সফরে একত্রে দুই ওয়াক্ত ছালাত আদায় করার বিধাণ !
হাদীছে বর্ণিত হয়েছে-
أَنَّ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُمْ خَرَجُوا مَعَ رَسُولِ اللّهِ صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ فَكَانَ رَسُولُ اللّهِ صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ .
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللّهِ صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ فِي السَّفَر.
‘আনাস ইবন মালিক রাদিআল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুহর ও আছর এবং মাগরিব ও ইশার ছালাতকে সফর অবস্থায় একত্রিত করে আদায় করতেন।’২
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-
عن ابْنُ عَبَّاسٍ أنه قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللّهِ صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ.
ইবন আববাস রাদি আল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যুহর ও আছর এবং মাগরিব ও ইশার ছালাতকে একত্রে আদায় করতে দেখেছি।’৩
ইমাম আল-বুখারী রাহিমাহুল্লাহ বুখারী শরীফে একটি অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন-
الجمع فى السفر بين المغرب والعشاء.
‘সফর অবস্থায় মাগরিব ও ইশার ছালাতকে একত্রে আদায় করণ’। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন-
عَنْ سَالِمٍ ابن عبد الله عَنْ أَبِيهِ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَجْمَعُ بَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ إِذَا جَدَّ بِهِ السَّيْرُ.
‘সালিম ইবন ‘আবদিল্লাহ রাদিআল্লাহু ‘আনহু তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে তাড়াতাড়ি করতে চাইলে, মাগরিব ও ইশার ছালাতকে একত্রে আদায় করতেন।’৪
মূলত রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে অনেক হাদীছ এ মর্মে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি সফর অবস্থায় একত্রে দুই ওয়াক্তের ছালাত আদায় (جمع بين الصلاتين) করতেন। সেই হাদীছগুলো থেকে এখানে কয়েকটি হাদীছ উল্লেখ করা হলো। এ হাদীছগুলো স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে যে, কোন মুসলিম সফর অবস্থায় একই সাথে দুই ওয়াক্তের ছালাতকে একত্রে আদায় করার ইচ্ছা করলে হাদীছ দ্বারা তা অনুমোদিত। অনেক মুসলিম রয়েছেন, এক্ষেত্রে সফরে দুই ওয়াক্ত ছালাতকে একই সাথে একত্রিত করে আদায় করাকে তো বৈধ মনে করেনই না, বরং কেউ তা করলে কঠোর ভাষায় এর প্রতিবাদ করেন। এটা কি হাদীছের প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্যের প্রমাণ বহন করে? যেহেতু এর স্বপক্ষে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ রয়েছে, তার প্রতি অকুণ্ঠ আনুগত্য না দেখিয়ে, নিজে নিজেই হোক অথবা অন্য কোন পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়েই হোক; গোঁড়ামী বশত এ হাদীছের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া, হাদীছ পরিপালনের ক্ষেত্রে চরম আকারের বিভ্রান্তি নয় কি?
উৎসঃ বাংলাদেশ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
বাংলাদেশ ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার
১. আবূ দাউদ, খ.২, পৃ.০৪, ইবন হিববান, মুহাম্মাদ, ৪ খ. ৪৬৯ পৃ:, আহমদ, ৫ খ, ২৩৭ পৃ.
২. আহমাদ, ৩খ. ১৩৮পৃ:
৩. ছাহীহ মুসলিম, ১খ., ৪৯১ পৃ.
৪. ছাহীহ আল-বুখারী, ১খ..৩৭৩ পৃ: