কিতাবুল মোকাদ্দস, ইঞ্জিল শরীফ ও ঈসায়ী ধর্ম
ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ
সম্পাদনাঃ মুহাম্মদ হামিদুল ইসলাম আজাদ
২. ‘কিতাবুল মোকাদ্দস’ বনাম ‘তওরাত-যাবূর-ইঞ্জিল’ কিতাবঃ
আমরা দেখেছি যে, তিনটি দাবির উপর ঈসায়ী প্রচারণার ভিত্তি: (১) প্রচলিত কিতাবুল মোকাদ্দসকে ‘প্রকৃত তাওরাত-ইঞ্জিল’ বলে দাবি করা, (২) প্রচলিত খৃস্টধর্মকে ঈসা মাসীহের প্রকৃত ধর্ম বলে দাবি করা এবং (৩) খৃস্টধর্মকে বিশ্বধর্ম বলে দাবি করা। প্রথম দাবির অসারতা অনুধাবন করতে নিম্নের বিষয়গুলি অনুধাবন করূন:
২. ১. বাইবেলের ‘নতুন নিয়ম’-কে ‘ইঞ্জিল’ নামকরণ
বাংলাদেশে খৃস্টান প্রচারকগণ “ইঞ্জিল শরীফ” নামের একটি পুস্তক প্রচার করেন। ইঞ্জিল শব্দটির ইংরেজি ইভানজেল ((evangel)। শব্দটিপ্রাচীন গ্রীক (euaggelion/ euaggelos) থেকে গৃহীত।
আমরা দেখেছি যে, তিনটি দাবির উপর ঈসায়ী প্রচারণার ভিত্তি: (১) প্রচলিত কিতাবুল মোকাদ্দসকে ‘প্রকৃত তাওরাত-ইঞ্জিল’ বলে দাবি করা, (২) প্রচলিত খৃস্টধর্মকে ঈসা মাসীহের প্রকৃত ধর্ম বলে দাবি করা এবং (৩) খৃস্টধর্মকে বিশ্বধর্ম বলে দাবি করা। প্রথম দাবির অসারতা অনুধাবন করতে নিম্নের বিষয়গুলি অনুধাবন করূন:
২. ১. বাইবেলের ‘নতুন নিয়ম’-কে ‘ইঞ্জিল’ নামকরণ
বাংলাদেশে খৃস্টান প্রচারকগণ “ইঞ্জিল শরীফ” নামের একটি পুস্তক প্রচার করেন। ইঞ্জিল শব্দটির ইংরেজি ইভানজেল ((evangel)। শব্দটিপ্রাচীন গ্রীক (euaggelion/ euaggelos) থেকে গৃহীত।
এর অর্থ সুসংবাদ। ইংরেজিতে একে গসপেল
(gospel)-ও বলা হয়। খৃস্টানবাইবেলের দ্বিতীয় অংশ “নতুন নিয়ম” ((the New
Testament)-এর মধ্যে মোট ২৭টি পুস্তক বিদ্যমান। এগুলির মধ্যে মাত্র ৪টি
পুস্তককে খৃস্টানগণ “ইঞ্জিল” বলে দাবি করেছেন। এছাড়া বাকি ২৩টি পুস্তককে
বিগত ২ হাজার বৎসরে কোনো একজন খৃস্টানও ‘ইঞ্জিল’ বলে দাবি করেন নি।
মুসলমানদের সরল বিশ্বাসকে পুজি করে তাদেরকে ধর্মান্তর করার জন্য খৃস্টান
প্রচারকগণ ২৭ গ্রন্থের এ পুস্তককে “ইঞ্জিল শরীফ” বলে চালাচ্ছেন। জেনে শুনেই
তাঁরা এ মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। নিম্নের বিষয়গুলি লক্ষ্য করূন:
(১) ইংরেজী ভাষায় এ গ্রন্থটির নাম (the New Testament)। আরবী ভাষায় এটির
নাম (আরবি...........), যার অর্থ নতুন নিয়ম বা নতুন সন্ধি। বিশ্বের কোনো
ভাষাতেই খৃস্টানগণ এটির নাম ‘ইঞ্জিল’ বলে দাবি করেন নি। শুধু সরল
মুসলমানদের প্রতারণা করার জন্য বর্তমানে কোনো কোনো মুসলিম দেশে এ বইটিকে
“ইঞ্জিল” বলে চালাচ্ছেন তাঁরা। আগ্রহী পাঠক একটু কষ্ট করে যে কোনো ইংরেজি
অভিধানে বা ইন্টারনেটে (evangel) লিখে সার্চ করলেই বিষয়টি জানতে পারবেন।
(২) ২৭টি বইয়ের মধ্যে মাত্র চারটি বইকে খৃস্টানগণ ইঞ্জিল বলে দাবি করেছেন। মূল গ্রীক বা ইংরেজি বাইবেলে এগুলির নাম নিম্নরূপ:
(১) The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. Matthew/ The Gospel According To St. Matthew:
সাধু মথিরমতানুসারে ঈসা মাসীহের ইঞ্জিল
(২) The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. Mark/ The Gospel According To St. Mark:
সাধু মার্কের মতানুসারে ঈসা মাসীহের ইঞ্জিল
(১) The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. Luke/ The Gospel According To St. Luke:
সাধু লূকের মতানুসারে ঈসা মাসীহের ইঞ্জিল
(১) The Holy Gospel of Jesus Christ According to St. John/ The Gospel According To St. John:
সাধু যোহনের মতানুসারে ঈসা মাসীহের ইঞ্জিল পাঠক, নাম থেকেই সহজেই বুঝতে
পারছেন যে, এ চারটি পুস্তকও মূলত ইঞ্জিল নয়, বিভিন্ন মানুষের মতে এগুলি
ইঞ্জিল বলে কথিত। ঈসা আঃ একটি ইঞ্জিল প্রচার করেছিলেন বলে সকলেই জানত। তবে
কারো কাছেই এর কোনো কপি ছিল না। তাঁর তিরোধানের কয়েকশত বৎসর পরে অনেক মানুষ
‘ইঞ্জিল’ লিখে প্রচার করেন যে, এটি ঈসা আঃ এর ইঞ্জিল। এজন্য এগুলির এরূপ
নামকরণ করা হয়: ‘অমুকের মতানুসারে এটি ইঞ্জিল’, সঠিক ইঞ্জিল কোনটি তা কেউ
জানেন না।
উৎসঃ কিতাবুল মোকাদ্দস, ইঞ্জিল শরীফ ও ঈসায়ী ধর্ম, লেখকঃ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ
চলবে ইনশা আল্লাহ ..............