বৈধ ও অবৈধ বিবাহ !
বিবাহ-বন্ধনে
আবদ্ধ হয়ে নারী-পুরুষ বৈধভাবে যৌনসুখ উপভোগ করতে পারে। কিন্তু কোন্ পুরুষ
নারীর জন্য বৈধ এবং কোন্ নারী পুরুষের জন্য অবৈধ বা অগম্যা তার বিস্তারিত
বিধান রয়েছে ইসলামে।[1]
অবৈধ নারীকে অথবা অবৈধ নিয়মে বিবাহ করে সংসার করলে ব্যভিচার করা হয়।
এমন কতকগুলি কারণ রয়েছে যার কারণে নারী-পুরুষের আপোসে কোন সময়ে বিবাহ বৈধ নয়।
প্রথম কারণ, রক্তের সম্পর্কঃ
নারী-পুরুষের মাঝে রক্তের সম্পর্ক থাকলে যেহেতু এক অপরের অংশ গণ্য হয় তাই তাদের আপোসে বিবাহ হারাম। এরা হল;
১- পুরুষের পক্ষে; তার মা, দাদী, নানী এবং নারীর পক্ষে; তার বাপ, দাদো ও নানা।
২- পুরুষের পক্ষে; তার কন্যা (বেটী) এবং নাতিন ও পুতিন, আর নারীর পক্ষে; তার পুত্র (ছেলে) এবং নাতি ও পোতা।
৩- পুরুষের পক্ষে; তার
(সহোদরা, বৈপিত্রেয়ী ও বৈমাত্রেয়ী) বোন, বুনঝি, ভাইঝি ও তাদের মেয়ে, ভাইপো ও
বুনপোর মেয়ে। আর নারীর পক্ষে; তার (সহোদর, বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয়) ভাই,
ভাইপো, বুনপো ও তাদের ছেলে এবং ভাইঝি ও বুনঝির ছেলে।
৪- পুরুষের পক্ষে; তার
ফুফু (বাপের সহোদরা, বৈপিত্রেয়ী বা বৈমাত্রেয়ী বোন) এবং নারীর পক্ষে; তার
চাচা (বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয় ভাই)।
৫- পুরুষের পক্ষে; তার
খালা (মায়ের সহোদরা, বৈপিত্রেয়ী বা বৈমাত্রেয়ী বোন) এবং নারীর পক্ষে; তার
মামা (মায়ের সহোদর, বৈপিত্রেয় বা বৈমাত্রেয় ভাই)।
প্রকাশ যে, সৎ মায়ের বোন (সৎ খালা) পুরুষের জন্য এবং সৎ মায়ের ভাই (সৎ মামা) নারীর জন্য হারাম বা মাহরাম নয়। এদের আপোসে বিবাহ বৈধ।
৬- পুরুষের পক্ষে; তার বাপ-মায়ের খালা বা ফুফু এবং নারীর পক্ষে তার বাপ-মায়ের চাচা বা মামা অবৈধ।[2]
প্রকাশ যে, পুরুষের জন্য তার খালাতো,
ফুফাতো, মামাতো, চাচাতো বোন ও (তাদের মেয়ে) বুনঝি বৈধ ও গম্য। অনুরূপ নারীর
জন্য তার খালাতো, ফুফাতো, মামাতো, চাচাতো ভাই ও ভাইপো বৈধ ও গম্য।
আবার পুরুষের পক্ষে; তার (মামার মৃত্যু বা
তালাকের পর) মামী, (চাচার মৃত্যু বা তালাকের পর) চাচী এবং নারীর পক্ষে তার
(খালার মৃত্যু বা তালাকের পর) খালু (ফুফুর মৃত্যু বা তালাকের পর) ফোফা
গম্য। পূর্বোক্ত গম্য-গম্যার মাঝে বিবাহ বৈধ ও পর্দা ওয়াজেব।
রক্তের সম্পর্ক যদি কৃত্রিম হয়, তবে বিবাহ
হারাম নয়। সুতরাং (রোগিনীকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে তাকে বিবাহ করা রক্তদাতা
পুরুষের জন্য অবৈধ নয়। অনুরূপ স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকে রক্ত
দান করলে বিবাহের কোন ক্ষতি হয় না।[3]
দ্বিতীয় কারণঃ বৈবাহিক সম্পর্ক :
১- পুরুষের জন্য (স্ত্রী
ও শবশুরের মৃত্যু বা তালাকের পরেও) শাশুড়ী, নানশাশ ও দাদশাশ। (স্ত্রীর
সাথে মিলন না হলেও) চিরতরে হারাম। অনুরূপ নারীর পক্ষে তার শবশুর, দাদোশবশুর
ও নানাশবশুর অগম্য।
২- রমিতা (যার সাথে
সঙ্গম হয়েছে এমন) স্ত্রীর (অপর স্বামীর) কন্যা ও তার বংশজাত কন্যা ও পুতিন
বা নাতিন। (স্ত্রীর সাথে মিলন হলে তবে। নচেৎ মিলনের পূর্বে মারা গেলে বা
তালাক দিলে তার মেয়ে অবৈধ বা অগম্যা নয়।) তদনুরূপ নারীর জন্য তার স্বামীর
(অপর স্ত্রীর) ছেলে ও তার বংশজাত ছেলেও অবৈধ।
৩- পুরুষের জন্য তার সৎমা (বাপ তার সাথে মিলন করুক অথবা না করুক। বাপ মারা গেলে বা তালাক দিলেও) হারাম। অনুরূপ সৎ দাদী এবং নানীও।
নারীর জন্য তার সৎবাপ (মায়ের সাথে তার মিলন হলে) অগম্য। অনুরূপ সৎ দাদো এবং নানাও হারাম।
৪- পুরুষের জন্য তার
নিজের পুত্রবধূ (আপন ঔরসজাত ছেলের স্ত্রী) অনুরূপ পুতবউ ও নাতবউ এবং
নারীর জন্য তার নিজের গর্ভজাত কন্যার স্বামী (জামাই) অনুরূপ
নাতজামাই ও পুতজামাই অবৈধ।
সুতরাং পুরুষের জন্য তার সৎশাশুড়ী,
স্ত্রীর দুধমা, (বিতর্কিত) এবং পালয়িত্রী মা হারাম নয়। অনুরূপ নারীর জন্য
তার সৎশ্বশুর, স্বামীর দুধবাপ (বিতর্কিত) এবং পালয়িতা বাপ অবৈধ নয়।
স্বামীর এক স্ত্রীর ছেলে-মেয়ের সাথে দ্বিতীয়া স্ত্রীর পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত ছেলে-মেয়ের বিবাহ বৈধ।[4]
প্রকাশ যে, বৈবাহিক সূত্রে মিলনের ফলে
যাদের সাথে বিবাহ অবৈধ, ব্যভিচার সূত্রে মিলনের ফলে তাদের সাথে বিবাহ অবৈধ
কি না--তা নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। অর্থাৎ যেমন বিবাহের পূর্বে কোন নারীর
সাথে ব্যভিচার করলে তার মা বা মেয়েকে বিবাহ করা হারাম হবে কি না এবং
বিবাহের পরে ব্যভিচার করলে ঐ নারীর মা বা মেয়ে (যে এই পুরুষের স্ত্রী) তার
পক্ষে হারাম হয়ে যাবে কি না, শবশুর-বউ-এ ব্যভিচার করলে ছেলের উপর তার ঐ
স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে কি না, ব্যভিচারজাত কন্যাকে বিবাহ করা যাবে কি না,
-এসব বিষয়ে বড্ড মতভেদ রয়েছে। অবশ্য কোন পক্ষের নিকটেই সহীহ কোন দলীল নেই।
যদিও অনুমান, অভিরুচি ও বিবেকমতে হারাম সাব্যস্ত হওয়াই উচিৎ।[5]
পরন্তু বহু উলামা বলেন, কারো সাথে ব্যভিচার করলেই সে স্ত্রী এবং তার মা শাশুড়ী হয়ে যায় না। সুতরাং এতে ব্যভিচারের কোন প্রভাব নেই।[6]
নৈতিক শৈথিল্যের এমন অশ্লীলতা, পশুত্ব ও সমস্যা থেকে আল্লাহ মুসলিম সমাজকে মুক্ত ও পবিত্র রাখুন। আমীন।
পক্ষান্তরে বৈধরূপে স্ত্রী মনে করে সহবাস
করলে সম্পর্কে প্রভাব পড়ে। যেমন; বিবাহ-বন্ধন শুদ্ধ না হয়েই সহবাস করলে
অথবা সহবাস করার পর জানা গেল যে, ঐ স্ত্রীর সাথে স্বামীও কোন দুধ-মায়ের
দুধ পান করেছে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী হারাম সাব্যস্ত হবে এবং তার মা ও মেয়েকে
বিবাহ করা ঐ পুরুষের জন্য হারাম হবে।[7]
তৃতীয় কারণঃ দুধের সম্পর্ক :
যদি কোন শিশু (ছেলে অথবা মেয়ে) কোন ভিন্ন
মহিলার দুধ পান করে থাকে, তবে সে তার দুধমা। অবশ্য ‘দুধমা’ সাব্যস্তের জন্য
কয়েকটি শর্ত রয়েছে;
১। ঐ দুধপান শিশুর ২বছর বয়সের ভিতরে হতে হবে। দু’বছর পার হয়ে দুধপান করলে ‘মা’ সাব্যস্ত হবে না।[8]
২। তৃপ্তিসহকারে পাঁচ অথবা ততোধিক বার
দুধপান করবে।[9] স্তনবৃন্ত চুষে অথবা মাইপোষ, চামচ কিংবা নলের সাহায্যে দুধ
পেটে গেলে তবেই ‘মা’ সাব্যস্ত হবে।[10]
‘দুধমা’ সাব্যস্ত হলে তার সাথে এবং রক্ত-সম্পর্কীয় অন্যান্য আত্মীয়র ন্যায় ঐ মায়ের বংশের সকলের সাথে বিবাহ অবৈধ হবে।[11]
সুতরাং রীতিমত দুধপানকারী পুরুষ তার
দুধ-মা, দুধ-বোন, দুধ-খালা, দুধ-ভাইঝি, দুধ-বোনঝি প্রভৃতিকে চিরদিনের জন্য
বিবাহ করতে পারবে না। তদনুরূপ দুধপানকারী মহিলার তার দুধ-বাপ, দুধ-ভাই,
দুধ-চাচা, দুধ-মামা, দুধ-ভাইপো, দুধ-বুনপো প্রভৃতির সাথে বিবাহ বৈধ নয়।
অবশ্য যে দুধ পান করেছে তার অন্য ভাই-বোনেরা ঐ মায়ের পক্ষে এবং তার ছেলেমেয়ে বা অন্যান্য আত্মীয়র পক্ষে হারাম নয়।[12]
কোন পুরুষ যদি (শিশুবেলায়) তার দাদীর দুধ
রীতিমত পান করে থাকে, তবে তার পক্ষে রক্ত-সম্পর্কীয় মহিলা ছাড়াও চাচাতো,
ফুফাতো এবং নানীর দুধ পান করে থাকলে মামাতো খালাতো বোনও হারাম। কারণ, এই
বোনেরা তখন দুধ-ভাইঝি ও দুধ-বোনঝিতে পরিগণিত হয়ে যায়।[13]
উল্লেখ্য যে, শৃঙ্গারের সময় স্ত্রীর দুধ মুখে গেলে স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ-বন্ধনে কোন ক্ষতি হয় না। কারণ, এটা রীতিমত দুধ পান নয়।
চতুর্থ কারণঃ লিআন :
স্বামীর সংসারে থেকে যদি স্ত্রী ব্যভিচার
ক’রে তা অস্বীকার করে এবং এই ব্যভিচারের উপর যদি স্বামী ৪ জন সাক্ষী
কাজীর সামনে উপস্থিত না করতে পারে, তবে কাজী প্রত্যেককে কসম করাবেন; প্রথমে
স্বামী বলবে, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি যে, আমি আমার স্ত্রী অমুককে যে
ব্যভিচারের অপবাদ দিয়েছি তাতে সত্যবাদী।’
এইরূপ চারবার বলার পর পঞ্চমবারে তাকে
থামিয়ে কাজী বলবেন, ‘আল্লাহকে ভয় কর, এই (শেষ কসম)টাই আল্লাহর আযাব
অনিবার্যকারী। (সত্য বল। কারণ,) আখেরাতের আযাব হতে দুনিয়ার আযাব (মিথ্যা
অপবাদ দেওয়ার শাস্তি) সহজতর।’
এরপরেও যদি সে বিরত না হয়, তবে পঞ্চমবারে
বলবে, ‘আমি আমার স্ত্রী অমুককে যে ব্যভিচারের অপবাদ দিয়েছি, তাতে যদি আমি
মিথ্যাবাদী হই তাহলে আমার উপর আল্লাহর অভিশাপ হোক!’
অতঃপর স্ত্রী অনুরূপ বলবে, ‘আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি যে, আমাকে আমার স্বামী অমুক যে ব্যভিচারের অপবাদ দিয়েছে তাতে ও মিথ্যাবাদী।’
এইরূপ চারবার বলার পর পঞ্চমবারে থামিয়ে
কাজী তাকে বলবেন, আল্লাহকে ভয় কর, এটাই আল্লাহর আযাব অনিবার্যকারী, (সত্য
বল। কারণ,) আখেরাতের আযাবের চেয়ে দুনিয়ার আযাব (ব্যভিচারের শাস্তি) সহজতর।’
এরপরেও যদি বিরত না হয়, তাহলে পঞ্চমবারে
সে বলবে, ‘আমাকে আমার স্বামী অমুক যে ব্যভিচারের অপবাদ দিয়েছে, তাতে যদি ও
সত্যবাদী হয়, তাহলে আমার উপর আল্লাহর গযব হোক!’
এতদূর করার পর কাজী স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ করে দেবেন। আর এতে কারো শাস্তি হবে না।[14]
এই ধরনের লা’নত ও অভিশাপের বিচ্ছেদকে
‘লিআন’ বলে। এই বিচ্ছেদ হওয়ার পর ঐ স্ত্রী ঐ স্বামীর জন্য চিরতরে হারাম
হয়ে যায়। কোন প্রকারে আর পুনর্বিবাহ বৈধ নয়।[15]
প্রকাশ যে, রক্ত, দুধ ও বৈবাহিক সম্পর্কের
ফলে যাদের আপোসে চিরতরে বিবাহ অবৈধ কেবল তাদের সামনেই মহিলার পর্দা নেই।
বাকী বন্ধুত্ব, পাতানো, বা পীর ধরার (?) ফলে কেউ হারাম হয় না। সুতরাং
বন্ধুর বোন, পাতানো বোন এবং পীর-বোনের (?) সাথেও বিবাহ হালাল এবং পর্দা
ওয়াজেব।
আরো এমন কতকগুলি কারণ রয়েছে যাতে
নারী-পুরুষের বিবাহ চিরতরে হারাম নয়; তবে সাময়িকভাবে হারাম। সেই নির্দিষ্ট
সময় অতিবাহিত হলে বিবাহ বৈধ। এমন কারণও কয়েকটিঃ-
প্রথম কারণঃ কুফর ও শির্ক।
কোন মুসলিম (নারী-পুরুষ) কোন কাফের বা
মুশরিক (নারী-পুরুষ)কে বিবাহ করতে পারে না। অবশ্য ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হলে
তার সাথে বিবাহ বৈধ। এ ব্যপারে মহান আল্লাহ বলেন,
﴿وَلاَ تَنْكِحُوا الْمُشْرِكَاتِ حَتَّى يُؤْمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤْمِنَةٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكَةٍ وَلَوْ أَعْجَبَتْكُمْ وَلاَ تُنْكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُوا وَلَعَبْدٌ مُؤْمِنٌ خَيْرٌ مِنْ مُشْرِكٍ وَلَوْ أَعْجَبَكُمْ أُولَئِكَ يَدْعُونَ إِلَى النَّارِ وَاللهُ يَدْعُو إِلَى الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ﴾
‘‘আর অংশীবাদী রমণী যে পর্যন্ত মুসলমান না
হয়, তোমরা তাকে বিবাহ করো না। মুশরিক নারী তোমাদের পছন্দ হলেও নিশ্চয়ই
মুসলিম ক্রীতদাসী তার চেয়ে উত্তম। আর মুসলমান না হওয়া পর্যন্ত অংশীবাদী
পুরুষের সাথে কন্যার বিবাহ দিও না। অংশীবাদী পুরুষ তোমাদের পছন্দ হলেও
মুসলিম ক্রীতদাস তার চেয়ে উত্তম। কারণ, ওরা তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে
আহবান করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে নিজ অনুগ্রহ ও ক্ষমার দিকে আহবান
করেন।’’[16]
{لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ} (10) سورة الممتحنة
‘‘মু’মিন নারীগণ কাফের পুরুষদের জন্য এবং কাফের পুরুষরা মু’মিন নারীদের জন্য বৈধ নয়।’’[17]
শিয়া, কাদেয়ানী, কবুরী, মাযারী এবং
মতান্তরে বেনামাযী প্রভৃতি পাত্র-পাত্রীর সাথে কোন (তওহীদবাদী) মুসলিম
পাত্র-পাত্রীর বিবাহ বৈধ নয়।[18]
পক্ষান্তরে আসমানী কিতাবধারী ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান সচ্চরিত্র নারীকে (ইসলাম গ্রহণ না করলেও) মুসলিম পুরুষ বিবাহ করতে পারে।[19]
তবে এর চেয়ে মুসলিম নারীই যে উত্তম তাতে
কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন মুসলিম নারীর সাথে কোন কিতাবধারী পুরুষের বিবাহ
বৈধ নয়; যতক্ষণ না সে ইসলাম গ্রহণ করেছে। যেহেতু ইসলাম চির উন্নত, অবনত হয়
না। তাছাড়া মুসলিমরা সকল নবীর প্রতি ঈমান রাখে, কিন্তু কিতাবধারীরা
ইসলামের সর্বশেষ নবী (সাঃ)-এর প্রতি ঈমান রাখে না।[20]
প্রকাশ যে, মুসলিম নামধারী মুশরিকরা (যারা
আল্লাহ ছাড়া পীর, কবর বা মাযারের নিকট প্রয়োজনাদি ভিক্ষা করে, তারা) আহলে
কিতাবের মত নয়। তাদের সাথে বিবাহ-শাদী বৈধ নয়।[21]
কোন পুরুষ ইসলাম গ্রহণ করলেও চট্ করে তার
সাথে মুসলিম নারীর বিবাহ দেওয়া উচিৎ নয়। মুসলিম হয়ে নামায-রোযা ও অন্যান্য
ধর্মীয় বিষয় পালন করছে কি না, তা দেখা উচিৎ। নচেৎ এমনও হতে পারে (বরং
অধিকাংশ এমনটাই হয়) যে, মুসলিম যুবতীর রূপ ও প্রেমে মুগ্ধ হয়ে কেবল তাকেই
পাবার উদ্দেশ্যে নামে মাত্র মুসলিম হয়ে ইসলামে ফাঁকি দেয়।[22]
কোন মুসলিম পুরুষ অমুসলিম নারীকে বিবাহ
করতে চাইলে তাকে প্রকৃত মুসলিম করে ইদ্দত দেখে তারপর বিবাহ করবে।
নামায-রোযা প্রভৃতিতে যত্নবান না হলে বিবাহ বৈধ হবে না।[23]
দ্বিতীয় কারণঃ- অপরের স্বামীত্বঃ
অপরের বিবাহিতা স্ত্রী তার স্বামীত্বে
থাকতে আর অন্য পুরুষের জন্য বৈধ নয়। সে মারা গিয়ে অথবা তালাক দিয়ে ইদ্দতের
যথা সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ঐ রমণীকে বিবাহ করা হারাম। সুতরাং ঐ
মহিলা আসলে গম্যা, কিন্তু অপরের স্বামীত্বে থাকার জন্য সাময়িকভাবে অন্যের
পক্ষে অবৈধ। এমন বিবাহিত সধবাকে কেউ বিয়ে করলেও বিবাহ-বন্ধনই হয় না। সে
প্রথম স্বামীরই অধিকারভুক্ত থাকে, আর দ্বিতীয় স্বামী ব্যভিচারী হয়।
পরন্তু একটি মহিলা একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারে না। কারণ এতে বংশ ও
সন্তানের অবস্থা সর্বহারা হয়। পক্ষান্তরে একজন পুরুষ একাধিক স্ত্রী (৪টি
পর্যন্ত) গ্রহণ করতে পারে।[24] কারণ, এতে ঐ ভয় থাকে না।
তাছাড়া বলাই বাহুল্য যে, ইসলাম
মানবপ্রকৃতির জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ ধর্ম। জীবনের সর্বপ্রকার সমস্যার সমাধান
খুঁজে মিলে এই ধর্মে। মানবকূলের সকল মানুষের প্রকৃতি, যৌনক্ষুধা বা
কামশক্তি সমান নয়। স্ত্রী তার বীর্যবান স্বামীর সম্পূর্ণ ক্ষুধা নাও
মিটাতে পারে; বিশেষ করে যদি সে রোগা হয় অথবা তার ঋতুর সময় দীর্ঘস্থায়ী হয়।
পক্ষান্তরে ব্যভিচারও মানবচরিত্রের প্রতিকূল।
স্ত্রী বন্ধ্যা হলে বংশে বাতি দেবার জন্য
সন্তান লাভের উদ্দেশ্যে অথবা একজন বিধবা বা পরিত্যক্তার সৌভাগ্য ফিরিয়ে
আনতে এবং আরো অন্যান্য যুক্তিযুক্ত কারণে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বিবাহ
সংসারে প্রয়োজন হয়। আর এটা নৈতিকতার পরিপন্থী নয়। চরিত্র ও নৈতিকতার
প্রতিকূল তো এক বা একাধিক উপপত্নী বা ‘গার্ল্স ফ্রেন্ড্’ গ্রহণ করা।[25]
পক্ষান্তরে একাধিক বিবাহের শর্ত আছেঃ
১- একই সঙ্গে যেন চারের অধিক না হয়।
২- স্ত্রীদের মাঝে যেন
ন্যায়পরায়ণতা থাকে। ভরণ-পোষণ, চরিত্র-ব্যবহার প্রভৃতিতে যেন সকলকে সমান
চোখে দেখা হয়। সকলের নিকট যেন সমানভাবে রাত্রি-বাস বা অবস্থান করা হয়। নচেৎ
একাধিক বিবাহ হারাম।[26]
অবশ্য অন্তরের গুপ্ত প্রেমকে সকলের জন্য সমানভাবে ভাগ করা অসম্ভব।[27]
তাই অন্তর যদি কাউকে অধিক পেতে চায় বা ভালোবাসে তবে তা দূষণীয় নয়। কিন্তু প্রকাশ্যে সকলের সাথে সমান ব্যবহার প্রদর্শন ওয়াজেব।
একাধিক বিবাহ করলে কোন স্ত্রীর মন্দ-চর্চা
অন্য স্ত্রীর নিকট করবে না। কোন স্ত্রীকে অন্য স্ত্রী প্রসঙ্গে কুমন্তব্য
বা কুৎসা করতে সুযোগ দেবে না। তাদের আপোষে যাতে ঈর্ষাঘটিত কোন মনোমালিন্য
বা দুর্ব্যবহার না হয়, তার খেয়াল রাখবে। পৃথক-পৃথক বাসা হলেই শান্তির আশা
করা যায়। নচেৎ ‘নিম তেঁতো, নিষিন্দি তেঁতো, তেঁতো মাকাল ফল, তাহারও অধিক
তেঁতো দু’ সতীনের ঘর।’ বিশেষ করে বেপর্দা পরিবেশ হলে তো তিক্তময় নরক সে
সংসার।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় বিবাহ করার সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি জরুরী নয়।[28]
কুফরীর কারণে স্বামীর অধিকার থেকে ছিন্ন
হয়ে মুসলিমদের যুদ্ধবন্দিনীরূপে কোন মুজাহিদের ভাগে এলে এক মাসিক পরীক্ষার
পর অথবা গর্ভ হলে প্রসব ও নেফাসকাল পর্যন্ত অপেক্ষার পর অধিকারভুক্ত হবে;
যদিও তার স্বামী বর্তমানে জীবিত আছে।[29]
কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে অথবা তালাক
দিলে সে তার ইদ্দতকাল পর্যন্ত ঐ স্বামীর অধিকারে থাকে। অতএব কোন রমণীকে
তার ইদ্দতকালে বিবাহ করা অবৈধ।[30]
ইদ্দতের বিস্তারিত বিবরণ পরে আসবে ইনশাআল্লাহ।
কোন মহিলা গর্ভবতী থাকলে গর্ভকাল তার
ইদ্দত। গর্ভাবস্থায় বিবাহ বৈধ নয়। অবৈধ গোপন প্রেমে যার ব্যভিচারে গর্ভবতী
হয়েছে সেই প্রেমিক বিবাহ করলেও গর্ভাবস্থায় আক্দ সহীহ নয়। প্রসবের পরই আক্দ
সম্ভব।[31]
কোন মহিলার স্বামী নিখোঁজ হলে নিখোঁজ
হওয়ার দিন থেকে পূর্ণ চার বছর অপেক্ষা করার পর আরো চার মাস দশদিন
স্বামী-মৃত্যুর ইদ্দত পালন করে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করতে পারে। এই
নির্ধারিত সময়ের পূর্বে তার বিবাহ হারাম। বিবাহের পর তার পূর্ব স্বামী ফিরে
এলে তার এখতিয়ার হবে; স্ত্রী ফেরৎ নিতে পারে অথবা মোহর ফেরৎ নিয়ে তাকে ঐ
স্বামীর জন্য ত্যাগ করতেও পারে।[32]
স্ত্রী চাইলে আর নতুনভাবে বিবাহ আক্দের
প্রয়োজন নেই। কারণ, স্ত্রী তারই এবং দ্বিতীয় আক্দ তার ফিরে আসার পর বাতিল।
তবে তাকে ফিরে নেওয়ার পূর্বে ঐ স্ত্রী (এক মাসিক) ইদ্দত পালন করবে।[33]
গর্ভবতী হলে প্রসবকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর সে সময়ে দ্বিতীয় স্বামী থেকে পর্দা ওয়াজেব হয়ে যাবে।
তৃতীয় কারণঃ- দুই নিকটাত্মীয়র জমায়েত
সাধারণতঃ একাধিক বিবাহে অশান্তি বেশীই হয়।
সতীন তার সতীনকে সহজে সইতে পারে না। সতীনে-সতীনে বিচ্ছিন্নতা থাকে। অতএব
সতীন একান্ত নিকটাত্মীয় হলে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন হয়, যা হারাম। তাছাড়া
নিকটাত্মীয় সতীনের কথায় গায়ে ঝালা ধরে বেশী, দ্বন্দ্ব বাড়ে অধিক। কথায় বলে
‘আনসতীনে নাড়ে চাড়ে, বোন সতীনে পুড়িয়ে মারে।’ তাই ইসলাম এমন একান্ত
নিকটাত্মীয়দেরকে একত্রে স্ত্রীরূপে জমা করতে নিষেধ করেছে। সুতরাং স্ত্রী
থাকতে তার (সহোদরা, বৈপিত্রেয়ী, বৈমাত্রেয়ী বা দুধ) বোন (অর্থাৎ, শালী) কে
বিবাহ করা হারাম। তদনুরূপ স্ত্রীর বর্তমানে তার খালা বা বোনঝি, ফুফু বা
ভাইঝিকে বিবাহ করা অবৈধ। স্ত্রী মারা গেলে বা তালাক দিলে ইদ্দতের পর তার ঐ
নিকটাত্মীয়র কাউকে বিবাহ করতে বাধা নেই।
স্ত্রীর কাঠবাপের (বা মায়ের স্বামীর) অন্য স্ত্রীর মেয়েকে বিবাহ করতে দোষ নেই।[34]
চতুর্থ কারণঃ ইহরাম
হজ্জ বা উমরায় ইহরাম বাঁধা অবস্থায় বিবাহ ও বিবাহের পয়গাম হারাম। এই অবস্থায় কারো বিবাহ হলেও তা বাতিল।[35]
পঞ্চম কারণঃ চারের অধিক সংখ্যা
চার স্ত্রী বর্তমান থাকতে পঞ্চম বিবাহ
হারাম।[36] চারের মধ্যে কেউ ইদ্দতে থাকলে তার ইদ্দত শেষ না হওয়া পর্যন্ত
অন্য বিবাহ করা যাবে না।
ষষ্ঠ কারণঃ তিন তালাক।
স্ত্রীকে তিন তালাক তিন পবিত্রতায় দিলে
অথবা জীবনের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তিনবার তালাক দিলে ঐ স্ত্রীকে পুনঃ বিবাহ
করা বৈধ নয়। যদি একান্তই তাকে পুনরায় ফিরে পেতে চায়, তবে ঐ স্ত্রী দ্বিতীয়
স্বামী ও তার যৌনস্বাদ গ্রহণের পর সে সেবচ্ছায় তালাক দিলে অথবা মারা গেলে
তবে ইদ্দতের পর তাকে পুনর্বিবাহ করতে পারে। নচেৎ তার পূর্বে নয়।[37]
স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার পর লজ্জিত হয়ে
ভুল বুঝতে পেরে তাকে ফিরে পেতে ‘হালালা’ পন্থা অবলম্বন বৈধ নয়। অর্থাৎ,
স্ত্রীকে হালাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে কোন বন্ধু বা চাচাতো-মামাতো ভায়ের
সাথে বিবাহ দিয়ে এক রাত্রি বাস করে তালাক দিলে পরে ইদ্দতের পর নিজে বিবাহ
করা এক প্রকার ধোঁকা এবং ব্যভিচার। যাতে দ্বিতীয় স্বামী এক রাত্রি
ব্যভিচার করে এবং প্রথম স্বামী ঐ স্ত্রীকে হালাল মনে করে ফিরে নিয়েও তার
সাথে চিরদিন ব্যভিচার করতে থাকে। কারণ, প্রকৃতপক্ষে স্ত্রী ঐভাবে তার জন্য
হালাল হয় না।
যে ব্যক্তি হালাল করার জন্য ঐরূপ বিবাহ
করে, হাদীসের ভাষায় সে হল ‘ধার করা ষাঁড়।’[38] এই ব্যক্তি এবং যার জন্য
হালাল করা হয় সে ব্যক্তি (অর্থাৎ প্রথম স্বামী) আল্লাহ ও তদীয় রসূলের
অভিশপ্ত।[39]
জায়বদলী বা বিনিময়-বিবাহ বিনা পৃথক মোহরে
বৈধ নয়। এ ওর বোন বা বেটিকে এবং ও এর বোন বা বেটীকে বিনিময় ক’রে পাত্রীর
বদলে পাত্রীকে মোহর বানিয়ে বিবাহ ইসলামে হারাম।[40] অবশ্য বহু উলামার নিকট
উভয় পাত্রীর পৃথক মোহর হলেও জায়বদলী বিয়ে বৈধ নয়। (যদি তাতে কোন
ধোকা-ধাপ্পা দিয়ে নামকে-ওয়াস্তে মোহর বাঁধা হয় তাহলে।[41]
মুত্আহ বা সাময়িক বিবাহও ইসলামে বৈধ নয়।
কিছুর বিনিময়ে কেবল এক সপ্তাহ বা মাস বা বছর স্ত্রীসঙ্গ গ্রহণ করে
বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যেহেতু ঐ স্ত্রী ও তার সন্তানের দুর্দিন আসে, তাই ইসলাম
এমন বিবাহকে হারাম ঘোষণা করেছে।[42]
অনুরূপ তালাকের নিয়তে বিবাহ এক প্রকার
ধোঁকা। বিদেশে গিয়ে বা দেশেই বিবাহ-বন্ধনের সময় মনে মনে এই নিয়ত রাখা যে,
কিছুদিন সুখ লুটে তালাক দিয়ে দেশে ফিরব বা চম্পট দেব, তবে এমন বিবাহও বৈধ
নয়। (এরূপ করলে ব্যভিচার করা হয়।) কারণ, এতেও ঐ স্ত্রী ও তার সন্তানের
অসহায় অবস্থা নেমে আসে।[43] যাতে নারীর মান ও অধিকার খর্ব হয়।
কোন তরুণীর বিনা সম্মতিতে জোরপূর্বক বিবাহ দেওয়া হারাম। এমন বিবাহ-বন্ধন শুদ্ধই হয় না।[44]
বাল্য-বিবাহ বৈধ।[45] তবে সাবালক হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রীর এক অপরকে পছন্দ না হলে তারা বিবাহবন্ধন ছিন্ন করতে পারে।[46]
সববংশ বা সবগোত্রের আত্মীয় গম্য পাত্র-পাত্রীর বিবাহ বৈধ। তবে ভিন্ন গোত্রে অনাত্মীয়দের সাথেই বৈবাহিক-সূত্র স্থাপন করা উত্তম।[47]
বিশেষ করে সামান্য ত্রুটি-বিচ্যুতি ও
মনোমালিন্য নিয়ে বাড়াবাড়ি অধিক হয় সবগোত্রে ঘরে-ঘরে বিবাহ হলে। অভিজ্ঞরা
বলেন, ‘ঘরে-ঘরে বিয়ে দিলে, ঘর পর হয়ে যায়। আত্মীয়তা বাড়াতে গিয়ে তা
বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় একেবারেই।’ অবশ্য সর্বক্ষেত্রে দ্বীনদারীই হল কষ্টিপাথর।
কোন মুসলিম কোন ব্যভিচারিণী নারীকে বিবাহ
করতে পারে না। বরং এ ব্যাপারে ঐরূপ নারী মনোমুগ্ধকর সুন্দরী রূপের ডালি বা
ডানা-কাটা পরি হলেও মুসলিম পুরুষের তাতে রুচি হওয়াই উচিৎ নয়। একান্ত
প্রেমের নেশায় নেশাগ্রস্ত হলেও তাকে সহধর্মিনী করা হারাম।
এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক বলেন,
﴿الزَّانِي لاَ يَنْكِحُ إِلاَّ زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لا يَنْكِحُهَا إِلاَّ زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ وَحُرِّمَ ذَلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ﴾
‘‘ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা
অংশীবাদিনীকে এবং ব্যভিচারিণী কেবল ব্যভিচারী অথবা অংশীবাদী পুরুষকে বিবাহ
করে থাকে। আর মুমিন পুরুষদের জন্য তা হারাম করা হল।’’[48]
সুতরাং অসতী নারী মুশরিকের উপযুক্ত;
মুসলিমের নয়। কারণ উভয়েই অংশীবাদী; এ পতির প্রেমে উপপতিকে অংশীস্থাপন করে
এবং ও করে একক মা’বূদের ইবাদতে অন্য বাতিল মা’বূদকে শরীক। (অবশ্য অসতী হলেও
কোন মুশরিকের সাথে কোন মুসলিম নারীর বিবাহ বৈধ নয়।)
পক্ষান্তরে ব্যভিচারিণী যদি তওবা করে
প্রকৃত মুসলিম নারী হয়, তাহলে এক মাসিক অপেক্ষার পর তবেই তাকে বিবাহ করা
বৈধ হতে পারে। গর্ভ হলে গর্ভাবস্থায় বিবাহ-বন্ধন শুদ্ধ নয়। প্রসবের পরই
বিবাহ হতে হবে।[49]