি।
- ৫) তাছাড়া, স্বামীর বাড়িতে কোন সমস্যা হলে পিতা যদি মারা যাওয়ার পর সাধারণত বোন তার ভাইয়ের বাড়িতেই আশ্রয় নেয়। ভাইকে অনেক সময় বোনের সমস্যায় এগিয়ে আসতে হয় এবং ঝামেলা পোহাতে হয়। ইত্যাদি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে প্রতিভাত হবে, একজন নারীর তুলনায় পুরুষের সম্পদের প্রয়োজন অনেক বেশী। তাই ইসলাম সম্পদ বণ্টনের যে আইন প্রণয়ন করেছে তা অত্যন্ত বিবেক সঙ্গত এবং যুক্তি যোগ্য।
- ৬) সবচেয়ে বড় কথা হল, যে মহান আল্লাহ এই বিশাল ভূমণ্ডল-নভোমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং তা পরিচালনা করছেন তার দেয়া আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করা তো মুসলিম হিসেবে সকলের জন্য জরুরী। আর যে সকল বিধর্মী ইসলামকেই মানে না, আল্লাহ ও রাসূলকে বিশ্বাস করে না তাদের তো শুধু এ একটি আইনই নয় বরং গোটা ইসলামই তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।
মোটকথা, যে ব্যক্তি নিজেকে মুসলিম বলে দাবী
করতে চায় সে আল্লাহর আইনকে অবশ্যই ন্যায় সঙ্গত মনে করবে। এবং তাঁর দেয়া
আইন কানুনের কাছে মাথা নত করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর নির্দেশ মেনে
চলবে তাহলেই এ দুনিয়াতে পাবে শান্তি এবং পরকালে পাবে জাহান্নাম থেকে
মুক্তি। আল্লাহ যেন আমাদেরকে সে পথেরই অনুসারী বানান। আমীন॥
৩য়ঃ ইসলাম তলোয়ারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর মুসলিমগণ ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মকে সহ্য করে না!
উত্তর: বিভিন্ন
সামাজিক গ্রন্থে যে দৃশ্যটি দেখানো হয় তা হল, একজন ঘোড় সোওয়ার। যার এক
হাতে রয়েছে উন্মুক্ত তলোয়ার আরেক হাতে কুরআন। সে জোর করে মানুষকে ইসলামে
দীক্ষিত করার জন্য যুদ্ধে ছুটে যাচ্ছে। মূলত: এ দৃশ্যটি ইসলামের প্রকৃত রূপ
নয়। ইসলাম সম্পর্কে খারাপ ধারণা সৃষ্টির জন্য এ জাতীয় একটি কল্পিত চিত্র
তুলে ধরা হয়েছে। বরং ইসলাম কখনো অন্য কোন ধর্মাবলম্বীকে জোর করে
ধর্মান্তরিত করতে বলেনি। বরং সকল ধর্মকে সম্মান করতে শিক্ষা দিয়েছে। সকল
ধর্মাবলম্বীদেরকে প্রদান করেছে ধর্ম গ্রহণের স্বাধীনতা। ইরশাদ হচ্ছে: “
দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ
হতে বহিষ্কার করেনি তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ
তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়-পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা
মুমতাহিনাঃ ৮)
ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কুরআনের সুস্পষ্ট বক্তব্য হল:
“ দ্বীনের ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তী করা যাবে না। হেদায়েত এবং গোমরাহি স্পষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি ‘তাগুত’ কে অস্বীকার করল সে এমন ‘মজবুত হাতল’ ধরল যা কখনো বিচ্ছিন্ন হবার নয়।” (সূরা বাকারাঃ ২৫৬)
ইসলামের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল, ইসলামী সমাজে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করা। যার প্রকিষ্ট উদাহরণ হল, ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলোকে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছিল এবং আজ পর্যন্ত রয়েছে। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস পূর্ণ।
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) ৬৩৪ হিজরিতে বিজয়ী বেশে যখন বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করলেন তখন তিনি সেখানে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষকে ধর্মীয় স্বাধীনতা দান করেছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। আরও ঘোষণা করলেন, প্রতিটি মানুষের জান-মাল নিরাপদ এবং তাদের উপাসনালয়গুলোকে রক্ষা করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অনুরূপভাবে ইসলামী আইনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করা অনুমোদিত। যেখানে সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী পারষ্পারিক বিষয়াদির নিষ্পত্তি করা হবে।
মোটকথা, ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের জান-মালকে পবিত্র আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়। চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক। ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই। কুরআন বলে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই; সকল মানুষ সমান। ইরশাদ হচ্ছে:
“হে মানুষগণ, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মাঝে আল্লাহর নিকট সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহ ভীরু।” (সূরা হুজুরাতঃ ৪৯)
ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কুরআনের সুস্পষ্ট বক্তব্য হল:
“ দ্বীনের ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তী করা যাবে না। হেদায়েত এবং গোমরাহি স্পষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি ‘তাগুত’ কে অস্বীকার করল সে এমন ‘মজবুত হাতল’ ধরল যা কখনো বিচ্ছিন্ন হবার নয়।” (সূরা বাকারাঃ ২৫৬)
ইসলামের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল, ইসলামী সমাজে বসবাসরত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করা। যার প্রকিষ্ট উদাহরণ হল, ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন মুসলিম দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলোকে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়েছিল এবং আজ পর্যন্ত রয়েছে। ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস পূর্ণ।
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) ৬৩৪ হিজরিতে বিজয়ী বেশে যখন বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করলেন তখন তিনি সেখানে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষকে ধর্মীয় স্বাধীনতা দান করেছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। আরও ঘোষণা করলেন, প্রতিটি মানুষের জান-মাল নিরাপদ এবং তাদের উপাসনালয়গুলোকে রক্ষা করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অনুরূপভাবে ইসলামী আইনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করা অনুমোদিত। যেখানে সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী পারষ্পারিক বিষয়াদির নিষ্পত্তি করা হবে।
মোটকথা, ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের জান-মালকে পবিত্র আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়। চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক। ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই। কুরআন বলে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই; সকল মানুষ সমান। ইরশাদ হচ্ছে:
“হে মানুষগণ, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মাঝে আল্লাহর নিকট সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহ ভীরু।” (সূরা হুজুরাতঃ ৪৯)
৪র্থঃ ইসলাম শুধু আরবদের জন্য!
উত্তর: কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী মানুষকে বলতে শোনা যায়, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু আরবের অধিবাসী ছিলেন তাই ইসলাম শুধু আরবদের জন্য। তাই তারা ‘আরবের ইসলাম’, ‘মুহাম্মাদের ইসলাম’ ইত্যাদি কথা বলে ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিন্তু এ ধারণা কি ঠিক? উত্তর হল, না। অবশ্যই ঠিক নয়। কারণ, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমগ্র বিশ্ববাসীর নবী। সমগ্র মানবতার নবী। কুরআনে বলা হয়েছে: “আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবতার জন্য সতর্ককারী এবং সুসংবাদ দানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।” (সূরা সাবাঃ ২৮)
অতএব, ‘ইসলাম শুধু আরবদের জন্য সীমাবদ্ধ’ এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়।
এর প্রমাণ আমরা বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের পরিসংখ্যান থেকে পেতে পারি। যেমন, সারা বিশ্বে বর্তমান মুসলিম জন সংখ্যা ১.৪ বিলিয়ন (১৪০ কোটি)। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি চার জনে ১ জন মুসলমান। ইসলাম বর্তমানে উত্তর আমেরিকা সহ বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশী ক্রমবর্ধমান ধর্ম। ইসলাম হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা জাতি-গোষ্ঠী, বর্ণ-গোত্র ও বিভিন্ন সংস্কৃতির বিরাট জনগোষ্ঠীর ধর্ম জীবন ব্যবস্থা। ফিলিপাইন থেকে নাইজেরিয়া পর্যন্ত মুসলমানদেরকে একত্রিত রেখেছে এক অভিন্ন বিশ্বাস এবং চেতনা। আরব বিশ্বে বসবাস করে মাত্র ১৮% মুসলমান। সর্ব বৃহৎ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হল ইন্দোনেশিয়া। মুসলমানদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০% মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করে। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে বাস করে প্রায় ২০%। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৭%। আরব বিশ্বে ১৮%। চিন এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ১০%। তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের নন আরব দেশগুলোতে ১০%। এ ছাড়াও পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তে সংখ্যালঘু হিসেবে মুসলিমদের বসবাস রয়েছে। তন্মধ্যে ল্যাটিন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি। তবে রাশিয়া এবং রাশিয়া থেকে বিভক্ত প্রজাতন্ত্রগুলো, ভারত এবং মধ্য আফ্রিকায় বিরাট অংকে মুসলমানদের অবস্থান। আর শুধু আমেরিকাতেই রয়েছে প্রায় ৮ মিলিয়ন মুসলমান।
উত্তর: কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী মানুষকে বলতে শোনা যায়, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু আরবের অধিবাসী ছিলেন তাই ইসলাম শুধু আরবদের জন্য। তাই তারা ‘আরবের ইসলাম’, ‘মুহাম্মাদের ইসলাম’ ইত্যাদি কথা বলে ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিন্তু এ ধারণা কি ঠিক? উত্তর হল, না। অবশ্যই ঠিক নয়। কারণ, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমগ্র বিশ্ববাসীর নবী। সমগ্র মানবতার নবী। কুরআনে বলা হয়েছে: “আমি তো তোমাকে সমগ্র মানবতার জন্য সতর্ককারী এবং সুসংবাদ দানকারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।” (সূরা সাবাঃ ২৮)
অতএব, ‘ইসলাম শুধু আরবদের জন্য সীমাবদ্ধ’ এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়।
এর প্রমাণ আমরা বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের পরিসংখ্যান থেকে পেতে পারি। যেমন, সারা বিশ্বে বর্তমান মুসলিম জন সংখ্যা ১.৪ বিলিয়ন (১৪০ কোটি)। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি চার জনে ১ জন মুসলমান। ইসলাম বর্তমানে উত্তর আমেরিকা সহ বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশী ক্রমবর্ধমান ধর্ম। ইসলাম হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা জাতি-গোষ্ঠী, বর্ণ-গোত্র ও বিভিন্ন সংস্কৃতির বিরাট জনগোষ্ঠীর ধর্ম জীবন ব্যবস্থা। ফিলিপাইন থেকে নাইজেরিয়া পর্যন্ত মুসলমানদেরকে একত্রিত রেখেছে এক অভিন্ন বিশ্বাস এবং চেতনা। আরব বিশ্বে বসবাস করে মাত্র ১৮% মুসলমান। সর্ব বৃহৎ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হল ইন্দোনেশিয়া। মুসলমানদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০% মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে বাস করে। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে বাস করে প্রায় ২০%। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৭%। আরব বিশ্বে ১৮%। চিন এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ১০%। তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যের নন আরব দেশগুলোতে ১০%। এ ছাড়াও পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তে সংখ্যালঘু হিসেবে মুসলিমদের বসবাস রয়েছে। তন্মধ্যে ল্যাটিন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি। তবে রাশিয়া এবং রাশিয়া থেকে বিভক্ত প্রজাতন্ত্রগুলো, ভারত এবং মধ্য আফ্রিকায় বিরাট অংকে মুসলমানদের অবস্থান। আর শুধু আমেরিকাতেই রয়েছে প্রায় ৮ মিলিয়ন মুসলমান।
৫মঃ ইসলাম চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়ে নারীদেরকে অপমানিত করেছে!
উত্তর:
ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থার নাম যা সকল যুগের জন্য সকল স্থানের জন্য
প্রযোজ্য। বিভিন্ন সমাজের বিভিন্ন প্রকৃতির মানুষের সাথে ইসলাম
সামঞ্জস্যপূর্ণ। পরিস্থিতির কারণে মানুষ ২য় বিবাহ করতে বাধ্য হতে পারে। সে
ক্ষেত্রে অবশ্যই তার অধিকার সংরক্ষণ করা আবশ্যক।
তাই ইসলাম ২য় বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে শর্তারোপ করা হয়েছে যে, সকল স্ত্রীর সাথে ন্যায়পরায়ণতা সুলভ আচরণ করতে হবে। কোন মহিলাকে এ বিয়েতে বাধ্য করা যাবে না এবং এ বিয়েতে ২য় স্ত্রী শর্তারোপ করতে পারে।
ইসলামে একাধিক বিয়ে করা আবশ্যক করা হয়নি, উত্তমও বলা হয়নি। বরং তা শুধু বৈধ বলা হয়েছে।
একজন ব্যক্তি চারটি বিয়ে করতে পারে তবে শর্ত হচ্ছে, তাকে শরীয়ত নির্ধারিত অলঙ্ঘনীয় শর্তাবলী অবশ্যই পূরণ করতে সক্ষম হতে হবে। সেগুলো হল, ন্যায়-পরায়নতা বজায় রাখা, প্রত্যেক স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হওয়া, ভরণ-পোষণ সহ জীবন-যাপনের উপকরণের ব্যবস্থা করা।
মোটকথা, শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ইসলাম একাধিক বিবাহের অনুমতি দিয়েছে। আর তাও শর্ত সাপেক্ষে। সমাজের বিভিন্ন প্রকৃতির বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের চাহিদা এবং বাস্তব প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে ইসলাম এ অনুমতি প্রদান করেছে।
সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হচ্ছে, যারা ইসলামের এ বিধানকে অনৈতিক এবং এতে নারীদের অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করে তারাই যখন নিজের স্ত্রী বাদ দিয়ে অন্য মহিলাকে ‘র্গাল ফ্রেন্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে তখন তার এটাকে অনৈতিক বলতে নারাজ! তারাই নারীদেরক পণ্যের মত পুরুষের উপভোগের বস্তুতে পরিণত করেছে। নারীর প্রতি এর থেকে চরম অপমান আর কী হতে পারে? প্রকৃতপক্ষে এই আইনের মাধ্যমে ইসলাম তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে লাঞ্ছনা ও অপমানের হাত থেকে উদ্ধার করে বৈধ পন্থায় সম্মানের সাথে ঘরে স্থান দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
তাই পরিশেষে বলব, একাধিক বিবাহের বৈধতা দিয়ে ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত প্রয়োজন, প্রকৃতিগত চাহিদা এবং নানা সামাজিক সমস্যা সমাধানের পথকে উন্মুক্ত করেছে। নারীকে পরপুরুষের ভোগ্য বস্তু থেকে উদ্ধার করে তাকে মর্যাদা এবং সম্মানের আসনে আসীন করেছে।
তবে প্রয়োজন, ইসলামী আইনের ব্যাপারে মুসলমানদের গণসচেতনতা এবং সঠিকভাবে তা ব্যবহার করা। তাহলেই যে উদ্দেশ্যে ইসলাম এ আইনকে মানবতার কল্যাণে দান করেছে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমীন॥
তাই ইসলাম ২য় বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে শর্তারোপ করা হয়েছে যে, সকল স্ত্রীর সাথে ন্যায়পরায়ণতা সুলভ আচরণ করতে হবে। কোন মহিলাকে এ বিয়েতে বাধ্য করা যাবে না এবং এ বিয়েতে ২য় স্ত্রী শর্তারোপ করতে পারে।
ইসলামে একাধিক বিয়ে করা আবশ্যক করা হয়নি, উত্তমও বলা হয়নি। বরং তা শুধু বৈধ বলা হয়েছে।
একজন ব্যক্তি চারটি বিয়ে করতে পারে তবে শর্ত হচ্ছে, তাকে শরীয়ত নির্ধারিত অলঙ্ঘনীয় শর্তাবলী অবশ্যই পূরণ করতে সক্ষম হতে হবে। সেগুলো হল, ন্যায়-পরায়নতা বজায় রাখা, প্রত্যেক স্ত্রীর জৈবিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হওয়া, ভরণ-পোষণ সহ জীবন-যাপনের উপকরণের ব্যবস্থা করা।
মোটকথা, শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ইসলাম একাধিক বিবাহের অনুমতি দিয়েছে। আর তাও শর্ত সাপেক্ষে। সমাজের বিভিন্ন প্রকৃতির বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের চাহিদা এবং বাস্তব প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে ইসলাম এ অনুমতি প্রদান করেছে।
সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হচ্ছে, যারা ইসলামের এ বিধানকে অনৈতিক এবং এতে নারীদের অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ উত্থাপন করে তারাই যখন নিজের স্ত্রী বাদ দিয়ে অন্য মহিলাকে ‘র্গাল ফ্রেন্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে তখন তার এটাকে অনৈতিক বলতে নারাজ! তারাই নারীদেরক পণ্যের মত পুরুষের উপভোগের বস্তুতে পরিণত করেছে। নারীর প্রতি এর থেকে চরম অপমান আর কী হতে পারে? প্রকৃতপক্ষে এই আইনের মাধ্যমে ইসলাম তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে লাঞ্ছনা ও অপমানের হাত থেকে উদ্ধার করে বৈধ পন্থায় সম্মানের সাথে ঘরে স্থান দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
তাই পরিশেষে বলব, একাধিক বিবাহের বৈধতা দিয়ে ইসলাম মানুষের ব্যক্তিগত প্রয়োজন, প্রকৃতিগত চাহিদা এবং নানা সামাজিক সমস্যা সমাধানের পথকে উন্মুক্ত করেছে। নারীকে পরপুরুষের ভোগ্য বস্তু থেকে উদ্ধার করে তাকে মর্যাদা এবং সম্মানের আসনে আসীন করেছে।
তবে প্রয়োজন, ইসলামী আইনের ব্যাপারে মুসলমানদের গণসচেতনতা এবং সঠিকভাবে তা ব্যবহার করা। তাহলেই যে উদ্দেশ্যে ইসলাম এ আইনকে মানবতার কল্যাণে দান করেছে সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমীন॥
৬ষ্ঠঃ মুসলমানেরা অশিক্ষিত এবং পশ্চাৎপদ!
উত্তর: ইসলাম এত দ্রুত বিকাশ লাভ করার অন্যতম কারণ হল, ইসলাম উদারতা, সহজ-সরল রীতি ও আদর্শের দিকে আহবান জানায়। ইসলাম মানুষকে তার বিবেক ও জ্ঞানকে কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেছে। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি প্রথম বাণী হল, “পড়”। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয।” এই নির্দেশকে পালন করতে গিয়ে অতি অল্প সময়ে বিরাট এক সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল। মুসলমানগণ দিকে দিকে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিল। প্রতিষ্ঠিত হল বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন আবিস্কার, চিকিৎসা, অংক, ফিজিক্স, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল, নির্মাণ শিল্প, সাহিত্য ও ইতিহাসে মুসলমানগণ পৃথিবীর নেতৃত্ব প্রদান করেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিভিন্ন শাখায় তাদের রচিত গ্রন্থগুলো শত শত বছর ধরে ইউরোপের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-গবেষণার মূল উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। মধ্যযুগে মুসলিম মনিষীদের আবিষ্কৃত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইউরোপে প্রবেশ করে। তম্মধ্যে জ্যামিতি, আরবী সংখ্যা, শূন্যের ধারণা (যাকে অংকের প্রাণ বলা হয়) ইত্যাদি। অনুরূপভাবে আধুনিক আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও মুসলমানগণ ঐতিহাসিক অবদান রেখেছে যার হাত ধরে আজকের ইউরোপ নব নব আবিস্কার আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষ সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। সে সব আবিষ্কারের অন্যতম হল, স্টার ল্যাব, উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্র, নৌপথের মানচিত্র ইত্যাদি।
অনুবাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
abuafnan12@gmail.com