মুসলিম হয়েও মুশরিকদের মূর্তিপূজায় অংশগ্রহণ করা ও তা দেখতে যাওয়া কিয়ামতের অন্যতম আলামতঃ
ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিমগণের একটি বিরাট অংশ অন্ধকার যুগের শিরকে লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে 'মাযার' কেন্দ্রিক শিরকগুলো তৎকালীন আরব মুশরিকদের চাইতেও জঘন্য। কাবাঘর তাওয়াফের মতো মাযার তাওয়াফ করা হচ্ছে, কবরের কাছে মানত ও কুরবানি করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এই শিরকগুলো ইসলামের নামেই প্রচলিত। তবে শেষ যামানায় অথবা কিয়ামতের প্রাক্কালে এই নামধারি মুসলিমরা সরাসরি মূর্তিপূজায় লিপ্ত হবে।
মুশরিকেরা পূজায় তাদের কল্পিত দেবদেবীর কাছে কল্যাণ কামনা করে থাকেঃ
মুশরিকরা তাদের বিভিন্ন দেব-দেবতার মূর্তি নির্মাণ ও চিত্র অংকন করে মুলত তাদের কাছেই মঙ্গল কামনা করে এবং ধারনা করে যাবতীয় অমঙ্গল এই সব দেব-দেবী দূর করে দিতে পারে। আর এটাই হচ্ছে মূর্তিপূজা। যদি কেউ দৃঢ়বিশ্বাস করে অমুক দিবস, রাত্রি, মাস তিথি সময়, বস্তু, দ্রব্যের মধ্যে মঙ্গল বা অমঙ্গল করার ক্ষমতা রয়েছে তবে তা শিরকে আকবার, যা একজন মুসলিমকে মূর্তিপূজক বা মুশরিকে পরিনত করে দেয়।
মহান আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কেউ কল্যাণ দান করতে পারেনা অথবা অকল্যাণ থেকে রক্ষা করতে পারেনা। ‘আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ মঙ্গল বা অমঙ্গল করতে পারে’ এরুপ আকিদা বিশ্বাস কোনো মুসলিম লালন করতে পারে না, এটা সুস্পষ্ট শিরক ও কুফরী বিশ্বাস। কল্যাণ করার আর অকল্যাণ থেকে হেফাযত করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার। কেউ যদি মনে করে এই ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো রয়েছে তাহলে তা শিরক হিসাবে গণ্য হবে, এবং আল্লাহ ছাড়া যার কাছে কল্যাণ চাইবে, সে তারই ইবাদতকারী হিসাবে গণ্য হবে।
অনেক মুসলিম না জেনেই মুশরিকদের মূর্তিপূজায় অংশগ্রহন করছে, কেউ কেউ জেনেও প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে, আবার অনেকে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই ভ্রান্ত যুক্তি দিয়ে এই মূর্তিপূজায় শামিল হচ্ছে।
‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই ভ্রান্ত বক্তব্যের অসারতা সম্পর্কে জানতে এই লিঙ্কটি পাঠ করার অনুরোধ রইল- https://goo.gl/Qf5sbg
কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় মুশরিকদের মূর্তিপূজায় অংশগ্রহন করা। কারন এগুলো হচ্ছে শয়তানী কর্মকাণ্ড। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ''তারা আল্লাহকে ছেড়ে শুধু কতগুলো দেবীরই পুজা করা, (প্রকৃতপক্ষে) তারা কেবল আল্লাহদ্রোহী শয়তানের পুজা করে'' নিসা ৪/১১৭
যাবতীয় কল্যাণ ও অকল্যাণের মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালা। তিনি ছাড়া আর কেউই কারো সামান্যতম কল্যাণ বা অকল্যাণ করার ক্ষমতা রাখেনাঃ
দলীল নঃ ১
‘’বল- হে আল্লাহ! আপনি সমুদয় রাজ্যের মালিক, যা ইচ্ছা রাজ্য দান করেন আর যার থেকে ইচ্ছা কেড়ে নেন। যাকে ইচ্ছা সম্মানিত অরেন, আর যাকে ইচ্ছা অপদস্থ করেন। আপনার হাতেই সব রকমের কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’’ আলে ইমরান ৩/২৬
দলীল নঃ ২
‘’বল- তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কি এমন কিছুর ইবাদত করো যাদের না আছে কোনো ক্ষতি করার ক্ষমতা, আর না আছে উপকার করার। আর আল্লাহ তিনি হলেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ’’ মায়িদাহ ৫/৭৬
দলীল নঃ ৩
‘’আর আল্লাহ যদি তোমাকে অকল্যাণে নিপতিত করেন, তবে তিনি ব্যতীত তা অপসারণকারী কেউ নেই। পক্ষান্তরে তিনি যদি তোমার কল্যাণ সাধন করেন, তবে তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। তিনি পরাক্রমশালী স্বীয় বান্দাদের উপর। তিনি জ্ঞানময় সর্বজ্ঞ’’ আন’আম ৬/১৭-১৮
দলীল নঃ ৪
‘’বল- আল্লাহই তোমাদেরকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করেন, অতঃপর তোমরা তাঁর অংশী স্থির করো’’ আন’আম ৬/৬৪
দলীল নঃ ৫
‘’বল- আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমরা কি এমন কিছুকে ডাকবো, যা আমাদের উপকারও করে না, অপকারও করতে পারেনা’’ আন’আম ৬/৭১
দলীল নঃ ৬
‘’বল- আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা তাছাড়া আমার নিজের ভালো বা মন্দ করার কোনো ক্ষমতা আমার নেই’’ আ’রাফ ৭/১৮৮
দলীল নঃ ৭
‘’আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা ডাকো, তারা তোমাদেরকে সাহায্য করার কোনো ক্ষমতা রাখেনা, পারেনা নিজেদেরকেও সাহায্য করতে’’ আ’রাফ ৭/১৯৭
দলীল নঃ ৮
‘’আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর ইবাদত করে, যা না পারে তাদের কোনো ক্ষতি করতে, আর না পারে কোনো উপকার করতে’’ ইউনুস ১০/১৮
দলীল নঃ ৯
''বল- আল্লাহর ইচ্ছা ব্যাতিত আমার নিজেরও কোন ক্ষতি বা লাভ করার ক্ষমতা আমার নেই’’ ইউনুস ১০/৪৯
দলীল নঃ ১০
‘’আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে আহবান করো না এমন কিছুকে, যা না পারে তোমার কোনো উপকার করতে, আর না পারে ক্ষতি করতে’’ ইউনুস ১০/১০৬
দলীল নঃ ১১
‘’বল- তোমরা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন অভিভাবক গ্রহন করেছ, যাদের নিজেদের কোনো লাভ লোকসান করার ক্ষমতা নেই’’ রা’দ ১৩/১৬
দলীল নঃ ১২
‘’বল- তোমরা আল্লাহকে ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে করো, তাদেরকে ডাকো, (ডাকলেও দেখতে পাবে) তারা তোমাদের দুঃখ বেদনা দূর করতে বা বদলাতে সক্ষম নয়’’ ইসরা ১৭/৫৬
দলীল নঃ ১৩
‘’তারা কি ভেবে দেখেনা, (আল্লাহ ছাড়া অন্যে যাদেরকে কল্যাণ বা অকল্যাণের মালিক মনে করা হয়) তা তাদের কথার জবাব দেয়না। আর তা তাদের কোনো ক্ষতি বা উপকার করার সামর্থ্যও রাখেনা’’ ত্ব-হা ২০/৮৯
দলীল নঃ ১৪
‘’আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা এমন কিছুকে ডাকে, যা না পারে কোনো ক্ষতি করতে, আর না পারে কোনো উপকার করতে, এটাই চরম আকারের গুমরাহী’’ হাজ্জ ২২/১২
দলীল নঃ ১৫
''হে মানুষ! একটা দৃষ্টান্ত পেশ করা হচ্ছে, সেটা মনযোগ দিয়ে শোন। আল্লাহ্র পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাক তার একটা মাছিও সৃষ্টি করতে পারে না, এজন্য তারা সবাই একত্রিত হলেও। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায়, তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধারও করতে পারে না। প্রার্থনাকারী আর যার কাছে প্রার্থনা করা হয় উভয়ই দুর্বল'' হাজ্জ ২২/৭৩
দলীল নঃ ১৬
‘’আর তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে ইলাহরুপে গ্রহন করেছে অন্য কিছুকে, যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট। তারা ক্ষমতা রাখে না মৃত্যু, জীবন আর পুনরুত্থানের উপর’’ ফুরকান ২৫/৩
দলীল নঃ ১৭
‘’তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর ইবাদত করে, যা না পারে তাদের কোনো উপকার করতে, আর না পারে কোনো ক্ষতি করতে’’ ফুরকান ২৫/৫৫
দলীল নঃ ১৮
‘’তোমরা যখন তাদেরকে ডাকো তখন কি তারা তোমাদের কথা শোনে? কিংবা তোমাদের উপকার বা অপকার করতে পারে?’’ শু’আরা ২৬/৭২-৭৩
দলীল নঃ ১৯
‘’নাকি তিনিই (শ্রেষ্ঠ) যিনি আর্তের আহবানে সাড়া দেন, যখন সে তাকে ডাকে এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করেন আর তোমাদেরকে পৃথিবীর উত্তরাধিকারী করেন? আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহ আছে কি? অতি সামান্য উপদেশই তোমরা গ্রহন করো’’’ নামল ২৭/৬১-৬২
দলীল নঃ ২০
‘’বল- কে তোমাদেরকে আল্লাহ থেকে বাধা দান করবে, যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল করার ইচ্ছা করেন অথবা তিনি তোমাদেরকে অনুগ্রহ করার ইচ্ছা করেন? আর তারা আল্লাহ ছাড়া নিজেদের জন্য অন্য কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবেনা’’ আহযাব ৩৩/১৭
দলীল নঃ ২১
‘’আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করতে চাইলে ওটা কেউ নিবারন করার কেউ নেই, আর তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে তা উন্মুক্তকারী কেউ নেই। তিনি পরাক্রমশালী হিকমতওয়ালা’’ ফাতির ৩৫/২
দলীল নঃ ২২
''আল্লাহ- তোমাদের প্রতিপালক। রাজত্ব তাঁরই। আল্লাহ্র পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাকো, তারা তো খেজুরের আটি সংলগ্ন (অত্যন্ত পাতলা ও দুর্বল) আবরণেরও মালিক নয়। তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের ডাক শুনবে না, আর যদি শুনেও, তবুও তোমাদের ডাকে সাড়া দিতে পারবে না’’ ফাতির ৩৫/১৩-১৪
দলীল নঃ ২৩
‘’তোমরা কি চিন্তা করে দেখেছ, আল্লাহ তোমার ক্ষতি করতে চাইলে, আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে ডাকো, তারা কি সে ক্ষতি দূর করতে পারবে? অথবা তিনি তোমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে, তারা কি অনুগ্রহ ঠেকাতে পারবে? বল- আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, নির্ভরকারীরা তাঁর উপরই নির্ভর করে’’ যুমার ৩৯/৩৮
দলীল নঃ ২৪
‘’তার চেয়ে অধিক গুমরাহ আর কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যা কিয়ামত পর্যন্ত তাকে সাড়া দিবে না, আর তাদের ডাকাডাকি সম্পর্কেও তারা একদম বেখবর। কিয়ামতের দিন মানুষকে যখন একত্রিত করা হবে, তখন ঐগুলো (যাদেরকে ডাকা হয়েছিল) হবে মানুষের শত্রু আর মানুষ তাদের ইবাদত করেছিল তা তারা অস্বীকার করবে’’ আহকাফ ৪৬/৫
দলীল নঃ ২৫
‘’কারো কল্যাণ অথবা অকল্যাণ সাধনের ইচ্ছা করলে কে তাঁকে বিরত রাখতে পারে? বরং তোমরা যা করো, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত’’ ফাতহ ৪৮/১১
দলীল নঃ ২৬
‘’বল- আমি শুধু আমার প্রতিপালককেই ডাকি, আর অন্য কাউকে তাঁর অংশীদার গণ্য করি না। বল- আমি তোমাদের কোনো ক্ষতি বা কল্যাণ করার ক্ষমতা রাখি না’’ জিন ৭২/২০-২১
এ সম্পর্কে রাসুল (সাঃ)-এর হাদীসঃ
ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোনো এক সময়ে আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর পিছনে বসা ছিলাম। তিনি বললেনঃ ‘’হে তরুন! তুমি আল্লাহর বিধি-নিষেধের রক্ষা করবে, আল্লাহ তায়ালা তোমাকে রক্ষা করবেন। তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখবে, আল্লাহ তায়ালাকে তুমি কাছে পাবে। তোমার কোন কিছুর চাওয়ার প্রয়োজন হলে আল্লাহ তায়ালার নিকট চাও, আর সাহায্য প্রার্থনা করতে হলে আল্লাহর নিকটেই করো।
আর জেনে রাখো, সকল মানুষ মিলে যদি তোমার সামান্যতম উপকার করতে চায় তোমার ভাগ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে যা নির্ধারণ করা হয়েছে তা ব্যতিত আর কোনই উপকার করতে পারবে না। আর তারা যদি সকলে মিলে তোমার কোন ক্ষতি করতে চায় তাহলেও তোমার ভাগ্যে আল্লাহ যা লিখে রেখেছেন তা ব্যতিত তোমার কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজসমূহও শুকিয়ে গেছে’’ তিরমিযি ২৫১৬; মিশকাত ৫৩০২ (আলবানি সহীহ বলেছেন)
এছাড়া রাসুল (সাঃ) এভাবে দু’আ করা শিখিয়েছেনঃ
‘’হে আল্লাহ! তোমার মঙ্গল ব্যতীত কোনো মঙ্গল নেই। তোমার অকল্যাণ ছাড়া কোনো অকল্যাণ নেই। আর তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই’’ মুসনাদ আহমাদ ২/২২০
তিনি আরও বলতে শিখিয়েছেনঃ ‘’হে আল্লাহ তুমি যা দান করো, তা রোধ করার এবং যা রোধ করো তা দান করার ক্ষমতা কারো নেই’’ বুখারী; মুসলিম
কোনো মূর্তি, গাছ বা পাথর অথবা অন্যকিছু কল্যাণ বা অকল্যাণ করার ক্ষমতা রাখেনাঃ
কোনো মূর্তির কোনোই ক্ষমতা নেই কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করার। নিজের খেয়াল খুশি মতো কোনো কিছুকে বরকতময়, কল্যাণকর বা অমঙ্গলকারী ইত্যাদি বলার ও বিশ্বাস করার কোনো অবকাশ নেই। কুরআন ও হাদীসে এরকম বহু উদাহরন রয়েছে। আমরা এখানে মাত্র তিনটি উদাহরন পেশ করার মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করছি ইনশাআল্লাহ।
উদাহরনঃ ১- গাছের মাধ্যমে কল্যাণ লাভের চেষ্টা একটি মুশরিকি আকিদাঃ
আবু ওয়াকিদ আল-লাইসী (রাঃ) হতে বর্ণিত।। হুনাইনের উদ্যেশ্যে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যাত্রা শুরু করার পর তিনি মুশরিকদের (পূজনীয়) একটি গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই গাছটিকে ‘যাতু আনওয়াত’ বলা হত। তারা এই গাছের মধ্যে (কল্যাণ লাভের উদ্যেশ্যে) তাদের যুদ্ধাস্ত্র ঝুলিয়ে রাখতো।
সাহাবীগন বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তাদের ‘যাতু আনওয়াতের’ মতো আমাদের জন্য একটি ‘যাতু আনওয়াতের’ ব্যবস্থা করুন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, সুবহানাল্লাহ! এটা তো মুসা (আঃ)-এর উম্মতের কথার মতো হল। তারা বলেছিল, কাফিরদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে তদ্রুপ আমাদের জন্যও উপাস্যের ব্যবস্থা করে দিন। সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রান, তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি অনুসরন করবে’’ তিরমিযি ২১৮০; মিশকাতুল মাসাবীহ ৫৩৬৯; যিলালুল জান্নাহ ৭৬ (আলবানি সহীহ বলেছেন)
উদাহরনঃ ২- পাথরের মাধ্যমে কল্যাণ কামনাঃ
আব্দুল্লাহ ইবন উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমার ইবন খাত্তাব (রাঃ) ‘হাজরে আসওয়াদে’-কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি নিশ্চিতরূপে জানি তুমি একটি পাথর মাত্র। তুমি কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পারেনা। আমি যদি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে তোমাকে চুমু দিতে না দেখতাম, তবে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না’’ বুখারী ১৫৯৭, ১৬০৫, ১৬১০; মুসলিম ২২২৮-(২৪৮/১২৭০), ২২২৯-(২৪৯/০০০), ২২৩০-(২৫০/০০০), ২২৩১-(২৫১/০০০); মিশকাতুল মাসাবীহ ২৫৮৯
উদাহরনঃ ৩- বৃষ্টি আল্লাহর হুকুমে হয়, কোনো গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবে নয়। ‘গ্রহ নক্ষত্রের প্রভাবে বৃষ্টি হয়’ এটা ঈমান বিধ্বংসী কুফরী আকিদাঃ
কেউ যদি বিশ্বাস করে অথবা এই আকীদা পোষণ করে, বৃষ্টিপাত হওয়া না অনাবৃষ্টির ক্ষেত্রে তারকা বা নক্ষত্রের কোনো ক্ষমতা বা প্রভাব রয়েছে তাহলে তা স্পষ্টতই কুফরী আকীদা বিশ্বাস। কারন এর দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালার সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করা এবং তারকার ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা হয়। এটা সম্পূর্ণ কুফরী ও জাহেলী যুগের বিশ্বাস।
যায়েদ ইবন খালিদ জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রাতে বৃষ্টি হওয়ার পর হুদায়বিয়াতে আমাদেরকে নিয়ে ফযরের সলাত আদায় করলেন। সলাত শেষে তিনি লোকদের দিকে ফিরে বললেন, তোমরা কি জানো, তোমাদের রব কী বলেছেন? তাঁরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই অধিক জানেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ ‘’তোমাদের রব বলেছেন, আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ আমার প্রতি মুমিন হয়ে গেল আর কেউ কাফির। যে বলেছে, আল্লাহর করুনা ও রহমতে আমরা বৃষ্টি লাভ করেছি, সে আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী মুমিন এবং তারা নক্ষত্রের প্রভাব অস্বীকারকারী। আর যে বলেছে, অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টি হয়েছে, সে নক্ষত্রের প্রতি ঈমান এনেছে এবং আমাকে অস্বীকারকারী কাফির’’ বুখারী ৮৪৬, ১০৩৮, ৪১৪৭, ৭৫০৩; মুসলিম ১২৫-(৭১); আবু দাউদ ৩৯০৬
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা কি জানো, তোমাদের রব কি বলেছেন? তিনি বলেছেন, আমি যখন বান্দার উপর অনুগ্রহ করি, তখনই তাদের একদল তা অস্বীকার করে এবং তারা বলে নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের কাজ হয়। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা আকাশ থেকে কোনো বরকত (বৃষ্টি) অবতীর্ণ করলে একদল লোক তা অস্বীকার করে। বৃষ্টিপাত করান আল্লাহ তায়ালা, আর তারা বলতে থাকে যে অমুক অমুক নক্ষত্র’’ মুসলিম ১২৬-(৭২)
ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সময় লোকদের উপর বৃষ্টি হলে তিনি বললেন, ভোরবেলা কতক লোক আল্লাহর শোকরগুজার ও কৃতজ্ঞ হয় এবং তাদের কতক আবার অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়। তাদের কিছু সংখ্যক বলে এই বৃষ্টি আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ ও রহমতে বর্ষিত হয়েছে। আর কতক লোক বলে, অমুক অমুক নক্ষত্র সত্য প্রমানিত হল। বর্ণনাকারী বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে এ আয়াত নাযিল হল, না, আমি শপথ করছি তারকা সমুহের অস্তাচলের তা অবশ্যই অতি বড় এক শপথ যদি তোমরা জানতে...’’ (ওয়াকিয়াহ ৫৬/৭৫-৮২) মুসলিম ১২৭-(৭৩)
মুশরিকদের সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ও তাদের সাথে সাদৃশ্য বজায় রাখার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর কিছু লোক শিরকি ও কুফরী আকিদা বিশ্বাস লালন করা থেকে ক্রমান্বয়ে সরাসরি মূর্তি পুজায় লিপ্ত হয়ে পড়বেঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ‘’আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হওয়ার পরও অমুলক জাদু, প্রতিমা ও তাগুতের প্রতি বিশ্বাস করে’’ নিসা ৪/৫১-৫২
অথচ ১৪০০ বছর আগেই আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এরুপ ভ্রান্ত আকিদা-বিশ্বাস সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে গেছেন। তিনি বলে গেছেন, কিয়ামতের পূর্বে অনেক মুসলিমেরা মুশরিকদের সাথে মিলে যাবে আর কেউ কেউ সরাসরি মূর্তিপূজা আরম্ভ করবে!
কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় মুশরিকদের মূর্তিপূজায় অংশগ্রহন করা। মুসলিম হয়েও 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নামক পুজায় মুসলিমদের অংশগ্রহন করা ও তা দেখতে যাওয়া কিয়ামতের অন্যতম আলামত বটেঃ
সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ''আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে ভয় করছি পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দের। অচিরেই আমার উম্মাতের কোনো কোনো গোত্র বা সম্প্রদায় প্রতিমা পুজায় লিপ্ত হবে এবং আমার উম্মাতের কতক গোত্র মুশরিকদের সাথে যোগ দিবে’’ আবু দাউদ ৪২৫২; ইবন মাযাহ ৩৯৫২ (আলবানি সহীহ বলেছেন)
কিয়ামতের পূর্বে মুসলিমদের মাঝে ব্যপকভাবে আবার মূর্তি পুজা শুরু হবেঃ
বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিমগণের একটি বিরাট অংশ অন্ধকার যুগের শিরকে লিপ্ত রয়েছে। তবে শেষ যামানায় অথবা কিয়ামতের প্রাক্কালে এই নামধারি মুসলিমরা সরাসরি মূর্তিপূজায় লিপ্ত হবে।
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ ‘’কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ ‘যুলখালাসার’ পাশে দাওস গোত্রের মহিলাদের নিতম্ব দোলায়িত না হবে’’ বুখারী ৭১১৬; মুসলিম ৭১৯০-(৫১/২৯০৬)
নোটঃ যুলখালাসাহ হল দাওস গোত্রের মূর্তি। ইয়ামানের যুলখালাস নামক স্থানে দাওস বংশের এই মূর্তি ছিল, কোন বর্ণনায় এই স্থানের নাম তাবালাহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞতার যুগে তারা এর ইবাদত করতো, সেখানে তাওয়াফ করা হতো।
কিয়ামতের পূর্বে 'লাত' ও 'উজ্জার' পুজা এমনভাবে শুরু হবে যেভাবে অন্ধকার যুগে ছিলঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ‘’তোমরা কি লাত ও উজ্জা সম্পর্কে ভেবে দেখেছ? আর তৃতীয় আরেকটি মানাত সম্পর্কে? (এসব অক্ষম, বাকশক্তিহীন, নড়াচড়ার শক্তিহীন মূর্তিগুলোর পুজা করা কতটা যুক্তিযুক্ত) নাজম ৫৩/১৯
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, রাত ও দিন শেষ হবে না, যতক্ষন না লাত ও উজ্জা দেবতার পুজা আবার শুরু করা হয়। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ নাযিল করেছেন- ‘তিনি তাঁর রাসুলকে পাঠিয়েছেন হিদায়াত ও সত্য দ্বীন সহকারে, সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে’ (তাওবা ৯/৩৩) এই আয়াত নাযিলের পর আমি (আয়িশাহ) তো মনে করেছিলাম যে, এ প্রতিশ্রুতি পুরন করা হবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেনঃ ‘’তা অবশ্যই হবে। তবে যতদিন আল্লাহ ইচ্ছা করবেন ততদিন পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। অতঃপর তিনি এক মনোরম বাতাস প্রেরন করবেন। ফলে যাদের অন্তরে সরিষার দানা পরিমান ঈমান আছে তাদের প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে। পরিশেষে যাদের মাঝে কোন কল্যাণ নেই তারাই শুধু বেঁচে থাকবে। অতঃপর তারা আবার পিতৃ-পুরুষদের ধর্মের (শিরকের) দিকে ফিরে যাবে’’ মুসলিম ৭১৯১-(৫২/২৯০৭); সাহীহাহ ১
নোটঃ আরবের মুশরিকেরা তাদের জাহেলী যুগে অসংখ্য প্রতিমার পুজা করতো। তন্মধ্যে লাত, উজ্জা ও মানাত নামক তিনটি প্রতিমা ছিল অধিক প্রসিদ্ধ। ‘লাত’ একজন মানুষ ছিল। সে হজের মৌসুমে হাজীদেরকে পানির সাথে ছাতু মিশিয়ে খাওয়াতো। (বুখারী ৪৮৫৯) সে মারা যাওয়ার পর লোকেরা তার কবরকে পুজা করা শুরু করেছিল। তারপর তার মূর্তি তৈরি করা হয়েছিল। এটি তায়েফের বনু সাক্বীফ গোত্রের সবচাইতে বড় প্রতিমা ছিল।
‘উজ্জা’ কুরাইশ গোত্রের পূজনীয় প্রতিমা ছিল। এর অবস্থান ছিল মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তী নাখলা নামক স্থানে। আর মানাত বনু হেলালের প্রতিমা ছিল। এর অবস্থান ছিল মক্কা ও মদীনার মাঝে ‘মুশাল্লাল’ নামক স্থানে। অজ্ঞতার যুগে খুযাআহ, আউস ও খাযরাজ গোত্র এর পুজা করতো এবং হজ্জের সময় ‘মানাত’ দেবীর নামে ইহরাম বাঁধত লাব্বাইক বলে উপস্থিত হতো। এই মানাত দেবীর মূর্তি ‘কুদাইদ’ পাহাড় বরাবরে অবস্থিত ছিল। বুখারী ৪৮৬১; মুসলিম ২২৪০-(২৬০/০০০); আবু দাউদ ১৯০১
আনসারগন জাহেলী যুগে দু’টি প্রতিমার পুজা করতো, একটির নাম ‘ইনসাফ’ এবং অপরটি ‘নায়েলাহ’। তারা এই দুটি প্রতিমার নামে ইহরাম বাঁধত। মুসলিম ২২৩৯-(২৫৯/১২৭৭)। মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এসব প্রতিমা উৎখাত করেন। (বুখারী ২৪৭৮)
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, বিভিন্ন দেবদেবীর কাছে কল্যাণ চাওয়ার উদ্যেশ্যে হোক অথবা নিছক আনন্দের উদ্যেশ্যেই হোক এ ধরনের মুশরিকি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করা কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। বরং এরুপ শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করা শিরক এবং এতে অংশগ্রহন করা মুশরিকি কর্মকাণ্ড হিসাবে গণ্য হবে।
শিরক দুনিয়ার বুকে সবচেয়ে বড় অপরাধ, আর শিরকের পাপ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন নাঃ
শিরক সবচেয়ে বড় পাপ। এমনকি সুদ, ঘুস, যেনা-ব্যাভিচার, মিথ্যা, ধোঁকাবাজি, খুন, রাহাজানি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, মদ, জুয়া ইত্যাদির চাইতেও বড় পাপ। পৃথিবীতে এমন কোনো পাপ নেই যা শিরকের চেয়ে বড়। বান্দা যত বড়ই পাপী হোক না কেন, যদি শিরক না করে থাকে তাহলে একদিন না একদিন জান্নাতে যাবেই। আর যদি শিরক করে বিনা তাওবায় কেউ মারা যায়, তাহলে তার জন্য জান্নাত হারাম। মহান আল্লাহ্ তায়ালা বলেনঃ ‘’নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করবেন না। এটা ছাড়া অন্য সব যাকে ইচ্ছা মাফ করবেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করল, সে এক মহা অপবাদ আরোপ করল’’ নিসা ৪/৪৮
অন্য আরেক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ ‘’নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া অন্য সব যাকে ইচ্ছা মাফ করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে, সে চরমভাবে গুমরাহিতে পতিত হল’’ নিসা ৪/১১৬
শিরক সকল নেক কর্ম ধ্বংস করেঃ
অন্য সকল পাপের সাথে শিরকের মৌলিক পার্থক্য এই যে, সাধারনভাবে পাপের কারনে পুণ্য বিনষ্ট হয় না। কিন্তু শিরকের কারনে মানুষের সকল নেক কর্ম বিনষ্ট হয়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেনঃ ''(হে নাবী) আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তী নাবীদের প্রতি ওয়াহী করা হয়েছে যে, যদি আল্লাহ্র সাথে শরীক স্থাপন করেন, তাহলে আপনার সকল আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন’’ যুমার ৩৯/৬৫
‘’কেউ ঈমানের সাথে কুফুরি করলে তাঁর সকল কর্ম নিস্ফল হবে এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’’ মায়িদা ৫/৫
মহান আল্লাহ ইবরাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, নুহ, দাউদ, সুলাইমান, আইউব, ইউসুফ, মুসা, হারুন, যাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা, ইলইয়াস, ইসমাইল, ইলইয়াসা, ইউনুস, লুত (আলাইহিমুস সালাম) ও তাদের বংশের নেককার মানুষদের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ ‘’এ হল আল্লাহর হিদায়াত, তিনি তাঁর বান্দাদের থেকে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত করেন। তাঁরা যদি শিরক করতো তবে তাদের সব কৃতকর্ম বিনষ্ট হয়ে যেত’’ আন’আম ৬/৮৮
শিরক জাহান্নামের অনন্ত শাস্তির কারনঃ
জান্নাত একমাত্র তাওহীদপন্থীদের আবাসস্থল। এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা শিরকে লিপ্তদের জন্য জান্নাত হারাম ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘’যে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করে তার জন্য আল্লাহ অবশ্যই জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। আর তার আবাসস্থল জাহান্নাম। যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই’’ মায়িদা ৫/৭২
মহান আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সবাইকে তাওহীদের উপর অটল থাকার এবং যাবতীয় প্রকাশ্য ও গোপন সকল ধরনের শিরকি কর্মকাণ্ড থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।
Anisur Rahman