বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ

 বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় 
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ
মুহাম্মাদ ইউছুফ আলী

মানুষ যখন সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে বিপথগামী ছিল। পৃথিবী যখন ডুবে ছিল মূর্খতা, অজ্ঞতা আর জাহেলিয়াতে। মানুষ মানুষের সাথে আচরণ করতো হিংস্র জন্তুর ন্যায়। সমাজের সকল স্তরে যখন বিরাজ করছিল এক অস্থির ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। জোর যার মুল্লকটাই যখন ছিলো তার।
গোত্রে গোত্রে হিংসা-বিদ্ধেষ আর হানাহানিতে সাধারণ মানুষ যখন ছিল অতিষ্ঠ। অবিচার আর জুলুমের সীমা যখন পাহাড়কেও অতিক্রম করে গিয়েছিলো। শান্তিপ্রিয় মানুষ যখন শান্তির অন্বেশায় ছিলো পাগলপারা। মানুষ পাচ্ছিল না যখন কোন সুনির্দিষ্ট সমাধান। ঠিক তেমন একটি সমাজে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রেরণ করলেন তাঁর প্রিয় রাসূলকে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মের পর চল্লিশ বছর পর্যন্ত তৎকালীন সমাজের অবর্ণনীয় অবস্থা দেখতে পেয়েছিলেন স্বচক্ষে। আর এই অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ‘হিলফুল ফুযুল’ সংগঠন করে মানুষের কল্যাণে তেমন ভূমিকা রাখতে না পেরে যখন শান্তির অন্বেশায় ধ্যানে মগ্ন হলেন হেরা গুহায়, ঠিক এমন সময় মহান আল্লাহ নাযিল করলেন মানুষের জন্য শান্তিসমৃদ্ধ জীবন বিধান ও মুক্তির মহাসনদ আলকোরআন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কোরআনের অমিয় বাণী নিজে অবগত হলেন। তারপর তা ছড়িয়ে দিতে লাগলেন তাঁর নিজের বংশ এবং আশ-পাশের সকল শ্রেণির লোকের কাছে।
তখনকার মানুষগুলো শান্তির পথ খুঁজতে খুঁজতে যদিও ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই শান্তির আহ্বানে তারা  তেমন একটা সাড়া দিল না। রবং তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শান্তিপ্রিয় কাজে করল বাধার সৃষ্টি। তিনি তখন ধৈর্য সহকারে তাঁর মিশন রেখেছিলেন অব্যাহত। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে, জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে কাজ করে গেলেন ইসলাম বৈরী লোকগুলোর মাঝে। অনেক চেষ্টা করেও যখন সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাথী পেলেন না, তাঁর উপর যুলুম আর নির্যাতনের পরিধি যখন সীমা ছাড়িয়ে গেল, নিজের জীবনই যখন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়লো তখন আল্লাহর হুকুমে শান্তিকামী মানুষের শহর আলমাদীনায় হিজরত করে চলে গেলেন। সেখানাকার মানুষগুলোর সমর্থন ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা করলেন একটি সুখী সমৃদ্ধ শান্তির অদ্বিতীয় নিকেতন ইসলামী রাষ্ট্র। আর এই ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করার মাধ্যমেই তিনি শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে দিলেন সমগ্র বিশ্বে।
মানবতার কল্যাণে রাসূল (সা)-এর দা‘ওয়াত
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী প্রাপ্ত হয়ে কিছুদিন গোপনে গোপনে মানুষকে ডাকলেন সকল অনাচার, অত্যাচার, জুলুম, নিপীড়ন, মদ, জুয়া, সুদ, হানাহানি, রাহাজানি ও অন্যের সম্পদ দখল ইত্যাদি থেকে বিরত থেকে শান্তির পথ অবলম্বন করার জন্য। কিছুটা সময় পর যখন আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন  তাঁকে নির্দেশ দিলেন প্রকাশ্যে তাঁর দীনের ঘোষণা দিতে তখন তিনি তা-ই করলেন। ঘোষণা দিলেন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”। সাথে সাথেই বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টিকারী লোকগুলো শুরু করলো তাঁর উপর নানা ধরনের জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়নসহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি। রাসূল ধৈর্য হারা হলেন না। কাজ চালিয়ে গেলেন অবিরাম। কিন্তু তৎকালীন জাহেলি সমাজের লোকগুলো এতোই বেপরোয়া ছিল যে তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শারীরিকভাবেও আঘাত করতে লাগলেন। তিনি তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট না হয়ে তাদের সাথে কোন ধরনের ঝগড়া-ফাসাদ সৃষ্টি না করে তাদের হেদায়াতের জন্যই বরং আল্লাহর দরবারে দু‘আ করলেন।
অবশেষে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর অনুসারীদের উপর যুলুম আর নির্যাতন যখন সীমা অতিক্রম করলো তখন আল্লাহর নির্দেশে নিজের প্রিয় জন্মভূমি ত্যাগ করে চলে গেলেন মাদীনায়। মাক্কা এবং মাদীনার জীবনে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোন গোত্র বা বংশের লোককে জোর করে ইসলামে দিক্ষিত করেননি। কারণ তিনি ছিলেন সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত স্বরূপ। তাঁর প্রতি আল্লাহর ঘোষণা : “(হে মুহাম্মাদ!) আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি” (সূরা আম্বিয়া-১০৭)। তিনি মানুষকে শান্তির পথে ডেকেছিলেন শান্তিপূর্ণভাবেই।
অন্য রাষ্ট্রের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
আজকের বিশ্বে তথাকথিত পরাশক্তিগুলো যেভাবে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে বা অস্ত্র আর পেশী শক্তির জোরে আরেক দেশ দখল করে নিয়ে সে দেশের অর্থ-সম্পদ লুটে নিয়ে বিশ্বে সৃষ্টি করছে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ। সেক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি কখনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈরী আচরণ করতেন না। শক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সৈন্য পাঠিয়ে সে দেশ দখল করে নিতে হবে এ নীতি তিনি কখনই অনুমোদন করেননি। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে কোনো ব্যাপারে কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে থাকলে তা কড়ায় গন্ডায় নিজে পালন করতেন এবং সাহাবীদেরও সেটা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এ সংক্রান্ত সালিম ইবনু ‘আমির (রা)-এর বর্ণনাটি এরূপ, ‘মু‘আবিয়া (রা) এবং রোম সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ না করার চুক্তি হয়েছিলো। চুক্তির মেয়াদ শেষ না হতেই মু‘আবিয়া তাঁর বাহিনী নিয়ে রোম সীমান্তের দিকে রওয়ানা করেন তাদের ধাওয়া করার জন্য। পথিমধ্যে তাঁর নিকট উপস্থিত হলো এক ঘোড়সওয়ার। তিনি বলছিলেন আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবর, চুক্তি রক্ষা করো, চুক্তি ভঙ্গ করো না। তাঁর দিকে তাকাতেই মু‘আবিয়া দেখলেন, এ ব্যক্তিটি ‘আমর ইবনে ‘আবাসা (রা)। মু‘আবিয়া বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যার সাথে কোন কওমের চুক্তি হয় তার পক্ষে চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে তাতে কোনো পরিবর্তন সাধন করা বৈধ নয়। তার পক্ষে এটাও বৈধ নয় যে, সে চুক্তি শত্র“র মুখে নিক্ষেপ করবে।’
হাদীসটি শুনে মু‘আবিয়া (রা) তাঁর ফৌজ নিয়ে ফিরে আসলেন। ফলে অনাকাক্সিক্ষত কোন ঘটনার সৃষ্টি হলো না। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এটাই ছিল শান্তিপ্রিয় নীতি। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যে নীতি অনুসরণ করা আজ খুবই প্রয়োজন।
অন্য ধর্মের প্রতি রাসূল (সা)-এর দৃষ্টিভঙ্গির অনুসরণ
বর্তমান বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টির একটি বড় কারণ হচ্ছে অন্য ধর্মের প্রতি কটাক্ষ করা। প্রত্যেক ধর্মের মানুষই তার নিজস্ব ধর্মীয় আদর্শ লালন করে তার অন্তরের গভীরে। যখন তার ধর্মের ব্যাপারে অন্য ধর্মের লোকেরা মন্তব্য করে বা কটাক্ষ করে কথা বলে তখন স্বীয় ধর্মে বিশ্বাসী জনগণ মর্মাহত, ব্যথিত ও বিক্ষুদ্ধ না হয়ে পারে না। আর এর ফলে দেখা দেয় বিশ্বব্যাপী অশান্তির অশনি সংকেত। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যেভাবে কুৎসা রটাচ্ছে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইসলামকে দুনিয়া থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে। এতে করে বিশ্বে শান্তি তো আসবেই না বরং অশান্তি বেড়ে যাবে অসহনীয় মাত্রায়। শুধু তাই নয় কিছু ব্যক্তি আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাঙ্গ চিত্র প্রকাশ করে এবং তাঁর সম্পর্কে অযাচিৎ মন্তব্য করে বিশ্বের শাস্তিকামী মানুষের মনে আঘাত দিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করতে চায়।
কিন্তু বিশ্ব মানবতার বন্ধু, সকল মানুষের জন্য রহম দিল, আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভূমিকা ছিল শান্তির পক্ষে। তিনি রাষ্ট্রের মধ্যে বা বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টি হোক এমন কোন কাজ নিজে করে যাননি এবং উম্মাতকেও এর অনুমতি দেননি। তিনি যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তখন অমুসলিমদের ধর্মের প্রতি কখনও কোন বিরূপ মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই’।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, ‘সর্তক থাক, সে ব্যক্তি সম্পর্কে যে ব্যক্তি অমুসলিমদের ওপর জুলুম করে অথবা তাদের হক নষ্ট করে অথবা তাদের সামর্থ্যের চেয়ে বেশি কাজের বোঝা চাপাতে চেষ্টা করে অথবা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের থেকে কিছু জোরপূর্বক নেয়, আমি কিয়ামাতের দিন সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়বো” (আবু দাউদ)।
বর্তমান বিশ্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই নীতি অনুসরণ করলে কোনো সংখ্যালঘুই নির্যাতনের স্বীকার হবে না, সৃষ্টি হবে না বিশ্বে অশান্তি।
যুদ্ধবন্দীদের সাথে আচরণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
তৎকালীন সময়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কারাবন্দী হয়েছেন রাসূল তাদের সাথে সম্পূর্ণ মানবীয় আচরণ করেছেন। তাদের খাওয়া, পরা ও চিকিৎসাসহ সবকিছুর সুব্যবস্থা করেছেন। এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় জন্মভূমি মক্কা থেকে তাঁকে  জুলুম, নির্যাতন ও হত্যার পরিকল্পনা করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল, ইসলামের সুদিনে সেই মক্কা যখন বিজয় হলো তখন মাবনতার বন্ধু মুষ্টিমেয় কয়েকজন লোককে ছাড়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা করে দিলেন। কারো বাড়ি ঘরে কিংবা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে আল্লাহর রাসূলের সাহাবীরা হামলা কিংবা ক্ষতি সাধন করেনি। মক্কা বিজয়ের পর তিনি ঘোষণা দিলেন-১. যারা আপন ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে থাকবে, তারা নিরাপদ, ২. যারা আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে, তারাও নিরাপদ, এবং ৩. যারা কাবাগৃহে আশ্রয় নিবে তারাও নিরাপদ। এজন্যই তো রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল সৃষ্টির জন্য ছিলেন রহমত স্বরূপ। ছিলেন শান্তির বাহক।
কিন্তু বর্তমান বিশ্বে  বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের ময়দান থেকে লোকদের বন্দী করে তাদের সাথে করা হচ্ছে অমানবিক আচরণ। যার বিভিন্ন চিত্র মাঝে মাঝে পত্র-পত্রিকায় দেখতে পাওয়া যায়। গুয়ান্তেনামো বে কারাগারে যেসব বন্দী আছে তাদের সাথে কি ধরনের আচরণ করা হয়েছে বা হচ্ছে তা আজ বিশ্ববাসী অবগত। শুধু যুদ্ধবন্দীই নয় চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধে যে দেশে তারা প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হচ্ছে সেদেশের অর্থ-সম্পদ লুটে নিচ্ছে, নারীদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, হত্যা করা হচ্ছে শিশুদের। যার কারণে বিশ্বজুড়ে আজ অশান্তির কালোছায়া বিরাজমান। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য অবশ্যই যুদ্ধবন্দীদের সাথে বিশ্বনাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণ অনুসরণ করতে হবে।
নারী অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
আরবের জাহেলী সমাজে নারীরাই ছিল সবচেয়ে বেশি অধিকার বঞ্চিত। অধিকার বলতে তাদের কিছুই ছিলো না। ঐ সমাজে মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়াটা ছিল বাবা-মায়ের জন্য সাংঘাতিকভাবে অপমানকর। তাই যে পরিবারে মেয়ে সন্তান জন্ম নিতো সে পরিবারে দেখা দিতো দারুণ অসন্তোষ। আর এ কারণেই অনেক নিষ্ঠুর বাবা-মা মেয়ে সন্তান জন্ম নিলে সাথে সাথেই তাকে মেরে ফেলতো বা জীবন্ত মাটিতে পুতে ফেলতো। পুরুষরা যে যেভাবে পারতো নারীদের উপর অত্যাচার চালাতো। পুরুষের ভোগ্যপণ্যে পরিণত হয়েছিল নারীরা। সমাজ কিংবা পরিবারে তার কোন ভূমিকাই ছিলো না। ছিলো না কোন অধিকার। পিতা বা স্বামীর সম্পদে নারীর ছিলো না অংশ। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক পিতা এবং স্বামীর সম্পদে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে গেছেন। যেখানে একজন নারীর ইজ্জত আব্র“ দিনে দুপুরেও নিরাপদ ছিল না সেখানে একজন নারী যদি গভীর রাতেও দীর্ঘপথ অতিক্রম করতো তাহলে তার মান-সম্মানে আঘাত করার মতো কেউ সাহস করতো না। ঘৃণ্য দাসপ্রথা বিলুপ্তির মাধ্যমে পরাধীন জীবন যাপন থেকে নারীসহ সকল মানুষকে মুক্ত করে গেছেন আল্লাহর রাসূল। তিনি দাস-দাসী মুক্তির জন্য সাহাবায়ে কিরামদের উৎসাহ দিয়েছেন। এটিকে তিনি সাওয়াবের কাজ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি নিজেও ৬৩ জন দাসকে মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রীর অনুমোদন নিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। ‘একবার খানসা বিনতে খাদ্দাম আনসারী নামক এক মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অভিযোগ দিলেন, তার  বাবা তার মতের বিপরীতে একজন পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ বিয়ে বাতিল করে দেন।’ (বুখারী ও মুসলিম)
আরবের জাহেলি সমাজে যেখানে স্ত্রীর কোনো অধিকারই ছিলো না সেই সমাজেই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীর সকল ধরনের অধিকার সংরক্ষণ করেছিলেন। আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম’। তিনি সকলকে তাকিদ দিয়েছেন তারা যেন তাদের স্ত্রীদের মোহারানাসহ সকল অধিকার সম্পূর্ণরূপে আদায় করে। ইসলাম স্ত্রীর সকল খোরপোষের দায়িত্ব দিয়েছে স্বামীর উপর। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে বলেছেন, “কোন ব্যক্তির গুনাহগার হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যাদেরকে পালন করে, তাদেরকে খোরপোষ দেয় না।”
শিশু অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
আজকাল প্রায়ই দেখা যায় একটি শিশু যে বয়সে লেখা পড়া করার কথা কিংবা খেলাধুলা করে বেড়ে ওঠার কথা ঠিক সে সময়ে তারা কঠোর পরিশ্রম করছে। আবার অনেকেই তাদের সাথে করছে অমানবিক আচরণ। তারা যে পরিমাণ কাজ করতে পারে না তার চেয়ে বেশি পরিমাণ কাজ তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। যেটা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লংঘন। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন’, যারা ছোটদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করে না এবং বড়দেরকে সম্মান করে না তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়’ (আবু দাউদ)।
অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
ধনীরা আরো ধনী হবে আর গরীবরা আরো গরীব হতেই থাকবে এটা ছিল তৎকালীন জাহেলী সমাজের চিত্র। বর্তমানেও এটা বিরাজমান। কেউ রাজার হালে বসবাস করছে আবার কেউ না খেয়ে মরছে। তৎকালীন সময়ে ধনীরা গরীবদের কোনো মানুষই মনে করতো না। তারা তাদেরকে দাস-দাসীর মতো ব্যবহার করতো। গরীবরা না খেয়ে মারা গেলেও ধনীদের এ ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা ছিল না। আর বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে ঘোষণা দিলেন, ‘নি:সন্দেহে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম ধনী লোকদের ধন-মাল হতে এমন পরিমাণ মাল দিয়ে দেয়া বাধ্যতামূলক করেছেন, যা তাদের ধনী-গরীব-ফকিরদের প্রয়োজন পূরণে যথেষ্ট হতে পারে। ফলে ফকীর গরীবরা যে ক্ষুধার্ত কিংবা উলঙ্গ থেকে কষ্ট পায় তার মূলে ধনী লোকদের আচরণ ছাড়া অন্য কোন কারণই থাকতে পারেনি। এই বিষয়ে সকলের সাবধান হওয়া উচিত। নিশ্চয়ই জেনে রাখো আল্লাহ তা‘আলা এই লোকদের খুব শক্তভাবে হিসেব গ্রহণ করবেন এবং তাদেরকে তীব্র পীড়াদায়ক আযাব দেবেন’ (তাবারানী আসসগীর ও আল আওসাত)।
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকাতভিত্তিক অর্থনীতির মাধ্যমে সমাজের ধনী লোকদের থেকে যাকাত নিয়ে গরীবদের মধ্যে বন্টন করে তাদের সকল সমস্যা সমাধান করে দিলেন। সুদ ও সুদভিত্তিক ব্যবসা নিষেধ করলেন। কমিয়ে দিলেন ধনী-গরীবের আকাশচুম্বী ব্যবধান। আজকের বিশ্বেও রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই নীতি অবলম্বন করলে ধনী-গরীবের ভেদাভেদ দূর হয়ে আসতে পারে সমতা এবং শান্তি।
প্রতিবেশির অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
আধুনিক যুগে প্রতিবেশির প্রতি নজর দেওয়া তো দূরের কথা প্রতিবেশী কে বা কারা তারও কোন খোঁজ-খবর রাখা হয়না। একই বাড়িতে কিংবা পাশাপাশি ফ্লাট বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করলেও প্রতিবেশীর সাথে পরিচয়ই ঘটেনা। একজন স্বচ্ছল ব্যক্তি খুব সুখ-সম্ভোগের মধ্যে জীবন যাপন করছে আর তার প্রতিবেশী খেয়ে আছে নাকি না খেয়ে আছে সে ব্যাপারে কোন খেয়ালই নেই। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিবেশির অধিকারের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিবেশীর অধিকার পূরণ করে না কিংবা তাদেরকে কষ্ট দেয়, সে কবীরা গুনাহ করে।’ অন্য হাদীসে এসেছে, জিবরীল (আ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিবেশীর ব্যাপারে অব্যাহত নসীহত করতে থাকে। প্রতিবেশীর ব্যাপারে এত তীব্র তাকিদের কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধারণা করেছিলেন যে, প্রতিবেশীকে হয়তো ওয়ারিশ বানিয়ে দেয়া হতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য আরেকটি হাদীসে বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সেই সাথী সর্বোত্তম যে নিজ সাথীর কাছে সর্বোত্তম; আর আল্লাহর কাছে সেই প্রতিবেশী সর্বোত্তম যে নিজ প্রতিবেশীর কাছে সর্বোত্তম’। (তিরমিযি) অতএব রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ হাদীসগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমেই প্রতিবেশীর হক আদায় করা সম্ভব।
পিতা-মাতার অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
সকল মানুষই পিতা-মাতার মাধ্যমে দুনিয়াতে আসার সুযোগ পায়। পিতা-মাতা অনেক দু:খ কষ্ট সহ্য করে সন্তান মানুষ করেন। সন্তান যখন বড় হয়ে পিতা-মাতাকে ভুলে যায় তখন বৃদ্ধ বয়সে তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করেন। পিতা-মাতা বঞ্চিত হন তাঁদের অধিকার থেকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিতা-মাতার মর্যাদার ব্যাপারে বলেছেন, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।‘ রাসূলের এই একটি হাদীস দ্বারাই প্রতীয়মান হয় সন্তানের কাছে মায়ের মর্যাদা ও অধিকার কতটুকু। অর্থাৎ সন্তানকে ছোট বেলায় তাঁরা যেভাবে লালন পালন করেছেন, তাঁরা যখন বৃদ্ধ হন তখন সন্তানকেও তাকিদ দেয়া হয়েছে তাঁদের সকল কিছুর ব্যবস্থা করার জন্য। পিতা-মাতার সাথে এমন আচরণ করা যাবে না যাতে তাঁরা উহ! শব্দটি পর্যন্ত করতে পারে। পিতার ক্ষেত্রে বলেছেন, ‘সন্তান পিতার কোন ঋণ শোধ করতে পারে না। হাঁ, কিছুটা পারে যদি নিজ পিতাকে দাস হিসেবে দেখতে পায় এবং তাঁকে কিনে মুক্ত করে দেয়”। (মুসলিম, তিরমিযি, নাসাঈ) একবার এক ব্যক্তি এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিহাদে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মা-বাবার মধ্যে কেউ কি জীবিত আছেন? সে জবাবে বলল, আমার মা আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ কর। যদি তুমি তা কর তাহলে, তুমি হাজী, ‘উমরাহ আদায়কারী ও মুজাহিদ। (আবু ইয়ালা, উত্তম সনদ সহকারে) পিতা-মাতার অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এসকল নির্দেশনা এক অনুপম দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
স্বামী-স্ত্রীর অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
আরবের জাহেলি সমাজে যেখানে স্ত্রীর কোনো অধিকারই ছিলো না, কোনো কাজেই যেখানে স্ত্রীকে মর্যাদা দেয়া হতো না সেই সমাজেই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের সকল ধরনের অধিকার সংরক্ষণ করেছিলেন। একটি পরিবার গঠনে স্বামী এবং স্ত্রী দু’জনেরই ভূমিকা থাকে। তাই কেউ যেন কারো প্রকৃত অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন এই ব্যাপারেও রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথা ও কাজে দুনিয়ার সকল মানুষের জন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। সঙ্গত কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের একাধিক স্ত্রী ছিলেন। তিনি কোন স্ত্রীর সাথেই পক্ষপাতমূলক আচরণ করেননি। তিনি সকল স্ত্রীকেই সমান অধিকার দিয়েছেন। সবার জন্য একই ধরনের পোশাক ও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে তিনি পারিবারিক কাজে স্ত্রীদেরকে সহযোগিতা করেছেন। কখনো কোন স্ত্রীর সাথে অমানবিক আচরণতো দূরের কথা তাদের সামান্য অধিকার ক্ষুণœ হয় এমনটিও করেননি। তিনি সকল স্ত্রীর একান্ত প্রাপ্য মোহরানা আদায় করেছেন। তিনি স্ত্রীদের সাথে সকলকে নরম ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। ‘আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম’। তিনি সকলকে তাকিদ দিয়েছেন তারা যেন তাদের স্ত্রীদের অধিকার সম্পূর্ণরূপে আদায় করে দেয়।
ইসলাম স্ত্রীর খোরপোষের দায়িত্ব দিয়েছে স্বামীর উপর। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ব্যাপারে বলেছেন, “কোন ব্যক্তির গুনাহগার হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে যাদেরকে পালন করে, তাদেরকে খোরপোষ দেয় না।” ঠিক একইভাবে আবার স্বামীর অধিকার সংরক্ষণের ব্যাপারেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্বামীকে প্রশান্তি দেয়া, তার সম্পদের হেফাজত করাসহ যাবতীয় অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ‘আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নারীর ওপর সর্বাধিক অধিকার কার? তিনি উত্তরে বলেন, তার স্বামীর। তারপর আমি জিজ্ঞেস করি, পুরুষের ওপর সর্বাধিক অধিকার কার? তিনি উত্তর দিলেন তার মায়ের।’
শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণে রাসূল (সা)-এর অনুসরণ
বর্তমান যুগে শ্রমিকের যথাযথ পারিশ্রমিক প্রদানের ক্ষেত্রে মালিক শ্রেণির দারুণ অবহেলা লক্ষ্য করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না এবং যথা সময়ে শ্রমিকের শ্রমের মূল্য পরিশোধ করা হয় না। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার পূর্বেই তার মজুরি আদায় করে দাও।’ আবার কেউ কেউ শ্রমিককে তো মানুষই মনে করতে চায় না। তাদের সাধ্যের বেশি কাজ তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়। ফলে তৈরি হয় ভেদাভেদ ও বৈষম্য। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘শক্তি সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কাজ শ্রমিকদের ওপর চাপাবে না। যদি তার সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কোন কাজ তাকে দাও তাহলে সে কাজে তাকে সাহায্য কর’। (বুখারী ও মুসলিম) অপর একটি হাদীসে এসেছে, ‘কাজের প্রকৃতি ও পরিমাণ না জানিয়ে কাউকে কাজে নিয়োগ করা ঠিক নয়।’ তিনি আরো বলেছেন, শ্রমিকদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো হলে তার জন্য তাদেরকে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে দিবে। এভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণে ভূমিকা রেখে গেছেন যা কিয়ামাত পর্যন্ত প্রত্যেক জাতির জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
শেষ কথা
রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন পরিচালিত হয়েছিল কোরআনের আলোকে। আর কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালনা করার কারণেই তৎকালীন সময়ে তিনি সকল ক্ষেত্রে অশান্তি দূর করে শান্তি নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন। আজকের বিশ্বেও শান্তি প্রত্যাশী মানুষগুলোর সামনে সেই পথ উন্মুক্ত। তারা যদি সেই আলোকিত পথ অর্থাৎ আলকোরআন ও আলহাদীসের পথ ধরে এগিয়ে যায় তাহলে বিশ্বময় আবারো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে ইন-শা-আল্লাহ।